গল্পে গল্পে নৈতিকতা (২)

ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারঃ দাদার সাথে আমার গল্পে গল্পে আলাপ শেষ হয়ে যায়নি। আমাদের আড্ডা যেন অন্তহীন, চলতেই থাকে। সেই আলাপের কোন সূচনা নেই, গতিপথ নেই, অন্ত নেই। আপনারা এই দাদাকে চিনতে পেরেছেন কি না আমি জানিনা কিন্তু আমি আবারো বলছি আড্ডায় দাদার জুড়ী মেলা ভার। দাদা বললেন, ব্যাসদেবের মহাভারতে আছে, নৈমিষারণ্যে মহর্ষিরা দৈনন্দিন কর্ম সমাধান করতঃ সকলে সমবেত হইয়া কথা-প্রসঙ্গ সুখে অর্থাৎ আড্ডা দিচ্ছিলেন। এমন সময় এই আড্ডায় ঋষি লোমহর্ষণের ছেলে সৌতি কোথা থেকে এসে উপস্থিত হলেন এবং যথারীতি তিনিও আড্ডায় জমে গেলেন। সৌতি কোথা থেকে আসছেন, সেখানে কী দেখলেন, কী শুনলেন সব জমিয়ে বলার পর সৌতি যখন আড্ডার থেকে বেরোলেন দেখা গেল মহাভারতের অষ্টাদশ পর্ব পর্যন্ত লেখা হয়ে গেছে। বলাই বাহুল্য এর থেকে স্পষ্ট যে আড্ডার ইতিহাস সুপ্রাচীন। সেই মহাভারতের কাল থেকে চলছে। মুনিঋষিরাও দান-ধ্যানের ফাঁকে জমিয়ে আড্ডা মারতেন এবং আড্ডা শুধু আলস্য বিনোদন নয়। সেখান থেকে মহাভারত অবধি জন্ম নিতে পারে। 

The Indian epic Mahabharata imparts a dark, nuanced moral vision | Aeon  Essays


আমি বললাম, “দাদা মনে হয় আজকের বক্তৃতাটা আড্ডার উপর দিয়েই চালিয়ে যেতে চান? আমি ত শুনেছি স্বয়ং সক্রেটিসও আড্ডার ভক্ত ছিলেন।” দাদা এবার মনে হলো জম্পেশ হয়ে বসলেন আর বউদিকে ডেকে বললেন, “কই তোমার চা-টা কোথায়?” বৌদি জানালেন, “আমি ত প্রস্তুত, পাছে তোমাদের গল্পে ছেদ পড়ে, তাই অপেক্ষায় আছি।” মুড়ি, চানাচুর, পিয়াজ, মরিচ আর সরিষার তেল দিয়ে একটি পাঁচ মিশালি তৈরি হয়ে টেবিলে চলে এলো। বৌদিও চলে আসলেন আড্ডার টেবিলে। আড্ডায় মাঝে মাঝে বৌদি দু একটা কথা বললেও বেশীক্ষণ উনার ধৈর্য্য থাকেনা। বৌদি আবার টেলিফোন নির্ভর। একটু পর পর দেখা যায় উনার ভাই, বোন, ভাতিজা, ভাগ্নিরা বিভিন্ন দেশ থেকে টেলিফোন করেছে। বৌদি অবশ্য আমাদের থেকে উনার আত্নীয় স্বজনের সংসর্গ বেশী পছন্দ করেন বলেই মনে হয়।”

Quick and Easy CHANACHUR CHAT | Tea Time Snacks | Tasty Indian Recipe -  YouTube

চানাচুর খেয়ে আর চা পান করেই দাদা শুরু করলেন, “আপনি সক্রেটিসের কথা বলেছেন। সক্রেটিসকে ত আড্ডার জনকই বলা যায়। সক্রেটিসের সম্পর্কে একটা গল্প বলি আপনাকে। সক্রেটিস মূলতঃ ঘুরে ঘুরে গল্পই করতেন কিন্তু সেই গল্প হতো জ্ঞানের গল্প। সক্রেটিসের উদ্ভূত এই পদ্ধতিকে সক্রেটিসের সংলাপ (ডায়ালগ) বলা হয়। যাই হোক, একদিন সক্রেটিস তার শিষ্যদের সাথে যখন আলাপে ব্যাস্ত সেখানে এসে উপস্থিত হলেন এক জ্যোতিষী। জ্যোতিষী জানালেন তিনি একজন মানুষের অংগ প্রত্যঙ্গ দেখে বলে দিতে পারেন মানুষটি কি রকম?

তিনি সক্রেটিসের নাকের আকৃতি দেখে বললেন, “আপনি একজন মারাত্নক রাগী মানুষ।” এই কথা শুনে সক্রেটিসের শিষ্যরা রেগে মেগে আগুন। সক্রেটিস তাদের থামিয়ে বললেন, “আসুন না আমরা শুনি লোকটি আর কি বলতে পারে।”  এবার জ্যোতিষী বলতে শুরু করলেন, “আপনার মাথার আকৃতি বলে দেয় আপনি অত্যধিক লোভী, আপনার চিবুক দেখে বলা যায় আপনি একজন উদ্ভট, খামখেয়ালি ধরনের মানুষ, আপনার ঠোট এবং দাঁত বলে দেয় যে আপনি সর্বক্ষন মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জন্য উসকানি দিয়ে থাকেন।“ 

সক্রেটিস মনোযোগ দিয়ে জ্যোতিষীর বক্তব্য শুনলেন, তাকে ধন্যবাদ জানালেন এবং কিছু উপহার দিয়ে বিদায় জানালেন। সক্রেটিসের এই আচরণ দেখে শিষ্যরা তাকে প্রশ্ন করলেন, “আপনার সম্পর্কে এতগুলো নেতিবাচক কথা বলে গেল কিন্তু আপনি তার প্রতিবাদও করলেন না, তার ভুলও ধরিয়ে দিলেন না, উপরন্তু তাকে পুরস্কৃত করলেন, এর ব্যাখ্যা কি?”

Socrates, the Enigmatic Philosopher - Famous Greek people | Greeka

সক্রেটিস বললেন, “জ্যোতিষী যা যা বলেছে, তার প্রতিটি বক্তব্যই সঠিক অর্থাৎ আমার মধ্যে রাগ, হিংসা, লোভ আছে, আমি খামখেয়ালি এবং বিদ্রোহের উস্কানিও দিতে পারি কিন্তু জ্যোতিষী যা দেখতে পায়নি সেটা হচ্ছে আমার বিবেক। আমার একটি বিবেক আছে যা দিয়ে আমি আমার প্রতিটি দোষ কিংবা নেতিবাচক চরিত্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম, এই বিবেক দেখার তার ক্ষমতা নেই।”

গল্পটি সেরে দাদা বললেন, “বাদ দেন আড্ডার কথা, আপনি কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর এখনো দেন নি” আমি আশ্চর্য্য হয়ে বললাম, “কোন প্রশ্নের কথা বলছেন?” দাদা বললেন, “আপনি ভাবছেন আমি ভুলে গেছি? ওটা কিন্তু হচ্ছেনা। বলুন ত দেখি কিলকেনির সেই ফুটবল টুর্নামেন্টের কথা। ফুটবল টুর্নামেন্ট ত আমার মনে হয় প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ ছিল। বিডি সি ফুডের পৃষ্ঠপোষকতা, বি এস এ আই এর এই আয়োজন ত অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল। আমরা বাংলাদেশীরা নিজেদের মধ্যে এক ধরনের নেটওয়ার্কিং এর সুযোগ পাচ্ছিলাম। আমাদের সন্তানরা আনন্দ করছিল আর একে অপরের সাথে পরিচিত ও হচ্ছিলো। কিন্তু গোলযোগ হলো কেন?”

আমি বললাম, “দাদা, সকলের অন্তরের কথা ত আর জানা নেই। জানা সম্ভবও নয় তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছে, এখানেও নৈতিকতার ব্যাপার জড়িত ছিল। সক্রেটিসের গল্পটি আপনি বলে ফেলেছেন আগেভাগে। সক্রেটিসের এই গল্পটি এই ঘটনার সাথে খুবই সম্পৃক্ত। আমরা আমাদের অনেক নেতিবাচক চরিত্রের প্রকাশ ঘটিয়েছি সেদিন কিন্তু যা হারিয়ে ফেলেছিলাম তা হচ্ছে বিবেকের নিয়ন্ত্রণ। সকল কিছু ছাপিয়ে অসহিষ্ণুতা এবং আত্নসম্মানহীনতা আমাদের গ্রাস করেছিলো বলে আমার মনে হয়েছে।”

আমি বললাম, “দেখুন আমি খেলার মাঠে বেশীর ভাগ সময় দর্শকদের সাথে গল্প স্বল্প করেই কাটাচ্ছিলাম। হঠাত একজন দৌড়ে এসে বললেন, “তাড়াতাড়ি আসেন, মারামারি লেগে গেছে”। আমি তখন মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখলাম এক বিশৃঙ্খল অবস্থা। মাঠের ভিতরে দর্শকরা ঢুকে গেছেন এবং উচ্চস্বরে কথাবার্তা চলছে, উত্তেজনাময় পরিবেশ, হাতাহাতিও চলছে মনে হলো। কোন ভাবনা চিন্তার অবকাশ না নিয়েই আমি দৌড়ে মাঠে গিয়ে সবাইকে বাহিরে নিয়ে যাবার উদ্যোগ নিলাম এবং বললাম যে, “খেলা চলুক আমরা দেখবো কি হয়েছিলো”। এক সময় মনে হলো, “কথাটা সবাই মেনে নিয়েছেন, যদিও কয়েকজন পরিচিত মুখ থেকে অশোভন উচ্চারণ কিন্তু আমি শুনেছি এবং তারা যে আবেগে আপ্লুত হয়ে এধরনের অশোভন শব্দ উচ্চারণ করে নিজেকে অসম্মানিত করতে পারেন সেটা দেখি আমি আহত হয়েছি।”

আমি মাঠের বাহিরে এসে গেলাম, ভাবলাম খেলা শুরু হবে কিন্তু হা হতোস্মি দেখলাম আবারো বেশ কয়েকজন মাঠে ঢুকে পড়েছেন আর অন্যরা গিয়ে তাদের বাহিরে আনার চেষ্টা করছেন। এক পর্য্যায়ে শুনলাম, “কয়েকজন বলছেন মাফ না চাওয়া পর্য্যন্ত কোন খেলা হবেনা।” আমি মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে দূরে দাঁড়িয়ে আবেগের স্ফুরণ দেখলাম। সময় গড়িয়ে যাচ্ছিলো এগিয়ে যাওয়া আর পিছিয়ে যাওয়া চলছিলো। এরপর মনে হলো এক খেলোয়াড় সবার সামনেই অন্য দলের সদস্য এবং ম্যানেজারের নিকট মাফ চাইলেন। মনে হলো, খেলাটা শুরু হবে। তবুও দেখলাম, একটি পক্ষ মাঠের বাহিরে চলে গেলেন খেলা বন্ধ থাকলো। এর মধ্যে শুনতে পেলাম অন্য একটি মাঠেও গোলযোগ চলছে। আমি হতাশ হয়ে ঐ জায়গায় বসে থাকলাম। আমার দ্রুত চলাচলের সমস্যা বিধায় অন্যদের বিষয়টা দেখতে বললাম, আর জানালাম প্রয়োজন হলে ওখানেও আমি আসতে পারি। উনারা চলে গেলেন কিন্তু আর ফিরে আসলেন না।

দেখলাম মাঠে এবং মাঠের বাহিরে সবাই আলাপ আলোচনা করছেন, আমি বি এস আই এর কর্তাব্যাক্তিদের সাথে সমাধানের পথ নিয়ে আলোচনা করলাম। বোঝা গেলো উষ্মা স্তিমিত হয়েছে, খেলা একটু পর আবার শুরু হবে। আমি জোহরের নামাজ সারলাম মাঠেই। অনেকেই খাবার খাচ্ছিলেন, বিডি সি ফুডের কর্নধার সাইয়েদ রিদোয়ান আহমেদ বাবু নিজেই আমার জন্য এক বাক্স খাবার নিয়ে আসলেন। আমার কাছাকাছি যারা ছিলেন সবাই ইতিমধ্যে খাবার সেরে নিয়েছেন বলেই জানালেন কিন্তু আমি একা অন্যদের সামনে এই খাবার খেতে বিব্রতবোধ করছিলাম। মাঠ থেকে অদূরে কয়েকজনকে খেতে দেখলাম, তাই সেখানে গিয়ে খাবার খেয়ে ফিরে এলাম। খাবার সুস্বাদু ছিল খাবারের আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। যতটুকু জানি এই খাবারের আয়োজন করেছেন বিডি-সি ফুড। শুনেছি ৩০০ জনের খাবারের আয়োজন করা হয়েছিলো। সব খাবারই শেষ হয়েছে, এ থেকে এটা বোঝা যায় যে, ৩০০ জনের অধিক দর্শক সমাগম হয়েছিলো।”

Bangladeshi Grocery Wholesale - BD Sea Food Ltd


দাদা, শুনেছি গোলযোগের ব্যাপারটা শুরু হয়েছিলো একটি “ফাউলকে” কেন্দ্র করে, যার পর আসে বিজ্ঞানের সেই পরিবর্তিত সূত্র, “প্রতিটি ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া আছে, প্রাথমিক ক্রিয়া থেকে প্রতিক্রিয়া অনেক গুণ বেশী হয়।” এখানে আমরা আমাদের অসহিষ্ণুতা, বিধি আর নীতি অমান্য করা আর বিবেকের বিপর্য্যয় দেখেছি।


এখানে দাদা কিছু কথা অবশ্যই স্মর্তব্য যে, আমাদের এখানে বিডি-সি ফুডের মত পৃষ্ঠপোষকের খুবই প্রয়োজন। তারা প্রায়শই ভালো কাজের জন্য এগিয়ে আসেন কিন্তু আমরা তাদের ভালো উদ্যোগকে ধারণ করে রাখতে মাঝে মাঝে সফলতা দেখাতে পারিনা। নৈতিকতার মানদণ্ডে আপনি বিচার করে হয়তবা গোল্ড কাপে গোল্ড না থাকার বিষয়টাকে অনৈতিক বিবেচনা করতেই পারেন। হতেই পারে এটাকে গোল্ড কাপ না বলে শুধু বিডি-সি ফূড কাপ বললে নৈতিকতার উত্তরণ ঘটত কিন্তু এই সকল অনুষ্ঠানের ইতিবাচক দিকগুলো দেখা সকলের উচিৎ হবে বলেই আমি মনে করি। পুরষ্কার হিসাবে চ্যাম্পিয়ন দলকে ৫০০ ইউরো এবং রানার আপ দলকে প্রদান করা হয়েছে ৩০০ ইউরো যা সত্যি প্রশংসার দাবী রাখে। এর সাথে ছিল স্টেডিয়ামের ভাড়া, খাবার দাবারের ব্যয় ইত্যাদি বেশ ব্যয় সংকুল এবং আয়োজনের জন্য শ্রমসাধ্য। যারা এই সব আয়োজন করেন না তারা অনুষ্ঠান দেখেন কিন্তু আয়োজনের পিছনে ব্যয় করা সময়, শ্রম, অর্থ কিছুই অনুধাবন করতে পারেন না। তাই কিছু অনুষ্ঠান আহত হয়, ক্ষতিগ্রস্থ হয়, গুটিকয়েক মানুষের অসহিষ্ণুতা আর বিবেকের ব্যর্থতায়।
  


দাদা এবার আমি আপনাকে একটি গল্প শুনাই, দিগবিজয়ী চেঙ্গিস খানের কথা নিশ্চয়ই আপনার স্মরণ আছে। সেই চেঙ্গিস খানের একটি শিকারি বাজপাখি ছিল। চেঙ্গিস খান শিকারে গেলে এই বাজপাখিটি তার হাতে বসে থাকত আর উড়ে গিয়ে অনেক দূরেও শিকারের সন্ধান দিতে পারত। একদিন শিকারে গিয়ে কোন শিকার না পেয়ে সঙ্গী সাথীদের নিয়ে ঘরে ফিরে এলেন যুদ্ধবাজ চেঙ্গিস। তার সঙ্গী সাথীরা হতাশ ছিল তাই তাদের রেখে তিনি একাই আবার বেরিয়ে গেলেন বাজপাখিটিকে সাথে নিয়ে। সময়টা ছিল গ্রীষ্মকাল আর চেঙ্গিস শিকার খুঁজে খুঁজে পিপাসার্ত অনুভব করলেন কিন্তু কাছাকাছি কোথাও পানি পেলেন না। সব শুল্কিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে।

বেশ খানিকটা দূরে পাহাড়ের ঢালু বেয়ে একটি ছোট্ট পানির ধারা নেমে আসতে দেখলেন চেঙ্গিস। তার ব্যাগ থেকে পানির ছোট্ট কাপ বের করে সেই পানির ধারা থেকে পানি ভরে যেই খেতে যাবেন তখনি বাজ পাখি এক থাবায় কাপ সহ পানি মাটিতে ফেলে দিল। চেঙ্গিস বিরক্ত হলেন, তিনি আবার পানি সংগ্রহ করে খেতে চাইলে একই কাণ্ড ঘটলো। পানির ধারা শুকিয়ে আসছিল আর বাজ পাখিটির উপর চেঙ্গিসের রাগ তখন তুঙ্গে। উনি তলোয়ার বের করে হাতে নিয়ে আবারো কাপে পানি ভর্তি করতে লাগলেন আর পাখির দিকে খেয়াল রাখলেন। এবার কাপে অর্ধেক পানি ভরতেই বাজপাখি আবারো একই কাণ্ড করলে চেঙ্গিস তলোয়ারের অগ্রভাগ বাজ পাখিটির বুকে ঢুকিয়ে দিলেন, মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল পাখিটি। সেই পানির ধারার সব পানি ইতিমধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ায় চেঙ্গিস পাহাড়ের উপরে উঠে পানির ধারার উৎস দেখতে পেলেন আর আশ্চর্য্য হয়ে তিনি দেখলেন সেখানে একটি মারাত্নক বিষধর সাপের মৃতদেহ পড়ে আছে। চেঙ্গিসের মন বিষণ্ণতায় ভরে উঠলো রাগের মাথায় তিনি তার বাজপাখিটিকে মেরে ফেলেছেন, যে পাখিটি তার জীবন বাঁচিয়ে দিলো।
 

অনুশোচনায় চেঙ্গিসের মন ভারী হয়ে উঠলো। রাগের মাথায় কি ভুলই তিনি করে ফেলেছেন। ফিরে এসে তিনি বাজপাখিটির একটি প্রতিমূর্তি স্থাপন করলেন যার একটি ডানার উপর লিখে দিলেন, “একজন বন্ধু যখন তোমার অপছন্দের কিছু করে ফেলে, মনে রাখতে হবে তখনো সে তোমার বন্ধুই।” অন্য ডানার উপর লিখা ছিল, “রাগের মাথায় কোন কিছু করা তোমার ব্যর্থতা, পরাজয় এবং পতনের কারণ হতে পারে”। রাগ এবং অসহিষ্ণুতা থেকে স্রষ্টা আমাদের সুরক্ষিত রাখুন। আমিন

SHARE THIS ARTICLE