এ,কে,আজাদ – আইরিশ বাংলাপোস্ট ডেস্কঃ প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ডে বিগত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে আরো ৩ জনের মৃত্যু এবং ১,২০৫ জন আক্রান্তের সংবাদ দিয়েছেন ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি টিম (NPHET) আয়ারল্যান্ড।
কোভিড-১৯ মহামারী প্রথম সংক্রমণের সময় গত ১০ই এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ ১,৫১৫ জন কোভিড আক্রান্তের সংবাদ পরিবেশিত হয়েছিলো। যদিও ঐ দিনের প্রতিবেদনে জার্মানী থেকে প্রতিবেদন করা পুরনো কিছু সংখ্যা যুক্ত করা হয়েছিল। ১০ ই এপ্রিলের পর গতকাল বৃহস্পতিবারের সংক্রমিত সংখ্যা ছিল এযাবতকালের সর্বোচ্চ।
গতকালের এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে এখন পর্য্যন্ত সর্বমোট ১,৮৩৮ জনের মৃত্যু এবং ৪৬, ৪২৯ জনের আক্রান্ত হওয়ার পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হলো।
আয়ারল্যান্ডে হাসপাতালে কোভিড সংক্রান্ত ভর্তির সংখ্যা ৩১৪ আর আই সি ইউতে ৪১ জন এবং ২৫ জন ভেন্টিলেটরে আছেন।
চিফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ টনি হোলোহান বলেছেন, গত সপ্তাহের পর থেকে এখন পরিস্থিতিতে আরও উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটেছে। এই মুহূর্তে আয়ারল্যান্ডে প্রতি এক লক্ষ মানুষে ২০৬.৭ জন আক্রান্ত আছেন । গত সপ্তাহে সর্বমোট নূতন আক্রান্ত ছিল ৩,৫১৬ যা দ্রুত বেড়ে এই সপ্তাহে ৬, ৩৮২ এসে দাঁড়িয়েছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৮২ শতাংশ বেশী।
ডাঃ হোলিহান আরো বলেন যে “হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা তাতপর্য্যপূর্ন, যা ইপিডেমিওলজিক্যাল মডেলিংয়ের পূর্বাভাসের তুলনায় দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি পুরো রাষ্ট্রে দ্রুত অবনতিশীল মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পথ নির্দেশ করে।”
ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সী টিম সংক্রান্ত মডেলিং উপদেষ্টা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফিলিপ নোলান বলেছেন, “কোভিড-১৯ প্রজনন সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে জাতীয়ভাবে এটি ১.৪-এ রয়েছে বলে মনে হয়। যদি বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকে তবে ৩১ শে অক্টোবরের মধ্যে, প্রতিদিন নূতন আক্রান্তের সংখ্যা ১,৮০০-২,৫০০ হবে এবং হাসপাতালে ৪০০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হবে।”
আয়ারল্যান্ডে এই মুহুর্তে শুধুমাত্র ডোনেগাল, মোনাহান ও ক্যাভান এই ৩টি কাউন্টিতে ৪র্থ স্তরের বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছে আর অন্য সকল কাউন্টিতে বর্ধিত ৩য় স্তর।
পুরো আয়ারল্যান্ডে কেউ এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রেস্টুরেন্ট কিংবা পাবে আভ্যন্তরীণ পরিসেবা নিষিদ্ধ, বাহিরে শুধুমাত্র ১৫ জনকে সেবা দেয়া যাবে তবে ডেলিভারি কিংবা টেকএওয়ে চলবে। ঘরের বাহিরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৬ জন পর্য্যন্ত একত্রিত হওয়া যাবে। সম্ভব হলে ঘরের বাহিরে না যাওয়া, মাস্ক পরিধান করা , সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং বারে বারে হাত ধুয়া ধুয়ী অব্যাহত রাখা বাঞ্চনীয়।
অনেকেই মনে করছেন যে, বর্তমান আরোপিত বিধিনিষেধ দ্রুত বর্ধিত হারে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যার্থ হচ্ছে। ব্যার্থ হওয়ার মূল কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের নিয়ন্ত্রনহীনতা এবং ট্র্যাক এন্ড ট্রেস পদ্ধতি ব্যাবহারে সরকারের ব্যার্থতাকে দায়ী করা হচ্ছে। এদিকে বর্তমানে ব্যাবহৃত সময় এবং ব্যয় সাপেক্ষ পি সি আর টেস্ট সার্বজনীন না করে বিভিন্ন দেশে ব্যাবহৃত র্যাপিড কিড টেস্টকে সার্বজনীন করা হলে সারা দেশকে সহজেই র্যাপিড কিড টেস্টের আওতায় এনে দ্রুত রোগ শনাক্ত করা হলে এই রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
তথ্যসূত্রঃ আইরিশ টাইমস, আর টি ই, জার্নাল.আই ই