
আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় চাওয়া দুই বাংলাদেশি প্রায় ১০ বছর ধরে দ্বীপরাষ্ট্র নাউরুতে বন্দিজীবন পার করছেন। এ থেকে মুক্তি পেতে মুখ সেলাই করে আমরণ অনশন শুরু করেছেন তারা। সেখান থেকে তাদের বন্দি জীবনের কথা সম্প্রতি আল জাজিরাকে জানিয়েছেন এই দুই বাংলাদেশি।
জানা গেছে, । ভুক্তভোগী এই দুই বাংলাদেশির নাম মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ কাইয়ুম। নৌকায় অস্ট্রেলিয়া যাওয়া ব্যক্তিদের ২০১৩ সাল থেকে দ্বীপে বন্দি করে রাখে অস্ট্রেলিয়া। প্রায় দেড়শ শরণার্থীকে ওই দুই দ্বীপে পাঠিয়েছে অস্ট্রেলয়া। কাউকে কাউকে আবার পাঠিয়ে দেয়া হয় পাপুয়া নিউগিনির দ্বীপেও। এই ব্যক্তিদের কখনই আশ্রয় দেবে না অস্ট্রেলিয়া।
তাদের কখন দেশে পাঠানো হবে, আসলেই পাঠানো হবে কি না বা তাদের ভাগ্যে কী ঘটছে তা এসব শরণার্থীদের কেউই এখন জানেন না।

নাউরুতে প্রায় ১০ বছর এমনভাবেই বন্দি থেকে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন দুই বাংলাদেশি। তারা সম্প্রতি নাউরুর শরণার্থী পরিষেবা ও নিরাপত্তার জন্য তৈরি প্রশাসনিক কেন্দ্রের (আরপিসি১) বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন।
ওই স্থান থেকেই হোয়াটসঅ্যাপে শফিকুল তাদের নিয়ে মেসেজে কথা বলেন আল-জাজিরার সঙ্গে। তিনি জানান, তারা নাউরুতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।
শফিকুল বলেন, ‘আমরা অনশন শুরু করেছি। আমরা আমাদের মুখ সেলাই করে নিয়েছি। খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা কথাও বলতে পারি না। আমরা যতক্ষণ না পর্যন্ত চিকিৎসা এবং স্বাধীনতা পাচ্ছি ততক্ষণ খাবার ও পানি স্পর্শ করব না।
তিনি আরও জানান, আশ্রয় নেয়ার জন্য তারা ২০১৩ সালে বাংলাদেশ থেকে আলাদাভাবে অস্ট্রেলিয়ায় যান। তাদের নৌকা অস্ট্রেলিয়ান নৌবাহিনী আটকে দেয়। এক পর্যায়ে তাদের নাউরুতে পাঠানো হয়।

সেখানকার পরিস্থিতি নিরাপদ নয় উল্লেখ করে শফিকুল বলেন, নাউরুতে, লোকজন আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করছে যে আমরা পশু, মানুষ নয়। নাউরুতে চিকিৎসা সেবা খুব খারাপ। আমরা এখানে নিরাপদ নই। নাউরুর বাসিন্দরা আমাদের পছন্দ করে না। তারা আমাদের ঘৃণা করে।’
শফিকুল যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু করেন তিন বছর আগে। কাইয়ুম এতে অংশ নেননি। তবে দুজনই এই দ্বীপ ছাড়তে চান বলে আলজাজিরাকে জানিয়েছেন।