আমার স্বামী পাপুল ষড়যন্ত্রের শিকার. এমপি সেলিনা

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম ওরফে পাপুল ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’ বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা ইসলাম। বুধবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ দাবি করেন তিনি। পাপুলের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অংশ হিসেবে এদিন সকালে স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সাংবাদিকদের সেলিনা বলেন, কুয়েতে পাপুলের প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করে। সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করে দেশের বহু শ্রমিক; কোটি কোটি টাকার রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে। ‘সেখানে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রের কারণে কুয়েতে তিনি সমস্যার সন্মুখীন হয়েছেন। মূলত পাপুল ষড়যন্ত্রের শিকার। আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এসব করা হচ্ছে।’ অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বিষয়গুলো নিয়ে দুদকের কাছে লিখিত বক্তব্য দিয়েছে।’ ‘আমাদের কোনো গোপন সম্পদ নেই, অবৈধ সম্পদও নেই। যা আছে তার বিবরণ দুদককে দিয়েছি। আমরা আইনের পক্ষে। এই তদন্তে দুদককে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’ এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে পাপুলের স্ত্রী সেলিনা এবং শ্যালিকা জেসমিন প্রধান দুদকে মুখোমুখি হন। অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দীন দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। গত ১২ জুলাই তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে নোটিশ দিয়েছিলেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা সালাহউদ্দীন। এর আগে গত ২২ জুন একই অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনের সংসদ সদস্য পাপুল, স্ত্রী সেলিনা, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক দেশি-বিদেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয় দুদক।

পাপুলের স্ত্রী ও শ্যালিকাকে জেরা ...

গত ১৭ জুন পাপুলের স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। পাশাপাশি পাপুল দেশে ফিরলে আর যেন বিদেশে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দিয়েছে দুদক। প্রসঙ্গত, গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে মানবপাচার ও অবৈধ মুদ্রাপাচারের অভিযোগে দেশটির সিআইডি এমপি পাপুলকে আটক করে। তাকে আটকের পর তদন্ত চলার মধ্যে এটিকে ‘সবচেয়ে বড়’ মানবপাচারের ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন কুয়েতের উপপ্রধানমন্ত্রী আনাস আল-সালেহ। আটকের পরদিন তার জামিন আবেদন নাকচ করে আদালত সিআইডির রিমান্ডে পাঠায়। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এই স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ১১ জন মানবপাচার ও ভিসা নবায়নের জন্য বাড়তি টাকা আদায়ের সাক্ষ্য দেয় বলে জানায় কুয়েতের গণমাধ্যম। কুয়েতে সংসদ সদস্য আটকের বিষয়টি বাংলাদেশেও বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ফলে ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে বাংলাদেশের সিআইডি। পাপুলের বিষয়ে দেশ ও দেশের বাইরে বহুমুখী অনুসন্ধান চলছে। কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বাংলাদেশের সিআইডি, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ অনুসন্ধান করছে।

SHARE THIS ARTICLE