আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ করোনা প্রতিরোধে সুখবর দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের (ইউপিএমসি) গবেষকেরা। তাঁরা এমন একটি অ্যান্টিবডির খোঁজ পেয়েছেন, যা করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা ক্ষুদ্রতম জৈবিক অণুকে বিচ্ছিন্ন করেছেন, যা সার্স-কোভ-২ ভাইরাসকে সম্পূর্ণ এবং নির্দিষ্টভাবে নিরপেক্ষ করতে সক্ষম। গত সোমবার ‘সেল’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ।
গবেষকেরা যে অ্যান্টিবডির খোঁজ পেয়েছেন, তা পূর্ণ অ্যান্টিবডির তুলনায় ১০ গুণ ছোট। এই অ্যান্টিবডি ব্যবহার করে গবেষকেরা ‘এবি ৮’ নামের একটি ওষুধ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা ভাইরাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় কাজে লাগতে পারে বলে আশা জোগাচ্ছে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, ওষুধটি এ পর্যন্ত ইঁদুরের ওপর প্রয়োগে সার্স-কোভ-২ সংক্রমণ রোধ এবং চিকিত্সা করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
ওষুধটি এমন লক্ষণ দেখিয়েছে, যাতে এটি মানুষের ওপর প্রয়োগে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখাবে না বা মানুষের কোষের সঙ্গে আটকাবে না।
পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউপিএমসির সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ও গবেষণা নিবন্ধের সহ-লেখক জন মেলর্স বলেছেন, এবি ৮ কেবল কোভিড-১৯–এর থেরাপি হিসেবেই ব্যবহার নয়, এটি সার্স-কোভ-২–এর সংক্রমণ থেকেও সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবে। গবেষণা নিবন্ধের সহযোগী লেখক ছিলেন পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জিয়াংলেই লিউ।বিজ্ঞাপন
গবেষক মেলর্স বলেন, বড় আকারের অ্যান্টিবডি অন্যান্য সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি সহনশীল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
এ বিষয়টি গবেষকদের কোভিড-১৯–এর কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি বের করতে আশা জুগিয়েছে। তাঁরা প্রচলিত চিন্তার বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন এবং ওষুধটি কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে গবেষণা করেছেন।
গবেষকেরা মনে করছেন, তাঁদের উদ্ভাবিত ওষুধ বিকল্প চিকিৎসাপদ্ধতিতেও ব্যবহার করা যেতে পারে, যার মধ্যে ইনহেলার বা প্লাস্টিক প্যাঁচের মতো পদ্ধতিও রয়েছে।
গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, পরীক্ষার সময় একেবারে কম মাত্রায় এবি ৮ দেওয়াতে ইঁদুরের ক্ষেত্রে ১০ গুণ পর্যন্ত সংক্রমণ দূর করতে সক্ষম হয়েছে।
গবেষক মেলর্স বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি মানবতাকে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান ও মানুষের উদ্ভাবনী দক্ষতা এ চ্যালেঞ্জ উতরাতে সাহায্য করবে।
মহামারির বিরুদ্ধে জয়ী হতে যে অ্যান্টিবডি আবিষ্কার করা হয়েছে তা ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।