আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ গত তিন দশকে দুনিয়ায় কিনা জানিনা তবে দেশে নৃশংসতার চূড়ায় ফেনী। এই কলঙ্কের তিলক যেন আর নামছেই না।নৃশংসতার সব নতুনত্ব যেন ফেনীতেই জন্ম হবে। ড্রিল করে, জীবন্ত পুড়িয়ে খুনের পর এবার ফেনীতে ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন পাষন্ড স্বামী টুটুল (৩২)। এ ঘটনা ঘটে ১৫ এপ্রিল বুধবার দুপুরে ফেনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বারাহীপুর পূর্ব ভূঁইয়াবাড়িতে।
বুধবার দুপুর সোয়া একটায় ফেসবুক লাইভে এসে স্বামী টুটুল তার স্ত্রীকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। লাইভে এসে খুনী টুটুল বলেন ‘প্রিয় দেশবাসী, আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। আজকে আমার কারণে আমার পরিবার ধ্বংস। যার কারণে ধ্বংস আজকে তাকে আমি এ মুহূর্তে ধ্বংস করে দিলাম। আমি চেষ্টা করেছি। অনেক চেষ্টা করছি। পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ওয়াস্তে সবাই আমাকে মাফ করে দেবেন। আমার এতিম মেয়েটার খেয়াল রাখবেন। আমার ভাই-বোনের খেয়াল রাখবেন। আমার পরিবার ভাইবোনের কোনো দোষ নেই। অন্য কেউ এটাতে সম্পৃক্ত নয়। আমি সম্পূর্ণ দায়ী আমার আজকের এ ঘটনার জন্য। প্লিজ সবার কাছে আমার একটাই অনুরোধ আমার ভিডিওটা ভাইরাল করেন। যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়। আর এ ঘটনার জন্য আমিই একমাত্র দায়ী। কেউ না।
এরপর দা হাতে নিয়ে ছুটে গেল সে-এক কোপ, দুই কোপ, তিন কোপ এভাবে ৯টি কোপ। ভিক্টিমের আহ আহ বলে কয়েকটি আওয়াজ। এরপর ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটছে লাগলো।
তারপর খুনি আবারও বলছিল সব শেষ। সব শেষ।আমার পরিবারকে সবসময় ব্ল্যাকমেইল করে। আজ থেকে আর কেউ ব্ল্যাকমেইল করবেনা।খোদা হাফেজ সবাই ভালো থাকবেন।
এভাবেই একটি জীবন প্রদীপ নিভে যেতে সময় লাগলো মাত্র কয়েক সেকেন্ড।
পরে হত্যাকারী টুটুল নিজেই পুলিশকে মুঠোফোনে খবর দিলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে তাকে আটক করে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা ও ফেসবুকে প্রচার চালানো মোবাইল জব্দ করা হয়।
গৃহবধূর বোন রেহানা আক্তার জানিয়েছেন, পাঁচ বছর আগে কুমিল্লার গুণবতী এলাকার আকদিয়া গ্রামের সাহাবুদ্দিনের মেয়ে তাহমিনা আক্তারের সঙ্গে ওবায়দুল হক টুটুলের প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়।
তিনি আরো জানান জানান, বিয়ের পর থেকে আর্থিক অসচ্ছলতা নিয়ে তাদের পরিবারের মাঝে প্রায় সময় ঝগড়া হয়ে আসছিল। এরইমধ্যে স্বামী টুটুল মেয়ের পরিবারের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকাও নেয় কিন্তু আরও টাকা চাইলে তারা অস্বীকৃতি জানায়।
তবে ছেলের পরিবারের দাবি, তাহমিনা আক্তারের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক থাকায় টুটুল উত্তেজিত হয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করেন। টুটুলের মা লুৎফর নাহার জানান, ছেলের বউয়ের অন্য জায়গায় পরকীয়া প্রেমেরে সম্পর্ক ছিল।
ফেনী মডেল থানার ওসি তদন্ত সাজেদুল ইসলাম জানান, পারিবারিক কলহের যের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবু বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওবায়দুল হক টুটুল ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। তাদের ঘরে দেড় বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তিনি ওই এলাকার গোলাম মাওলা ভূঁইয়ার ছেলে।