ধর্ষক নিজেই ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করলেন

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধনে থাকা ছেলেটিও যদি ধর্ষক হয়- তা মেনে নেয়া কষ্টসাধ্য বৈ কি!

এমন ঘটনাই ঘটেছে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে। পার্বতীপুরে ফেসবুকে পরিচয়ের পর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের অশ্লীল ছবি মোবাইলে ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় পার্বতীপুর রেল থানার পুলিশ বিষ্ণু গোপাল মহন্ত ওরফে বাধনরাজ (১৯) নামে এক যুবককে সোমবার (১২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় গ্রেফতার করে।

সম্প্রতি সারাদেশে ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধন শুরু হলে পার্বতীপুরে ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধনে অংশ নেয় বিষ্ণু গোপাল মহন্ত ওরফে বাধনরাজ। ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধনে তার অংশ নেওয়া সেই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি মানুষের নজরে আসে। এ ঘটনায় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, এ ঘটনায় শুরুতে অনেকেরই ধারণা করেন ধর্ষণ মামলায় আটক যুবক আর ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই যুবক এক নয়। তবে পরে মামলার তথ্যসূত্র ও ফেসবুকের মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া মানববন্ধনের ওই যুবক যে একজনই তা অনেকেই নিশ্চিত বলে দাবি করছেন।

পার্বতীপুর রেলওয়ে থানায় দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত বিষ্ণু গোপাল মহন্তের বাসা রেলওয়ের সাহেবপাড়া কলোনির টিসি/৮১৩। তার বাবার নাম বিশ্বজিত কুমার মোহন্ত (মানিক) ও মায়ের নাম জয়শ্রী রানি। তাদের গ্রামের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপিনাথপুর কামারপাড়া।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ভিকটিমের (১৬) সাথে বিষ্ণু গোপালের পরিচয় ঘটে ফেসবুকের মাধ্যমে। বিষ্ণু গোপাল মোহন্ত ওরফে বাধন রাজ নিজেকে একজন মুসলমান যুবক হিসেবে পরিচয় দেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। গত ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর সকাল ১০টায় ভিকটিমকে ফেসবুকের মাধ্যমে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সাহেবপাড়ার বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে এবং তা মোবাইলে ধারণ করে।

ভিকটিমের মা মামলার বাদী জানান, মোবাইলে ধারণকৃত ছবি দেখিয়ে ওই মেয়েকে আরও ৫ বার ধর্ষণ করা হয়। সে সময় সে ধর্ষকের প্রকৃত ধর্মীয় পরিচয় জানে। পরে ছেলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় গত ১৬ আগস্ট। কিন্তু মেয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে।

এদিকে, গত ৯ অক্টোবর রাত অনুমান ১০টায় বিষ্ণু গোপাল তার মোবাইলে ধারণ করা অশ্লীল ছবি ফেসবুক আইডি’র মাধ্যমে প্রকাশ করে ভিকটিমকে অপমান অপদস্থ ও হেয় প্রতিপন্ন করে। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে এ ঘটনায় ডিজিটাল আইনের (২০১৮) এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২০০০ ৯(১) এর সংশোধনী ২০০৩ এর ২৫(২) ধারায় মামলা হয়।

SHARE THIS ARTICLE