আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ভিসার মেয়াদ বাড়াতে পদে পদে লাঞ্ছনা আর বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে সৌদি প্রবাসীদের। গতকাল রোববার সকাল থেকে গুলশানে সৌদি কনস্যুলেটে ভিড় করতে থাকেন তারা। তবে আবেদন সরাসরি নিচ্ছে না সৌদি দূতাবাস। এজেন্সি হয়ে আবেদনের পরামর্শে সড়ক থেকে সরে যান তারা। তবে গুলশান ২ নম্বরে ভিসা প্রসেসিং কনসালটেন্সিগুলোতে যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না উল্টো দালালদের খপ্পরে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ প্রবাসীদের। এই ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খায় পুলিশ। সৌদি প্রবাসীদের অভিযোগ, দূতাবাস থেকে বলা হচ্ছে, ভিসা বাড়ানোর কাজ করবে এজেন্সি।
পরে দূতাবাস কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে গুলশান বিভাগের ডিসি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, সৌদি দূতাবাস কোনো যাত্রীর কাছ থেকে পাসপোর্ট জমা নেবে না। নির্ধারিত প্রায় ৩০টি এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
তবে, সৌদি দূতাবাসের অনুমোদিত ভিসা সার্ভিস দেয়া প্রতিষ্ঠান লামিক এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার আবু জাফর জানান, এ বিষয়ে দূতাবাস কোনো গাইড লাইন দেয়নি তাদের।
টিকিট পেতে এদিনও সৌদি এয়ারলাইন্সের কাউন্টারে উপচেপড়া ভিড় প্রবাসীদের। তবে, ৩০ সেপ্টেম্বরের পরের কোনো তারিখের টিকিট বিক্রি করেনি, বিমান। এছাড়া, সৌদি এয়ারলাইন্স ও বিমানের দুটি ফ্লাইটে সৌদি গেছেন, প্রায় ৫শ্থ প্রবাসী। কিন্তু, করোনা পজিটিভ থাকায় যেতে পারেননি একজন।
পররাষ্ট্র দফতরের ঘোষণা ছিল, রোববার থেকেই বাড়ানো হবে সৌদি ভিসার মেয়াদ। যোগাযোগ করতে হবে গুলশানের সৌদি কনস্যুলেটে। সে অনুযায়ী ভোর থেকেই দূতাবাসের সামনে ভিড় করতে থাকেন সৌদি প্রবাসীরা। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় দূতাবাসের আশপাশের সড়ক। কিন্তু সময় গড়ালেও দূতাবাসে ঢোকার অনুমতি মেলেনি। চাকরি বাঁচাতে মরিয়া প্রবাসীদের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তির পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী জানায়, দূতাবাস কোনো আবেদন গ্রহণ করবে না, আবেদন জমা দিতে হবে অনুমোদিত কনসালটেন্সিগুলোতে।
প্রবাসীরা বলছেন, চারদিন ধরে এখানে বলছে টোকেন দিবে কিন্তু দেয়ার কিছু নাই। আজকে চারদিন হয়েছে এখানে আসছি। তারা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করছে। আমরা আসছি সেখানে আকামা ও রিনিউ এর ব্যাপারে কথা বলার জন্য বা কি সিস্টেম সেটা জানার জন্য কিন্তু কোনো সমাধান পাইনি। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ আমরা যেন সৌদি যেতে পারি। এদিকে পুলিশ বলছে, সৌদি দূতাবাস তাদের অথরাইজড সেটারের মাধ্যমে তাদের ভিসা বর্ধিত করার ব্যবস্থা করেছে। এই প্রক্রিয়া সবার মেনে চলার অনুরোধ করছি। পরে নিরুপায় প্রবাসীরা যোগাযোগের চেষ্টা করে কনসালটেন্সিগুলোতে। এতেও কোনো সদুত্তর না পাওয়ায় কাজে ফেরা নিয়ে শঙ্কায় সৌদি প্রবাসীরা। প্রবাসীরা বলছে, আমাদের যে আজকে লিস্টটা ধরিয়ে দেয়া হয়েছে ওই লিস্টের মাধ্যমে যাই তাহলে বাংলাদেশি দালাল আমাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিবে। ভোর ৫টা থেকে এখন পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে হুড়াহুড়ি পাড়াপাড়ি করলাম আর কিছু করতে পারিনি। অনেক এজেন্ট এর কাছে ফোন দেয়া হয়েছে তার বলছে এরকম কোন মেসেজ আসেনি আমাদের কাছে। বিশৃঙ্খল এ পরিস্থিতির সুযোগে সক্রিয় হয়ে ওঠে দালাল চক্র। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী সামনেই নামে বেনামে কাগজ বিক্রি করতে দেখা যায় প্রবাসীদের কাছে। একজন বলছে, স্যার আমাদের ফটোকপি করার জন্য দিছে আমি কোনো টাকা নেইনি। পুলিশকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলে, আপনি যে লোকটাকে আবার বললেন নিয়ে আসার জন্য, আপনি কি জানেন এই কাগজটাতে কী আছে? সে সবার কাছ থেকে ২০ টাকা করে নিচ্ছিল, আর এ কাগজ তো অর্থহীন। এটা ১ টাকার একটা কাগজ ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কেন? তখন পুলিশ বলে আমি তাকে ধরছি এটা কেন করছে। সৌদি ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে আসা প্রবাসীরা কী করবেন, তা জানতে দূতাবাসে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।