এস,এ,রব, আয়ারল্যান্ড থেকে: অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দিতে একটি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে আয়ারল্যান্ড সরকার। এ বিষয়ক একটি প্রকল্পের রূপরেখা মন্ত্রিসভার কাছে উপস্থাপন করেছে দেশটির বিচারমন্ত্রী হেলেন ম্যাকেনি।
প্রকল্পটি চালু হলে পশ্চিম ইউরোপের দেশটিতে অবস্থানরত কয়েক হাজার অবৈধ অভিবাসী বৈধতা পাবেন। বৈধভাবে আয়ারল্যান্ডে থাকা ও উপার্জন করার পাশাপাশি তাদের নাগরিকত্ব লাভের পথও সুগম হবে।
আইরিশ বিচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, প্রকল্পের শর্তগুলো ঠিক করতে এবং অন্যান্য আরো কিছু বিষয়ে আলোচনার জন্য মন্ত্রিসভার কাছে পাঠানো হয়েছে একটি খসড়া প্রস্তাব।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বিষয়টি সরকারের অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে আশা করছে মন্ত্রণালয়। এরপর বছরের শেষ দিকে এই প্রকল্পটি চালু হলে চার বছর ধরে আয়ারল্যান্ডে অবৈধভাবে বসবাস করছেন এমন অভিবাসীরা বৈধভাবে অবস্থান ও কাজের অনুমতি পাবেন। পর্যায়ক্রমে তাদের জন্য নাগরিকত্ব লাভের পথ উন্মুক্ত হবে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিচারমন্ত্রী হেলেন ম্যাকেনি ‘জাস্টিস প্ল্যান ২০২১’ এর অংশ হিসেবে এই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের চূড়ান্ত শর্তগুলো কী হবে সেসব নিয়ে এখন আলোচনা হবে। প্রাথমিকভাবে চার বছর ধরে বসবাস করা অবৈধ বিদেশিদের বিবেচনায় রাখা হয়েছে। তবে যাদের সন্তান রয়েছে তাদের জন্য এই সময়সীমা হবে তিন বছর।
আইরিশ বিচারমন্ত্রী বলেন, কয়েক হাজার লোক যারা দুর্ভাগ্যবশত এদেশে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। তারা আমাদের কমিউনিটিতে সক্রিয়, আমাদের সমাজে তাদের অবদান রয়েছে। আয়ারল্যান্ডের সংস্কৃতিকে তারা সমৃদ্ধ করছেন, এদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলোতে অবৈধভাবে অবস্থান করা আইরিশ নাগরিকদের জন্য যতটা উদারতা দেখাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে আমরা অনুরোধ করি, এদেশে থাকা বিদেশিদের জন্যও আমাদের একই ধরনের উদারতা দেখাতে হবে।
এই প্রকাল্পের বিষয়ে সোমবার (২৬ এপ্রিল) একটি অনলাইন সেমিনারে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, সুশীল সমাজ, চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান, ট্রেড ইউনিয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আলোচনা করবে আইরিশ সরকার।
এতে অংশ নেবেন বিচারমন্ত্রী হেলেন ম্যা কেনি, আইন সংস্কার প্রতিমন্ত্রী জেমস ব্রাউন টিডি। দীর্ঘদিন ধরে আয়ারল্যান্ডে বসবাস করা অবৈধদের স্বীকৃতি দানের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আলোচনা করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে বিচারমন্ত্রী ম্যাকেনি বলেন, প্রকল্পটির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তাব তুলে ধরা ও কিভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করা যাবে তা নিয়ে আলোচনার একটি সুযোগ এই সেমিনার। দুর্ভাগ্যবশত যারা এদেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে তারা আইনগতভাবে অনিশ্চয়তার মাঝে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এই প্রকল্পটি চালু হলে এসব ব্যক্তি ও পরিবারের সাথে সরাসরি কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সমর্থনে তারা এর সুযোগ নিতে পারবেন।
মন্ত্রী জানান, সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা ও তাদের পরামর্শ নিয়ে সরকার প্রকল্পটি চালু করতে চায়। এই সেমিনারের পর প্রতিষ্ঠানগুলো- বিশেষ করে যেখানে অবৈধ অভিবাসীরা কাজ করছেন, লিখিত আকারে তাদের প্রস্তাবনা ও আবেদন জমা দিতে পারবে।
চলতি বছরের শেষ দিকে এ বিষয়ে আবেদন গ্রহণ শুরু করবে মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি পরিচালনার জন্য বিচারমন্ত্রীকে নির্বাহী ক্ষমতা দেয়া হবে এবং কাজ শেষ করার জন্য একটি সময়সীমা বেধে দেয়া হবে। সেটি হতে পারে ছয় মাস। আবেদন জমা হওয়ার পর সেগুলো পর্যাক্রমে বিবেচনা করা হবে, এক্ষেত্রে ব্যক্তির আচরণ গুরুত্ব পাবে।