ছৈয়দ আহমদ তানশীর উদ্দীন : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, যে পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে তার প্রায় ১০ শতাংশ লোক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের রিপোর্ট বলছে, বিশ্বে ৩ সাড়ে তিন কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত। এতে সহজে অনুমেয় সংক্রমণের হার বাড়ছে।
এখন একটি আশঙ্কা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসছে, তবে সেটি হলে হবে ভয়াবহ। সামনে শীতকাল, এ জন্য আরও বেশি ভয়ের কারণ। তাই কিছু নিয়মকে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। তাহলে হয়ত সংক্রমণের লাগাম টানতে পারব আমরা। এই নিয়মগুলোকে সাধারণত নিউ নরমাল (নতুন সাধারণ) বলা হয়।
নিয়মিত হাত ধোয়া
নিয়মিত সাবান পানি (৪০-৬০সেকেন্ড) ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার (২০-৩০ সেকেন্ড) দিয়ে নিম্নোক্ত কাজগুলোর ক্ষেত্রে হাত ধুতে হবে।
প্রতিবার খাবারের আগে, খাবার তৈরি, পরিবেশনের আগে ও পরে।
টয়লেট ব্যবহারের পরে।
কোন কিছু স্পর্শ করার আগে ও পরে।
হাঁচি কাশি দেওয়ার পরে।
অসুস্থ রোগীকে সেবা করার আগে ও পরে।
হাত অপরিস্কার হলে।
মাস্ক পরিধান করা
তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক তৈরি করে পড়বেন। ৬ ঘণ্টা পরপর মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে। হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে মাস্ক ভিজে গেলে অথবা পানিতে ভিজে গেলে তাহলে অবশ্যই মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে। সার্জিক্যাল মাস্ক আপনার সামর্থ থাকলে ব্যবহার করতে পারেন। তবে যারা করোনা রোগীর সেবায় নিয়োজিত তারা এন-৯৫ মাস্ক পরিধান করবেন।
শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা
তিনফুট বা এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে সকল কাজ করতে হবে। যেকোন ইন্টারভিউ, মিটিং, সভা সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম করার সময় আসন বিন্যাস ৩ ফুট দূরত্ব রেখে করতে হবে। প্রবেশ পথ আলাদা হবে। বাসার ডাইনিং টেবিলেও তিনফুট রেখে খেতে বসতে হবে। গণপরিবহন চলাচল ও প্রবেশ পথে তিনফুট দূরত্ব মেনে চলতে হবে। করোনা থেকে রেহায় পাওয়ার সবচেয়ে কার্যকরি ব্যবস্থা হচ্ছে শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা।
নিয়মিত ব্যায়াম করা
কমপক্ষে দৈনিক ৩০ মিনিট আর শিশুদের ১ ঘন্টা শারীরিক কসরত যেমন খেলাধুলা, হাটাহাটি অর্থাৎ নিজকে একটিভ রাখতে হবে। এতে করে শারীরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
সুষম খাবার
করোনার এ সময়ে সব ধরনের খাদ্য উপাদান সম্পন্ন খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি শাকসবজি ও মৌসুমী ফল খাওয়া যেতে পারে।
বিশেষ যত্নবান হওয়া
আপনার ঘরের নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি আলাদা যত্নশীল হোন। বিনা প্রয়োজনে তাদেরকে বাড়ির বাহিরে নিবেন না। নিয়মিত ওষুধ সেবন করছে কিনা সেদিকে বাড়তি নজর দিন।
৫টি জিনিস এড়িয়ে চলা জরুরি
১. জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।
২. অন্য কারোর খুব কাছে যাবেন না।
৩. বদ্ধ জায়গায় থাকবেন না, যেখানে অপর্যাপ্ত আলো বাতাস আছে সেসব এলাকা এড়িয়ে চলুন। জানালা খোলা রাখতে পারলে সবচেয়ে ভাল।
৪. ধুমপান করা যাবে না, এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা কমায়। ফলে করোনা সংক্রমণ হলে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ে।
৫. এ্যালকোহল খাওয়া যাবে না।
লেখক: বিএসসি ইন নার্সিং (চ.বি), এমপিএইচ ইন নিউট্রিশন(ই.বি)