এ,কে,আজাদ – আইরিশ বাংলাপোস্ট ডেস্কঃ আর টি ই থেকে প্রাপ্ত সূত্রে প্রকাশ যে, গত রাতে সরকারকে পাঠানো এক চিঠিতে ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সী টিম (এন পি এইচ ই টি) সমগ্র দেশে সর্বোচ্চ ৫ স্তরের বিধিনিষেধের প্রস্তাব দিয়েছে।
আশা করা যায়, তিন দলীয় সরকারের নেতৃবৃন্দ চিঠির বিষয়ে আলোচনার জন্য চীফ মেডিকেল অফিসারের সাথে জরুরী বৈঠকে বসবেন। কোভিড -১৯ পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সী টিম (এন পি এইচ ই টি) আজ রাতে এক জরুরী বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত সরকারকে অবহিত করেছে। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন চিফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ টনি হলোহান। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন চিফ মেডিকেল অফিসার ডঃ টনি হোলোহান।
এন পি এইচ ই টির এই সিদ্ধান্তের পর, বিষয়টি কোভিড-১৯ ওভারসাইট গ্রুপ, মন্ত্রিপরিষদ উপ-কমিটি এবং পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভায় আলোচনা করে কার্য্যকরী সিদ্ধান্ত নেয়া আবশ্যক। আগামী মঙ্গলবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যায় কোভিড-১৯ আক্রান্তের বর্তমান এই সংখ্যাবৃদ্ধি অত্যন্ত উদ্বেগজনক হিসাবে বর্ণনা করেছে, বিভিন্ন সরকারী সূত্র। কোভিড -১৯ এ রোববার আরও ৩৪৮ জন শনাক্ত হয়েছেন তবে নূতন কোন মৃত্যু হয়নি বলে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে। আজকের আক্রান্তের মধ্যে ১০০ জন ডাবলিন, ৫৫ জন কর্ক, ৩১ জন ডোনেগাল এবং ২৪ জন লিমেরিক থেকে এছাড়াও প্রায় প্রতিটি কাউন্টিতে আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি পাচ্ছে। আয়ারল্যান্ডে আজ পর্য্যন্ত কোভিড-১৯ মহামারিতে সর্বমোট ৩৮ হাজার ৩২ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আর ১ হাজার ৮ শত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের হাসপাতালগুলোতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। রোববার সকাল ৮টা অবধি ১৩৪ জনকে হাসপাতালে চিকিতসা প্রদান করা হচ্ছিল। গতকাল এই সংখ্যা ছিল ১১৪। আই সি ইউতে মারাত্নক আক্রান্ত হয়ে ভর্তির এই সংখ্যা বেঁড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ জনে।
চীফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ টনি হলোহান দীর্ঘদিন ছুটি শেষে কাজে যোগদান করেই কোভিড আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে অনুমিত হয়। বিগত মার্চ মাসে যখন মহামারী ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিলো তখন এই টনি হলোহানের নেতৃত্ব এবং সময়োচিত সিদ্ধান্ত ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলো, সেই সাথে তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লিও ভেরাদকার। সরকার পরিবর্তন হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন মিহল মার্টিন। অনেকেই মিহল মার্টিনের দায়িত্বশীল নেতৃত্ব নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন।
এদিকে স্তরে স্তরে বিধি নিষেধ তুলে নিতে শুরু করা হলে আয়ারল্যান্ডে তরুণ ও যুব সম্প্রদায় ঘরে ঘরে আনুষ্ঠানাদি শুরু করেন, এছাড়া অনেকেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন নি এবং এখনও রাখছেন না। তবে সরকারের ট্র্যাক এন্ড ট্রেস পদ্ধতি মোটেও কার্য্যকরী করা হচ্ছেনা বলে জানা যায়। যার ফলশ্রুতিতে সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সরকার এবং জনগণকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এব্যাপারে কাজ করতে হবে। জনসচেতনতা এব্যাপারে অত্যাবশ্যক। অনেকেই মনে করেন সরকারকে টেস্ট বাড়াতে হবে, দ্রুত ট্র্যাক এন্ড ট্রেস করে কোয়ারেনটাইন কিংবা আইসোলেশন বাধ্যতামূলক করতে হবে। এয়ারপোর্ট দিয়ে যারা চলাচল করবেন তাদের প্রত্যেককে পরীক্ষা করে নিগেটিভ প্রমাণ করা অত্যাবশ্যক। সকলের প্রতি আমাদের অনুরোধ, “আসুন আমরা আরও সচেতন হই, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি, অত্যাবশ্যক না হলে ঘরেই থাকি, বাহিরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে মাস্ক ব্যাবহার করি, ছুঁয়াছুঁয়ি পরিহার করি, সম্ভব হলে ঘরে থেকেই কাজ করি” এই কাজগুলো করা হলে আমরা নিজেরাই আমাদের নিরাপদ রাখবো, পরিবার নিরাপদ থাকবে, সমাজ এবং জাতি নিরাপদ থাকবে।।