আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করেছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা দিয়ে এটি উপকূল অতিক্রম করে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবদুল মান্নান। তিনি ইত্তেফাককে বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল শুক্রবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে আজ শনিবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসবে। এ সময়ে ঢাকাসহ দেশের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। রোদের দেখা মিলতে পারে আগামীকাল নাগাদ। আজ আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে শুরু করবে, অর্থাত্ আর খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বৈরী ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ফেরি সার্ভিসসহ দেশের অভ্যন্তরীণ সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
রাত ৮টায় এই রিপোর্ট লেখার সময় গভীর নিম্নচাপটি বৃষ্টি ঝরিয়ে স্থল নিম্নচাপ আকারে ফরিদপুর-মাদারীপুর ও তত্সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। স্থল নিম্নচাপটির কেন্দ্রের ৪৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার; যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। নিম্নচাপের প্রভাবে দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানীসহ সারা দেশে। কোথাও থেমে থেমে আবার কোথাও মুষলধারে তুমুল বৃষ্টি। উপকূলীয় নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোয় বাড়িঘর, ফসলিজমি ও মাছের ঘের জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন এলাকার মাছের ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। রবিশস্য ও আমন ধানের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, মোংলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, ভোলাসহ উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলোর অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি প্রবেশ করেছে অনেক বসতবাড়িতেও। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা। মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী এলাকা তিন থেকে চার ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।