মোদির সফর ও সাম্প্রতিক ভাবনা

প্রভাষক আব্দুস সহিদ, আয়ারল্যান্ডঃ একটি Apps আছে,যার মাধ্যমে হুবুহু কন্ঠ পরিবর্তন করে অন্য কন্ঠের সংগে মিলিয়ে সহজে বিভ্রান্ত ছড়ানো যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম, হিলারী ক্লিনটন সহ অনেক হাই প্রোফাইলরা ও এই ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছেন। আশ্চর্যের বিষয় হল বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্রহরনের এই অসত্য বানোয়াট কল্পকাহিনী প্রায়শই শুনা যায়। লক্ষ করলে দেখা যায়, এসব তথ্যবিভ্রাট, কল্পকাহিনী আমার মতে আমাদের দেশের ৭১ নামক টিভি চ্যানেলই আগ্রহের সহিত সর্বপ্রথম প্রকাশ করে থাকে। প্রকৃত ঘটনা তদন্তের পূর্বে কি করে একটি টিভি চ্যানেল তা প্রচার করে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, ঐ টিভি চ্যানেলটি কি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে শক্তিশালী ? নাকী খুঁটির জোর অন্য কোথাও। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত টালমাটাল। বিশেষকরে অতি সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরকে ঘিরে শুরু হওয়া বৈরী পরিবেশ নিয়ে সাধারন মানুষের মনে অনেক প্রশ্নের সৃস্টি হয়েছ। ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাস্ট্র। আমাদের বৈদেশিক নীতি হচ্ছে “ friendship to all malice to none” (সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে সত্রুতা নয়)। ভারত স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের সহযোগিতা করেছে, কারন তারা তাদের চিরশত্রু পাকিস্তানকে দুর্বল করার পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রতি তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে, এই ভেবে হয়তো তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিল, আমরা কিন্তু তাদের এই সহযোগিতার কথা স্মরণ করি। তাই বলে give and take বলে একটি কথা আছে, আমরা শুধু উজাড় করে দিয়েই যাব, বিনিময়ে কিছুই পাবনা, এটাতো কাম্য হতে পারেনা। নরেন্দ্র মোদি সুবর্ন জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে এসেছেন, নাকী পশ্চিম বাংলার নির্বাচনী ফায়দা তুলতে এসেছেন সেটা আমার আলোচনার বিষয় নয়, আমার কথা হচ্ছে, নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রতিবাদ করতে গিয়ে যে ২০ টি তাজা প্রাণ ঝরে গেল এর দায় কে নেবে ? একটি স্বাধীন দেশের সরকার হয়ে, কি করে পুলিশ দিয়ে নিজ দেশের নিরপরাধ নাগরিকের উপর গুলি চালাতে পারে তা ভাবতে বড় কষ্ট হয়। ইউরোপের দেশ জার্মানীতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম সফরের সময় সে দেশের বাম সংগঠন গুলো তার বিরুদ্ধে, রাস্তায় তুমুল প্রতিবাদ করেছে। কই, সেখানেতো পুলিশ গুলি করেনি ? বাংলাদেশের মানুষকে সুবর্ন জয়ন্তী পালন করা থেকে নিবৃত রেখে একজন বিতর্কৃত ব্যক্তিকে এনে এই অশান্ত পরিবেশ সৃস্টির কি প্রয়োজন ছিল ? চীনের পৃষ্টপোষকতার কারনে আজ মায়ানমারে রক্তের হোলি খেলা চলছে, ঠিক তেমনি ভারতের কারনে আমাদের দেশে আজ অশান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। আমরা বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় নাগরিক হিসাবে, শান্তি চাই, নিরাপত্তা চাই, মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা চাই। তাই আসুন,শান্তির অন্বেষনে কাজ করি। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, প্রভুদের খুশী করার হীন মানসিকতা ত্যাগ করে জনগনের কল্যানে কাজ করার মাধ্যমেই শান্তি প্রতিষ্ঠা অতীব জরুরী। তাছাড়া মানুষের সাংবিধানিক গনতান্ত্রিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বাধীনতার প্রকৃত মর্যাদা রক্ষা করা সম্ভব।

SHARE THIS ARTICLE