খেলাধুলার গুরুত্ব বা ভূমিকা

ডা. মুসাব্বির হোসাইনঃ খেলাধুলা আমাদেরকে শারীরিক এবং মানসিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেলাধুলা আমাদের মাঝে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে,

পারস্পরিক সহমর্মিতা, ভ্ৰাতৃত্ববােধ, ঐক্যবদ্ধতা, সততা, উপস্থিত বুদ্ধি,সহনশীলতা, আত্মসম্মানবােধ, জাতীয়তাবােধ, উদারতা, ক্ষমাশীলতা, যে কোন পরাজয়ে ভেংগে না পড়ে বরং আগামী দিনের জন্য নিজেকে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

মানব চরিত্র প্রতিভা-নির্ভর নয়, নিতান্তই অনুশীলন-সাপেক্ষ। চরিত্র গঠনের ব্যাপারে পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। মানবজীবনের শুরু পারিবারিক গণ্ডীর মধ্যে। কথায় বলে, “Home is the first school”। পরিবারের মধ্যেই শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা লাভ ঘটে। আবার, চরিত্র গঠনেরও প্রাথমিক ক্ষেত্র হল পরিবার।

শিশুর বিকাশে খেলাধুলার বিকল্প নেই

পারিবারিক গণ্ডীর মধ্য থেকে চরিত্র গঠনের তত্ত্বগত দিকগুলি সম্বন্ধে সুনির্দিষ্ট ধারণা লাভ করা যায়, তবে পরিবারের বাইরে রয়েছে বিশাল বিস্তৃত জগৎ। সেখানে পরিবেশ ও পরিস্থতি ভিন্ন প্রকৃতির। পারিবারিক শিক্ষার মাধ্যমে একজন শিশু মানব চরিত্র সম্পর্কে যে প্রাথমিক ধারণাটুকু লাভ করে, বাড়ির বাইরে সেগুলি প্রয়োগ করার সুযোগ থাকে। বলা বাহুল্য, একথা এখন প্রমাণিত যে, চরিত্রগঠন এবং তার বিকাশ ও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে প্রয়ােগ করার ব্যাপারে খেলাধুলা খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

ফিরে আসুক পারিবারিক বন্ধন

★ খেলাধুলা একজন স্পোর্টস ম্যানের মনে আনন্দ দান করে, আত্মতুষ্টি পাওয়া যায়। আর আনন্দময় পরিবেশ একজন মানুষের সৎ গুণগুলি বিকাশের পক্ষে সহায়ক।

★ খেলাধুলা একটি সমষ্টিগত বিষয় বা টীম ওয়ার্ক। এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ফল হিসেবে একজন মানুষের আত্মকেন্দ্রিকতা দূর হয় এবং সম্মিলিত ভাবে যে কোন কঠিন কাজ একসাথে সম্পন্ন করার মানসিকতা গড়ে তুলে।

★ খেলায় জয়লাভের জন্য সহখেলােয়াড়দের সক্রিয় সহযােগিতা প্রয়ােজন হয়। এভাবে পারস্পরিক সহমর্মিতার জন্ম হয়। আর সহমর্মিতার সূত্র ধরে অন্তরে প্রবেশ করতে থাকে মমত্ববােধ, ভ্রাতৃত্ব ও উদারতা।

★ জীবন পথে সততার মূল্য অপরিসীম। খেলাধুলা আমাদেরকে সৎ পথে থাকতে উৎসাহ যোগায় এবং সাহায্য করে। খেলাধুলার ক্ষেত্রে অসত্য, অসদাচরণের কোনাে স্থান নেই।

শিশুর প্রতিভা বিকাশের অন্যতম মাধ্যম খেলাধুলা

★ বলাবাহুল্য, মানসিক কাঠামােকে সুন্দর করার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলা যে দৈহিক শ্রীবৃদ্ধিও সাধন করে সেকথা তাে সর্বজনবিদিত। সেই সাথে উদ্যমী, সাহসী ও পরমসহিষ্ণু হওয়ার জন্যও খেলাধূলা আদর্শ মাধ্যম। অতএব, সামাজিক অবক্ষয় রােধের জন্যও খেলাধুলার প্রচার ও প্রসার ঘটানাে যেকোনাে জাতির প্রাথমিক ও আবশ্যিক কর্তব্য হওয়া উচিত।

লেখকঃ চিকিৎসক, MBBS (Dhaka), MRCP (Ireland), MRCP (Glasg), Diploma in Stroke and Cerebrovascular Medicine (RCPI) মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। সিনিয়র রেজিস্ট্রার জেরিয়েট্রিক ও স্ট্রোক মেডিসিন। কর্ক ইউনিভার্সিটি হসপিটাল আয়ারল্যান্ড।

SHARE THIS ARTICLE