আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের ‘সর্বাত্মক’ বা ‘কঠোর’ লকডাউনের মধ্যে আসছে বাঙালির প্রাণের পয়লা বৈশাখ। এবারও কোথাও মেলা নেই, নেই বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে পয়লা বৈশাখে কোনোভাবে জনসমাগম করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকার। ৭ এপ্রিল সরকার জানিয়েছে, ১৪ এপ্রিল বাংলা বর্ষবরণের আয়োজন অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে করা যাবে।
রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজন দিয়ে শুরু হয় বাঙালির বর্ষবরণ। করোনা মহামারির কারণে গতবারের মতো এবারও থাকছে না ছায়ানটের শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠের মূর্চ্ছনা।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা জানান, গত বছরের মতো এবারও ছায়ানট ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে।
করোনা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতিতে সবার স্বাস্থ্যঝুঁকির শঙ্কা মাথায় রেখে বটমূলের আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে লিসা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল দর্শকশূন্য অবস্থায় অথবা পরিস্থিতি আরও বেশি প্রতিকূল হলে পয়লা বৈশাখ ভোরের অনুষ্ঠান আগেই রেকর্ড করে নেয়া।’
ছায়ানটের বেশ কজন শিল্পী ও কর্মী করোনা আক্রান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সকলের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা ডিজিটাল মাধ্যমে পুরোনো ও নতুন পরিবেশনের মিশ্রণে অনুষ্ঠান সাজাচ্ছি।’
বাংলা সন ১৪২৮ কে স্বাগত জানাতে নববর্ষের দিনে অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল সকাল ৭টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ঘণ্টাখানেকের সংকলন অনুষ্ঠানটি প্রচার করবে বলে সম্মতি জানিয়েছে।
একই সঙ্গে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলে ChhayanautDigitalPlatform অনুষ্ঠানটি দেখা যাবে।
বাঙালির বর্ষবরণের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা, যা জাতিসংঘের বিশ্ব সংস্কৃতির অংশ হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু করোনার থাবায় সেখানেও পড়েছে ছেদ। বর্ষবরণ করে নিতে এবারও থাকছে না কোনো আয়োজন।
পয়লা বৈশাখের দিন নতুন বছরকে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে প্রতিবছর সকালে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। বর্ণিল এই শোভাযাত্রায় শুধু চারুকলা শিক্ষার্থীরাই নন, অংশ নেয় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
মঙ্গল শোভাযাত্রার শুরুটা হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এখনকার মতো সেদিন এতটা বর্ণাঢ্য আয়োজন না থাকলেও, কালক্রমে এটি হয়ে ওঠে বাংলা বর্ষবরণের অন্যতম অনুষঙ্গ। কিন্তু করোনাভাইরাসের ভয়াবহতায় এ নিয়ে টানা দুই বছর মঙ্গল শেভাযাত্রার আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে ডিন নিসার হোসেন জানিয়েছেন, চারুকলার শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় একটি অনুষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে। পয়লা বৈশাখের দিন সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ প্রচারের উদ্যোগ নেবে।