সোলাইমানিকে হত্যা করে আইন লঙ্ঘন করেছে যুক্তরাষ্ট্র: জাতিসংঘ

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ জেনারেল কাশেম সোলাইমানি শুধু ইরানের নয়, পুরো আরব বিশ্বের বীর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ক্যারিশম্যাটিক কমান্ডার হিসেবে সারা পৃথিবীতে পরিচিতি পেয়েছিলেন। তার বুদ্ধি-সাহস, নেতৃত্বের গুণাবলী ও যুদ্ধক্ষেত্রের বিচক্ষণতার গল্প ছিলো মানুষের মুখে মুখে।

পৃথিবীর ‘এক নম্বর’ জেনারেল হিসেবে বিবেচিত সোলাইমানির নাম ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে দক্ষ গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও মোসাদের হিট লিস্টের ‘এক নম্বরে’। ৩ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে মার্কিন বাহিনী দ্বারা ড্রোন হা’মলা চালিয়ে ইরানের শীর্ষ ইরানী জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং নয় জনকে হ’ত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্তে এই কথা বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ‘এই হ’ত্যা’কা’ণ্ডকে ন্যায়সঙ্গত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার বি’রু’দ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি বিচারবহির্ভূত এবং স্বেচ্ছাচারিত মৃ’ত্যু’দ’ণ্ড। এটি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ ঘোষণার লঙ্ঘন বলে তিনি জানিয়েছেন।

সোলাইমানি হত্যার কী প্রতিশোধ নেবে ...

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে বৃহস্পতিবার ক্যালামার্ডের প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে। এতে তিনি বলেছেন, সোলাইমানি মার্কিন স্বার্থে একটি আঘাত হানতে চেয়েছিলেন বলেও ওয়াশিংটন প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ক্যালামার্ডের প্রতিবেদনের কিছু উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হয়েছে, মেজর জেনারেল সোলায়মানি ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের সামরিক কৌশল ও পদক্ষেপের নীতি-নির্ধারণী ভূমিকা পালন করতেন। কিন্তু মার্কিন দাবির বিপরীতে তিনি (মানুষের) জীবনের জন্য অত্যাসন্ন কোনো হু’মকি ছিলেন না। কাজেই যুক্তরাষ্ট্র তাকে হ’ত্যা করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।

জাতিসংঘের এই বিশেষ প্রতিবেদকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আ’ত্মরক্ষার অজুহাতে তৃতীয় কোনো দেশে আরেকটি দেশের সেনা কমান্ডারের ওপর এই প্রথম এ ধরনের পরিকল্পিত হ’ত্যা’কা’ণ্ড চালানো হয়েছে।

অথচ জাতিসংঘ ঘোষণার ঘোরতর লঙ্ঘন সত্ত্বেও জেনারেল সোলাইমানি এবং তার সঙ্গে থাকা একজন পদস্থ ইরাকি সেনা কমান্ডারকে হ’ত্যা’র দায়ে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা আমেরিকাকে শা’স্তি দেয়ার পদক্ষেপ নেয়নি।

প্রতিবেদনে বিশ্বের সরকারগুলোর পক্ষ থেকে পরিকল্পিত হ’ত্যা’কা’ণ্ড চালানোর জন্য সামরিক ড্রোন ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ড্রোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন তৈরি ও তা ক’ঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

গত ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার সময় তাকে বহনকারী গাড়ির বহরে ড্রো’ন হা’ম’লা চালায় ইরাকে মোতায়েন স’ন্ত্রা’সী মার্কিন সেনাবাহিনী।

হা’ম’লা’য় জেনারেল সোলাইমানি এবং ইরাকের জনপ্রিয় গণবাহিনী ‘হাশদ আশ-শাবি’র উপপ্রধান মাহদি আল মুহান্দিসসহ আরও কয়েকজন সেনা সদস্য নি’হ’ত হন। সূত্র: মিডল ইস্ট আই।

SHARE THIS ARTICLE