আজ পবিত্র শবে বরাত

এ,কে, আজাদ – আইরিশ বাংলা পোষ্ট ডেস্কঃ শাবান মাসের ১৪ তারিখের এ রাতকে মুক্তির রাত বা নাজাতের রাত হিসেবে অবহিত করা হয়। এ রাতে সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপ থেকে মুক্তি কামনা করে প্রার্থনা করা হয়। এ রাতে অনেকেই নফল নামাজ, কুরআন তেলওয়াত ও দোয়া করে থাকেন। অনেকে গরিবদের মধ্যে হালুয়া-রুটি, মিষ্টি ইত্যাদি বিতরণ ও দান-সদকাহ করেন। নফল রোজা রাখেন অনেকে। তবে নফল রোজা ছাড়া অন্যান্য ইবাদত হাদীস কোরআন দ্বারা প্রমানিত নয়।

হাদিস শরিফ থেকে জানা যায়, রাসূল (সা.) মধ্য শাবানের রাতে নফল নামাজ আদায় ও দিনে রোজা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনের একটি সূরায় ‘লাইলাতুন মোবারাকাহ’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়, যাতে বলা হয়েছে ‘এটা সে রাত, যাতে প্রতিটি বিষয়ের বিজ্ঞতাপূর্ণ ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত আল্লাহর নির্দেশে প্রকাশ করা হয়।’ (সূরা দুখান, আয়াত ৩ ও ৪ )। কোনও কোনও তাফসিরকারক এ আয়াতকে উদ্ধৃত করে মধ্য শাবানের রাতকে ‘লাইলাতুন মোবারাকাহ’ আখ্যায়িত করে সেটিকেই শবে বরাত বলে অভিমত দিয়েছেন।

হজরত ইকরামাহসহ কিছু তাফসিরকারকের মতে, পবিত্র কুরআনে উল্লিখিত ‘লাইলাতুন মোবারাকাহ’ দ্বারা শাবান মাসের মধ্যভাগের রাতকে (১৪ শাবান) বোঝানো হয়েছে।
অন্যদিকে হজরত ইবনে আব্বাস রা:, ইবনুল উমার রা:, মুজাহিদ রা:, কাতাদা রা:, হাসান বসরিসহ রা: বেশিরভাগ প্রসিদ্ধ তাফসিরবিদ ‘লাইলাতুন মুবারাকাহ’ বলতে লাইলাতুল কদরকে আখ্যায়িত করেছেন, যা রমজান মাসে আসে।

এদিকে পবিত্র শবে বরাতের পবিত্রতা রক্ষা ও শান্তিপূর্ণভাবে উদয়াপন নিশ্চিতে আতশবাজি, পটকাবাজি, অন্যান্য ক্ষতিকারক ও দূষণীয় দ্রব্য বহন এবং ফোটানো নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ উপলক্ষে সোমবার সরকারি ছুটি থাকবে। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বাণীতে পবিত্র শবে বরাতে দেশের অব্যাহত অগ্রগতি, কল্যাণ এবং মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর ঐক্য কামনা করেছেন।
এদিকে পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণী দিয়েছেন। এতে তিনি শবেবরাতের মাহাত্ম্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবকল্যাণ ও দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষকসহ সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে এই দোয়া ও প্রার্থনার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র শবেবরাতে জিয়ারতের জন্য কবরস্থান ও মাজারে অনেক লোকের সমাগম হয়। এছাড়া কবরস্থান ও মাজারের ভেতরে-বাইরে অনেক ভিক্ষুক, অসহায়, অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি সাহায্যের জন্য সমবেত হয়। এ ধরনের জনসমাগমের কারণে করোনাভাইরাস ব্যাপক হারে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় করোনার সংক্রমণ রোধকল্পে শবেবরাতে কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে কবরস্থানে না গিয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে থেকে মৃত আত্মীয়স্বজনের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করার জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে। সেই সঙ্গে কবরস্থান ও মাজারের গেট বন্ধ রাখাসহ কবরস্থানের ভেতর ও বাইরে কোনো ধরনের জনসমাগম না করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়ানোর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে গুজব ছড়ানো ও গুজবে বিশ্বাস করা থেকে বিরত থাকার জন্যও সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।

SHARE THIS ARTICLE