আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ
• ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলবে
• দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল ৩৮ মিনিটে
• সাড়ে চার মিনিট পর পর প্রতিটি স্টেশনের উভয়দিকে ট্রেন থামবে
• ট্রেনে চড়া যাবে র্যাপিড পাস কার্ড ব্যবহার করে
• ট্রেনের কম্পন ও শব্দ নিয়ন্ত্রণ করা হবে
ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রোরেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। এই রেলপথটি উড়াল রেলপথ। এটি ভূমি থেকে ১৩ মিটার ওপরে স্থাপিত হচ্ছে। নিচের বিদ্যমান সড়কে চলাচলকারী পথচারীরা মেট্রোট্রেনের চলাচল দেখতে পারবেন না। তিনতলা ও তার বেশি উঁচু ভবনের বাসিন্দারা এটির চলাচল সহজে দেখতে পাবেন। এই উড়াল রেলপথে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিলের দূরত্ব ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা বলছেন, ট্রেনের রানিং টাইম মূলত ১২ মিনিট। কিন্তু রেলপথে বিভিন্ন স্থানে বাঁক রয়েছে। এ কারণে এসব বাঁকে মোড় নেওয়ার সময় ট্রেনের গতি কম থাকবে। তাতে রানিং টাইম ১৫ মিনিট ধরা হয়েছে। রেলপথে থাকবে ১৬টি রেলস্টেশন। শুরু ও শেষ প্রান্তের রেলস্টেশন ছাড়া বাকি ১৪টি রেলস্টেশনে লাগবে ২১ মিনিট। কারণ প্রতিটি রেলস্টেশনে এক মিনিট বিরতি ছাড়াও গতি কমানো ও বাড়ানোয় গড়ে দেড় মিনিট লাগবে। তাতে দেখা যায়, ৩৬ মিনিটে একটি ট্রেন দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পৌঁছে যাবে। তবে আরও বাড়তি দুই মিনিট সময় হাতে রেখে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলছে- উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এ দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগবে প্রায় ৩৮ মিনিট।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পটি ‘এমআরটি লাইন-৬ রুট’ নামে পরিচিত। এটি সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে। রেলপথের পুরোটাই উড়াল (এলিভেটেড)। রেলপথে বিদ্যুৎচালিত ট্রেনগুলো উভয় দিকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। দিনের ব্যস্ততম সময়ে প্রতি সাড়ে চার মিনিট পর পর প্রতিটি স্টেশনের উভয়দিকে ট্রেন থামবে ।
রেলপথে ট্রেন থামবে উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মতিঝিলে। এসব স্থানে রেলস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ২৪ সেট মেট্রোরেল ট্রেন নিয়ে শুরু হবে এমআরটি লাইন-৬ এর যাত্রা। প্রতি সেট মেট্রোরেল ট্রেনে প্রাথমিকভাবে ৬টি করে কোচ থাকবে– পরে আরও দুটি কোচ যোগ করে কোচের সংখ্যা ৮টিতে উন্নীত করা হবে। ট্রেন পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে একটি অত্যাধুনিক অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার থাকবে।
যাত্রীসাধারণের সুবিধার্থে মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো হবে এলিভেটেড। টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধাদি থাকবে দোতলায় এবং ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম থাকবে তিনতলায়। প্রতিটি মেট্রোরেল স্টেশনে লিফট, চলন্তসিঁড়ি, সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরার পর্যবেক্ষণ, প্রবেশপথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিকিট সংগ্রহের মেশিনসহ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সর্বাধুনিক ব্যবস্থা থাকবে। র্যাপিড পাস কার্ড ব্যবহার করে যাত্রীরা ট্রেনে চলতে পারবেন। ট্রেনের কোচগুলো হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। যাত্রা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য সম্বলিত ডিসপ্লে-প্যানেল থাকবে সংশ্লিষ্ট স্থানে। হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী যাত্রীদের জন্য প্রতিটি ট্রেনের কোচগুলোয় থাকবে নির্ধারিত স্থান। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে মেট্রোরেলের থাকবে নিজস্ব বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা।
মেট্রোরেলের কম্পন নিয়ন্ত্রণের জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য শব্দ নিরোধক দেয়াল থাকবে।