আইনের শাসন ও সুশাসনের অভাবে দেশে খুন, ধর্ষণ এবং অনাচার-অবিচার বেড়ে গেছে: জিএম কাদের

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, দেশের খুন ও ধর্ষণের ঘটনা আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনের শাসন ও সুশাসনের অভাবে দেশে খুন, ধর্ষণ এবং অনাচার-অবিচার বেড়ে গেছে। আইনের ফাঁক দিয়ে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। আর সে কারণেই অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যায়। আইনের শাসনে কিছুটা ঘাটতি আছে বলেই মানুষ নিজ হাতে আইন তুলে নিচ্ছে। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাতে দেশের মানুষ রাস্তায় নেমেছে। এর চেয়ে লজ্জার কিছু নেই।

সোমবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী অফিস মিলনায়তনে নবগঠিত সাংস্কৃতিক পার্টির পরিচিতি অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এ কথা বলেন। জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক এবং জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরিফা কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পরিচিতি সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের আরও বলেন, সর্বস্তরে জবাবদিহিতার অভাবে সুশাসনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আমরা দেশ থেকে খুন, ধর্ষণ, অবিচার-অনাচারের অবসান চাই।

তিনি দুঃখ ও বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, লালমনিরহাটে বুড়িমারি এলাকায় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় চেয়েও বাঁচতে পারেনি সে। যদি ছেলেটি অপরাধী হয় সেজন্য দেশে আইন আছে, তাকে আইনের মুখোমুখি করা যেত। অপরাধ প্রমাণ হলে প্রচলিত আইনেই তাকে শাস্তি দেয়া যেত। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এ নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। জিএম কাদের আরও বলেন, বিশ্বের সব বৈপ্লবিক পরিবর্তন ও সামাজিক বিবর্তনে সাংস্কৃতিক কর্মীরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। রাজনৈতিক আদর্শকে এগিয়ে নিতে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকল্প হয় না। তাই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টিকে আরও শক্তিশালী করতে নির্দেশ দেন তিনি।

জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ফরাসী বিপ্লব, চাইনিজ বিপ্লব, রুশ বিপ্লব, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন এবং মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে সাংস্কৃতিক কর্মীরা ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। একই ধারাবাহিকতায় পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শ বাস্তবায়নে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টিকে আরও শক্তিশালীভাবে কাজ করতে হবে। দেশের উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে আগামী নির্বাচনে পল্লীবন্ধুর জাতীয় পার্টি ভোট বিপ্লবে বিজয়ী হবে।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেন, মানুষের দৃষ্টি এখন জাতীয় পার্টির দিকে। হত্যা-সন্ত্রাস ধর্ষণ নৈরাজ্য ও অনাচার-অবিচার থেকে মানুষ এখন জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। দুই দল ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ, তখন জাতীয় পার্টিই একমাত্র মানুষের ভরসার জায়গা। এখন সময় ঘুরে দাঁড়াবার। জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করার। জাতীয় পার্টি শক্তিশালী হলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বলেন, সাংস্কৃতিক বিবেচনায় জাতীয় পার্টির আলো এখন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে। বিশেষ করে জাতীয় পার্টির মহিলা পার্টির নারী সদস্যদের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পার্টির ছেলেমেয়েদের অংশগ্রহণ দলে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দেখেছি, এদেশের সংস্কৃতিকর্মীরা দেশের স্বাধীনতা আনতে কতটা নিবেদিত ছিলেন।

এ সময় তিনি প্রয়াত দুই মহান ব্যক্তিত্ব পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং বিশিষ্ট শিল্পপতি যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সবার কাছে দোয়া চান। অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদেরের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সাল চিসতী, মীর আবদুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আকতার এমপি, আলমগীর শিকদার লোটন, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি। উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, ড. নুরুল আজাহার শামীম, সামসুল আলম মাস্টার। ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, নিগার রানী সুলতান, মোস্তফা আল মাহমুদ, শফিউল্লাহ শফিক, নুরুন নাহার বেগম, হুসেইন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ।

SHARE THIS ARTICLE