সম্রাটের দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েস আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম আজ মঙ্গলবার সম্রাটের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দুটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে আদালত সম্রাটের দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ দেন। একটি ফ্ল্যাট কাকরাইলে, অন্যটি মহাখালীতে।

তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে বলেন, সম্রাটের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মহাখালীর ফ্ল্যাটটি সম্রাটের স্ত্রী শারমিন চৌধুরীর নামে, আর কাকরাইলের ফ্ল্যাটটি সম্রাটের ভাই এবং আরেক ব্যক্তির মালিকানাধীন। এর আগে সম্রাটের নামে থাকা তিনটি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর বাইরে সম্রাটের নামে থাকা সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব নেওয়া হচ্ছে।

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী ইসমাইল হোসেন চৌধুরী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর জানা মতে, সম্রাট হৃদরোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

গত বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাট ও তাঁর সহযোগী এনামুল হক আরমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। সম্রাট দীর্ঘদিন ধরেই নানা কারণে আলোচনায় ছিলেন। রাজনৈতিক পরিচয় ও পৃষ্ঠপোষকতায় অপরাধ জগতের অপ্রতিরোধ্য সম্রাট হয়েছিলেন তিনি। রাজধানীর কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অফিস খুলে অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

গত বছর ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর আবার আলোচনায় আসে সম্রাটের নাম। গত বছরের ৬ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

গ্রেপ্তারের পর বন্য প্রাণীর চামড়া রাখার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। অস্ত্র ও মাদক রাখার দায়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করা হয়। দুটি মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, যুবলীগ নেতা সম্রাট জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তাঁর সহযোগী আরমানের সহযোগিতায় তিনি মাদকদ্রব্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেন। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মাদকদ্রব্যের কোনো বৈধ কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি। ঢাকার দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবগুলো পরিচালনা করতেন তিনি। তাঁর নিয়ন্ত্রণেই এসব ক্লাবে ক্যাসিনোসহ জুয়ার আসর বসত। এভাবে বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হন। প্রতি মাসে ক্যাসিনো খেলার জন্য সিঙ্গাপুরেও যেতেন তিনি। সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করতেন। তাঁর সহযোগী ছিলেন বহিষ্কৃত কাউন্সিলর মমিনুল হক ওরফে সাঈদ এবং যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া।

SHARE THIS ARTICLE