
আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সেনা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। আগস্টেই নিজেদের সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষ করবে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যেই তালেবান দেশের প্রায় অর্ধেকের বেশি জেলার দখল নিয়ে নিয়েছে। দেশের অধিকাংশ অঞ্চলেই চলছে সংঘাত। দখল আর পাল্টা দখল চলছে দেশটির সেনাবাহিনীও তালেবানদের মধ্যে। এরই মধ্যে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তালেবানরা শুক্রবার থেকে আফগানিস্তানে নয়টি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করেছে। এ অবস্থায় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, তালেবানরা ৩০ দিনের মধ্যে কাবুলকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে।
এ অবস্থায় আফগান সরকারও অনুমান করছে ক্ষমতায় টিকিয়ে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি আচ করতে পেরে তালেবানের কাছে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে আফগান সরকার। তবে কীভাবে এই ক্ষমতা ভাগাভাগি হবে কিংবা কে কতটুকু অংশ শাসন করবে তার বিস্তারিত জানা যায়নি।
আফগান সরকারের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা অনলাইন এ তথ্য জানিয়েছে।
মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে তালেবান আফগানিস্তানের ১০টি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করেছে। তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্রুতই তারা দেশের বাকি প্রদেশগুলো দখল করবে।

এর আগে মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তালেবান ইতোমধ্যে দেশের ৬৫ শতাংশ এলাকা দখল করে ফেলেছে। আর বুধবার মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা আভাস দিয়েছেন, ৩০ দিনের মধ্যে রাজধানী কাবুল বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে তালেবান এবং সম্ভবত ৯০ দিনের মধ্যে তারা এটি দখল করে ফেলতে পারে।
যদিও কাতারের দোহায় তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে আফগান সরকারের শান্তি আলোচনা চলছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় তৃতীয় দিনের মতো আলোচনায় বসবে দুই পক্ষ।
আল-জাজিরার সাংবাদিক জানিয়েছেন, কাতারের মাধ্যমে আফগান সরকার তালেবানের কাছে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে। এ ব্যাপারে তালেবানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আমেরিকান সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে বের করে আনার সিদ্ধান্তের জন্য তিনি অনুতপ্ত নন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আফগান বাহিনীকে অবশ্যই ‘তাদের জাতির জন্য লড়াই’ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে (৯/১১) হামলার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক জোট আফগানিস্তান আক্রমণ করে। সেই সময় কাবুল নিয়ন্ত্রণকারী তালেবানরা আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দিয়েছিল।
আমেরিকান এবং মিত্র বাহিনী দ্রুত কাবুল এবং অন্যান্য প্রধান শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিন্তু তালেবান যোদ্ধাদের বিদ্রোহকে পরাজিত করার জন্য গত দুই দশক সংগ্রাম করেও সফল হয়নি।