অভিবাসী বিরোধী অভিযান: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভ

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ অভিবাসন বিরোধী তল্লাশির জেরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দেশটির অন্তত দশটি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভ দমনে টেক্সাসেও ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের গভর্নর।

এদিকে অভিবাসন বিরোধী অভিযানে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস শহর। বিক্ষুব্ধরা রাস্তায় বিক্ষোভের পাশাপাশি গাড়িতে আগুন দিয়েছে। টানা তিনদিন ধরে বিক্ষোভের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লস অ্যাঞ্জেলেসের ডাউনটাউনে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১০ জুন) টেক্সাসের অস্টিনে শতাধিক মানুষের একটি বড় দল মিছিল করে জে জে পিকল ফেডারেল ভবনের দিকে যায়। ভবনটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

টেক্সাসে এদিন বিক্ষোভকারীদের হাতে ব্যানার ও পতাকা ছিল। পুলিশের মুখোমুখি হলে তারা ‘আইসিই নিপাত যাক’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

বিবিসি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিবাসন বিরোধী তল্লাশির জেরে বিক্ষোভ হয়েছে নিউ ইয়র্কেও। সেখান থেকে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। সব মিলিয়ে, লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া, ডালাস, অস্টিন এবং সান ফ্রান্সিসকোসহ কমপক্ষে দশটি মার্কিন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

এদিকে লস অ্যাঞ্জেলেসের ডাউনটাউনে কারফিউ কার্যকর হওয়ার পর গণহারে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করতে শুরু করেছে এলএপিডি (লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ ডিপার্টমেন্ট)। গত কয়েকদিনে অন্তত ২০০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার ২৭ জন, রোববার ৪০ জন এবং সোমবার ১১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে কারফিউ জারির পরও লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের কেন্দ্রস্থলে ছোট ছোট বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

অভিবাসী বিরোধী অভিযান: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভ

সাম্প্রতিক এসব অভিযান ট্রাম্পের ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিবাসীবিরোধী অভিযানের’ পরিকল্পনার অংশ। লস অ্যাঞ্জেলেসের অধিবাসীদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি বিদেশে জন্মগ্রহণ করেছে বলে জায়গাটি এমন অভিযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

গত মে মাসের শুরুতে আইসিই জানিয়েছিল, লস অ্যাঞ্জেলেসে এক সপ্তাহব্যাপী অভিযানে ২৩৯ অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। তবে গ্রেপ্তার করা অভিবাসী ও তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানোর সংখ্যা ট্রাম্পের প্রত্যাশার তুলনায় কম ছিল। পরের মাসে হোয়াইট হাউস আইসিইকে দিনে অন্তত তিন হাজার অভিবাসীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে।

তল্লাশির অন্তর্ভুক্ত এলাকার পরিসরও বাড়িয়ে প্রশাসন এখন রেস্তোরাঁ, দোকানসহ বিভিন্ন কর্মস্থলে অভিযান চালাচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে মেরিন সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিলেও এখনও সেনাদের নামানো হয়নি। তবে একজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, শত শত মেরিন সেনা রাজ্যটি থেকে ৩০ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত সিল বিচ এলাকায় অপেক্ষা করছেন। যেকোনো সময় তাদেরকে লস অ্যাঞ্জেলেসে নিয়ে আসা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, মেরিন এবং ন্যাশনাল গার্ড সৈন্যদের গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা নেই। তারা শুধুমাত্র ফেডারেল সরকারের সম্পত্তি এবং কর্মীদের সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করবেন।

সূত্র : বিবিসি

SHARE THIS ARTICLE