আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ অর্থ আত্মসাৎ করে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে দেশে আনতে এবং গ্রেপ্তারে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন। দুদক চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পি কে হালদারের আত্মসাৎ করা টাকা দেশের বাইরে পাঠিয়েছে কি? আদালতের এমন প্রশ্নের জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, সেটাই তদন্ত চলছে। এখানে মানিলন্ডারিং হয়েছে। অনেক টাকাই বিদেশে পাঠিয়েছে। বর্তমানে সে পলাতক। আসার কথা বলেও সে দেশে আসে নাই।সর্বশেষ অবস্থা হলো ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে ধরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আদালত বলেন, কেউ দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করবে আর সে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে, মগের মল্লুক নাকি! কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাকে অবশ্যই দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে, আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। তাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এত টাকা সে কীভাবে আয় করেছে, কীভাবে সে বিদেশে পাচার করেছে। আমরা মনে করি তাকে ফিরিয়ে আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা সেটা আমাদের জানা দরকার। আদালত আরো বলেন, একজন মানুষ হাজার হাজার কোটি নিয়ে যাচ্ছে, সে আইনের আওতার বাইরে থাকবে, কোর্টের আওতার বাইরে থাকবে, সমস্ত জাতিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাবে এটা হতে পারে না।
নথি থেকে জানা যায়, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে পিকে হালদার অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ১৯শে জানুয়ারি দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এক আদেশে প্রশান্ত কুমার হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপর গত ৭ই সেপ্টেম্বর পিকে হালদার নিরাপদে দেশে ফিরে আদালতের হেফাজতে যেতে পারেন সেজন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল)। আবেদনে বলা হয়, টাকা উদ্ধারে সহযোগিতা করতে নিরাপদে দেশে ফিরতে চান তিনি। পরবর্তীতে গত ২১শে অক্টোবর আইএলএফএসএল-এর পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন আদালতকে জানান, পিকে হালদার ২৫শে অক্টোবর দুবাই থেকে অ্যামিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে দেশে ফিরতে টিকিট কেটেছেন। ওইদিন বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায় ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। তিনি এ আবেদনের সঙ্গে বিমানের টিকিটের ফটোকপি দাখিল করেন। এ আবেদনে আদালত গত ২১শে অক্টোবর এক আদেশে দেশের বিমানবন্দরে পা রাখা মাত্রই পিকে হালদারকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। পুলিশের আইজি, দুদক ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের প্রতি এ নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু পিকে হালদার এখন পর্যন্ত দেশে ফেরেননি।