আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ হজ ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের একটি। এটি মুসলিম উম্মাহর অন্যতম ইবাদত। তবে এ ইবাদতের জন্য রয়েছে বিশেষ দু’টি শর্ত। একটি হলো সম্পদশালী হওয়া আর অন্যটি হলো শারীরিকভাবে সক্ষম হওয়া।
হজের সওয়াব ও ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং অশ্লীল ও গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মকবুল হজের পুরস্কার জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুই নয়’। (বুখারি, খণ্ড: ০১, পৃষ্ঠা: ২০৬)
বদলি হজ কী ও এর বিধান
বদলী হজের নাম শুনলেই অনেকে মনে করতে পারেন তা আদায়ের জন্য বোধ হয় আলাদা কোনো নিয়ম আছে। তা ঠিক নয়। যেভাবে নিজের হজ আদায় করা হয় সেভাবেই বদলি হজ আদায় করা হয়। পার্থক্য শুধু এইটুকু যে, নিয়ত ও তালবিয়ার সময় বদলী হজে প্রেরণকারীর পক্ষ থেকে হজের নিয়ত করা হয়। এরপর হজের সব কাজ এক ও অভিন্ন।
তবে হজের নিয়ম এক হলেও বদলি হজ সংক্রান্ত কিছু বিষয় এমন আছে, যা বদলি হজে প্রেরণকারী ও প্রেরিত উভয়েরই জানা থাকা জরুরি। যেমন-
কোনো ব্যক্তির ওপর হজ ফরজ হওয়ার পর সে যদি হজের সময় পায়, কিন্তু কোনো কারণবশত হজ করতে পারেনি; এরপর এমন ওজর বা প্রতিবন্ধকতা এসে গেল যে তার নিজে গিয়ে হজ করার ক্ষমতা আর রইল না অথবা এমন অসুস্থ হয়ে পড়ল, যা থেকে আর সুস্থ হওয়ার আশা নেই অথবা অন্ধ বা প্রতিবন্ধী হয়ে গেল বা বার্ধক্যের দরুন এমন দুর্বল হয়ে গেল যে এখন তার পক্ষে সফর করা সম্ভব নয়, তখন তার জন্য নিজের পক্ষ থেকে কাউকে পাঠিয়ে বদলি হজ করানো, অথবা মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে তার নামে বদলি হজ করানোর অসিয়ত করা ফরজ।
বদলি হজের বিষয়ে ব্যাখ্যা হলো, যে সমস্যার কারণে বদলি হজ করানো হলো, ওই ওজর বা সমস্যা বদলি হজ করানোর পর দূর হয়ে গেলে আবার স্বয়ং তার হজ আদায় করা ফরজ হয়ে যাবে। আর আগের বদলি হজটি তার নফল হয়ে যাবে। (আহকামে হজ : ১১৮)
বদলি হজের বিষয়ে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, বিদায় হজে খাসআম গোত্রের একজন নারী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার বাবার ওপর হজ ফরজ হয়েছে, কিন্তু তিনি এত বৃদ্ধ যে, বাহনের ওপর স্থির হয়ে বসে থাকতে পারেন না। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব’? নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ। (তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারবে)’। (সহিহ বুখারি ১/২০৫; সহিহ মুসলিম ১/৪৩১)
হজরত আলী (রা.) অতিশয় বৃদ্ধ লোক সম্পর্কে বলেছেন, ‘সে তার পক্ষ থেকে হজ করাবে এবং এর খরচ বহন করবে’। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৮/৫৯৯)
আরেক হাদিসে হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, জুহায়না গোত্রের এক নারী নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, আমার মা হজের মানত করেছিলেন কিন্তু তা আদায় করার আগেই তিনি মারা গেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করবো?
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হ্যাঁ’। তার পক্ষ থেকে তুমি হজ করবে। যদি তার কোনো ঋণ থাকে তবে কি তুমি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? সুতরাং আল্লাহর ঋণ পরিশোধ কর। কেননা আল্লাহ তাআলাই পাওনা পাওয়ার সর্বাধিক হকদার’। (বুখারি)