এ,কে,আজাদ- আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ পিঠা পুলির দেশ বাংলাদেশ। পিঠা বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। কৃষকের ঘরে যখন নতুন ধান ওঠে, সেই ধান ঢেঁকিতে ভেঙে তৈরি হয় নানারকম পিঠা। অগ্রহায়ণের নতুন চালে পিঠার স্বাদ সত্যিই অসাধারণ। এ সময় টাটকা চালে তৈরি করা হয় বাহারি সব পিঠা। মম গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে ঋতুর প্রথম ভাগ থেকেই। পিঠা খেতে ভালোবাসে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে প্রবাসীদের অনেকেই পিঠা খাওয়ার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়।
বরাবরের মতোই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রবাসীদের পিঠা খাওয়ার অতৃপ্তি কিছুটা দূর করার পাশাপাশি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরাও।
প্রবাসে নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার চিরন্তন ঐতিহ্য তুলে ধরতে শীতকালীন পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে আয়ারল্যান্ডস্থ প্রবাসী বৃহত্তর বরিশাল পরিবার আয়ারল্যান্ড সংগঠন।
গতকাল ৩ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ডাবলিনের তালাইয় কিলনামানাগ ফ্যামিলি রিক্রিয়েশন সেন্টারে আয়োজিত পিঠা উৎসবে ঘরের তৈরি বিভিন্ন ধরনের পিঠা নিয়ে অংশ নেন প্রবাসী বাংলাদেশি নারীরা হাজির করেন গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক লোভনীয় সুস্বাদু ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, দুধচিতই, ছিট পিঠা, দুধকুলি, ক্ষীরকুলি, তিলকুলি, পাটিসাপ্টা, ফুলঝুড়ি, ধুপি পিঠা, নকশি পিঠা, মালাই পিঠা, মালপোয়া, পাকন পিঠা, ঝাল পিঠা সহ হরেক রকমের রকমারি পিঠা। পিঠা উতসবের পাশাপাশি ছিল ঝাল মুড়ি, সিঙ্গারা, ছোমচা, দেশী স্বাদের বিরিয়ানি খিচুরী, চটপটি সহ হরেক রকমের দেশীয় স্টল।
পিঠা উৎসবটি আয়ারল্যান্ডে বাঙালির এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। বেশিরভাগ নারীদের পরণে ছিল বাহারী রংয়ের শাড়ি আর পুরুষদের পরনে ছিল বাঙালির প্রিয় পোশাক পাজামা-পাঞ্জাবি।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সাজানো ছিল পিঠা পরিচিতি ও একে অন্যের সাথে আলাপচারিতা। দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পিঠা উৎসবের সবশেষে ছিল অন্যতম আকর্ষণ ছিল র্যাফেল ড্র। ড্র চলার সময় সবার মধ্যে ছিল চরম উত্তেজনা।
আমাদের হাজারো সমস্যা সত্ত্বেও প্রবাসী বাঙালির মাঝে এসব পিঠা পার্বণের আনন্দ উদ্দীপনা এখনো মুছে যায়নি। পিঠা পার্বণের এ আনন্দ ও ঐতিহ্য যুগ যুগ টিকে থাকুক প্রবাসী বাঙালির ঘরে ঘরে।
বরিশাল সহ অন্যান্য জেলার মানুষদের উৎসাহিত ও অনুষ্ঠানের সাথে সংযুক্ত করাই ছিল আয়োজকদের উদ্দেশ্য। সেজন্যই প্রচারণার একটা বড় অংশ জুড়ে বরিশাল বাদে ও অন্যান্য জেলার মানুষদের আমরা বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। যা বরিশালের বাহিরে অন্যান্য জেলা মানুষের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।