আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ সাবেক ছাত্র নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পাবনার বেড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের মিয়া (৭০) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আনাম সিদ্দিকী। বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাতটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে সক্রিয় রাজনীতি করেছেন আব্দুল কাদের।
আব্দুল কাদের মিয়ার আত্নীয়, পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি এএম রফিকুল্লাহ জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার জন্য তাকে বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকরা তার করোনা উপসর্গ লক্ষ্য করেন। তাদের পরামর্শে তাকে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার ( ৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার করোনা পরীক্ষায় রেজাল্ট পজেটিভ আসে। তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর মধ্যে বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এরপর তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের পাবনার বেড়া উপজেলার কাশীনাথপুর সংলগ্ন শিবপুর গ্রামে ১৯৫১ সালে-জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত আ: সামাদ মিয়া আর মাতা মৃত নূরজাহান বেগম। ব্যক্তি জীবনে তিনি ২ ছেলে ২ মেয়ের পিতা।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৬৯ সালে পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে ছাত্র সংসদের এবং ১৯৭৪ সালে সরকারি এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৮ সালে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে নগরবাড়ি ঘাটে শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করে প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান নগরবাড়ীতে মুজিব বাঁধ উদ্বোধন করেন। সেই ঐতিহাসিক বিশাল জনসভার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন ছাত্র নেতা আব্দুল কাদের।
১৯৭২ সালে কাশীনাথপুর শহীদ নূরুল হোসেন ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭২ সালে জাতসাখিনী ইউনিয়নের চকভরিয়া গ্রামে তার পিতার নামে একটি বিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করেন।
এছাড়া তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করেন। তিনি বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগে তিন মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন এবং ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে যা করেছেন-সবই জনগণের জন্য, নিজের জন্য তেমন কিছুই করেননি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেরের ভাতিজা শফিউর রহমান মিয়া জানান, তার নামাজে জানাযার সময় এখন পর্যন্ত( রাত আটটা) নির্ধারণ করা হয়নি। তার মৃতদেহ বাড়ি পৌছানোর পর তা জানানো হবে।