আয়ারল্যান্ডে কোভিড পরিস্থিতি মারাত্নক

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ বিশ্বব্যাপী আবারো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ, আয়ারল্যান্ডও এর ব্যাতিক্রম নয়। আয়ারল্যান্ডে বিগত মার্চ মাসে সংক্রমণের প্রথম ঢেউ শুরুর পর থেকে বর্তমানে মহামারীর পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশী মারাত্নক বলে মনে করছেন, ডাঃ রোনান গ্লেন, ডেপুটি চীফ মেডিকেল অফিসার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়রল্যান্ড। ডাঃ গ্লেন বলেন, “প্রতিমুহূর্তে আমাদের সজাগ থাকতে হবে, যার সাথেই দেখা হয় না কেন তাকেই সংক্রামক মনে করে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ভাইরাসটি সারা দেশে এবং সকল বয়সের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। একে অন্যকে রক্ষা করতে আমাদের এখনই কাজ করতে হবে।” 

এদিকে যুক্তরাজ্যে নির্নীত বিবর্তিত রূপের নূতন ভাইরাসটি আয়ারল্যান্ডেও পাওয়া গেছে বলে প্রাথমিক পরীক্ষায় ধারনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, জাতীয় ভাইরাস রেফারেন্স ল্যাবের ডাঃ সিলিয়ান ডি গ্যাসকু। বিবর্তিত ভাইরাসটি অতিমাত্রায় সংক্রামক বলে ধারনা করা হয়। তবে আয়ারল্যান্ডের বর্তমান সংক্রমণ বৃদ্ধিতে নূতন ধরনের ভাইরাসের প্রভাব এখনও পরিলক্ষিত হয়নি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ। 

ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সী টিম (নেফেট) জানিয়েছে গতকাল ২৪ ঘণ্টায় আয়ারল্যান্ডে ৯৩৮ জন নূতন করে সংক্রমিত হয়েছেন আর এই সময়ে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

ডাঃ টনি হোলোহান বলেছেন, তিনি নূতন করে কিছু সুপারিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট প্রেরণ করেছেন। নেফেট গতকাল বুধবার বৈঠক করেছে এবং মহামারী সংক্রান্ত বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সরকারকে সুপারিশ করেছে। নেফেটের প্রধান বলেছেন, রোগের প্রতিটি সূচক বাড়ছে এবং দ্রুতই বাড়ছে, সেই সাথে আমাদের উদ্বেগের মাত্রাও বাড়ছে। এই রোগের গতিপথ পরিবর্তনের জন্য আমাদের স্বতন্ত্র ও সম্মিলিতভাবে যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে”।

Dr Tony Holohan says 'don't go to pubs or restaurants' as Covid cases spike  - Dublin Live

তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন “ক্রিসমাসের পরিকল্পনাগুলি সংশোধন করুন, যাতে সামাজিক যোগাযোগ আরও সীমিত করা যায়, হ্যান্ড হাইজিন, শারীরিক দূরত্ব, বায়ুচলাচল এবং মুখের আচ্ছাদন ব্যবস্থা কার্যকর রাখুন বিশেষ করে যদি আপনার বাড়িতে কোন আতিথ্য অত্যাবশ্যক হয়ে থাকে।”  

নেফেট আইরিশ এপিডেমিওলজিকাল মডেলিং অ্যাডভাইজরি গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রফেসর ফিলিপ নোলান বলেছেন: “গত দুই দিনে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। প্রজননের হার (R) এই মুহূর্তে ১.৫-১.৮। সংক্রমণ ৭-৯ শতাংশ হারে প্রতিদিন বাড়ছে। এই পরিসংখ্যান বিশেষ করে ক্রিসমাসের ক্ষেত্রে আমাদের অতীব সাবধান এবং জনস্বাস্বাস্থ্য বিভাগের  নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।”
ডাঃ নোলান বলেন, “প্রজননের হার কমিয়ে যদি ১ এ আনা যায় তাহলে জানুয়ারি মাসে প্রতিদিন নূতন করে সংক্রমণের সংখ্যা ১০০০ এর বেশী হবে আর যদি প্রজনন যদি ১.২ হয় তাহলে প্রতিদিন সংক্রমণ হবে ২০০০ । গত দুই সপ্তাহে এই রোগের প্রকোপ প্রতি লাখে ১৫৩ হয়েছে, এই সংখ্যা ভীতিকর। সংক্রমণের এই বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগামী মাসে হাসপাতালগুলো বিপর্য্যস্ত হয়ে পড়তে পারে। তাই এখনি সঠিক পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।” 

তথ্যসূত্রঃ আইরিশ টাইমস, আর টি ই, জার্নাল.আই ই।

SHARE THIS ARTICLE