রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকান্ড, ৫ করোনা রোগী নিহত

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালের মূল ভবনের বাইরে অস্থায়ী করোনা ইউনিটে পাঁচ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছিল। সেখানেই অগ্নিকাণ্ড হয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচজন নিহত হন। নিহতরা করোনা রোগী ছিলেন।
নিহত পাঁচজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী। নিহত পাঁচজন হলেন, মাহবুব এলাহী চৌধুরী (৭৫), মনির হোসেন (৭৫), ভের্ণন অ্যান্থনি পাউল (৭৪) রিয়াজুল আলম (৪৫) ও খাদিজা বেগম (৭০)।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ৫৫ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। হাসপাতালের নিচতলায় করোনা ইউনিটে আগুন লাগে। হাসপাতালের ভেতরে ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। বাঁচার তাগিদে রোগীরা চিৎকার করতে থাকেন। আইসিইউ থেকে রোগীদের বের করে আনা হয়।

অনেক রোগী নিজ উদ্যোগে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট গিয়ে ২০ মিনিট চেষ্টা করে আগুন নিভিয়ে ফেলে। ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতালের করোনা ইউনিটের এসির বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

সৌজন্যেঃ সময় সংবাদ


পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, হাসপাতালের পাশে অস্থায়ী করোনা ইউনিটে আগুন লেগেছিল। তবে অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহত হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। তিনি আরো জানান, নিহতদের মধ্যে তিনজনের করোনা পজিটিভ এবং দু‘জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।


নিহত খাদিজার ছেলে আলমগীর বলেন, ‘তার মায়ের করোনা নেগেটিভ এসেছে। এরপরও তাকে পর্যবেক্ষণে রাখে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’ মাহবুব এলাহী চৌধুরীর ছেলে আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘আমার বাবার শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। দু’বারের টেস্টে তার নেগেটিভ এসেছে। এরপরও তারা বলছে তিন নম্বর টেস্ট করাতে হবে। ঈদের দিন টেস্ট করানো হয়েছে। আমরা প্লাজমা সংগ্রহ করে দিয়েছি। তিনি আইসিইউতে ছিলেন না। এই হাসপাতালে করোনা ইউনিট না থাকলেও যাদের লক্ষণ আছে তাদেরকে এই জায়গায় রাখা হচ্ছিল।’
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন বলেছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর সেখান থেকে ফায়ার সার্ভিস পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলটি হাসপাতালের মেইন ভবন সংলগ্ন। সেটিতে অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
হাসপাতালের চিফ অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডা. সাগুফা আনোয়ার বলেন, ‘আমরাও পাঁচ জন মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি।’

আগুন লাগা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘মূল ভবনের বাইরে করোনা ইউনিটে শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে। ১০ থেকে ১২ মিনিটের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সবকিছু মিলিয়ে নিয়ন্ত্রণে আছে পরিস্থিতি। কোনও ধরনের ধোঁয়া হাসপাতালের মূল ভবনের ভেতরে যায়নি।’

তিনি আরও জানান, ‘হাসপাতালের মূল ভবনের বাইরে পাঁচ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছিল। সেখানেই অগ্নিকাণ্ড হয়।’ বৃহস্পতিবার হাসপাতালের পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
বিরূপ আবহাওয়ায় আগুনের ক্ষিপ্রতার কারণে অগ্নিকাণ্ডের সময় পাঁচ রোগীকে বাইরে আনা যায়নি বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বুধবার রাতের অগ্নিকাণ্ডে এই পাঁচ রোগীর মৃত্যুতে ‘গভীর দুঃখপ্রকাশ’ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

SHARE THIS ARTICLE