আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন এবং আলোকসজ্জা

আইরিশ বাংলা পোস্ট ডেস্কঃ গতকাল ২৫শে মার্চ ২০২২, আয়ারল্যান্ডে প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য একটি ইতিহাস রচিত হলো। ডাবলিন শহরের, ডানলোরী রাথডাউন কাউন্টী কাউন্সিলে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসকে মহিমান্বিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা উড্ডীয়মান করা হলো। আজ থেকে ৪ দিনের জন্য বাংলাদেশের এই পতাকা কাউন্সিল বিল্ডিং এর সম্মুখে পত পত করে উড়ে গৌরবদীপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সম্মানিত করবে। একই সাথে এই উপলক্ষে কাউন্সিল বিল্ডিং লাল সবুজ রঙের আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়।

এই ঐতিহাসিক সময়ের রূপকার হিসেবে ডানলোরি কাউন্টী কাউন্সিলের বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কাউন্সিলর জনাব কাজি মোশ্তাক আহমেদ ইমনের নাম ইতিহাসের পাতায় আবার লিখিত হলো। গতকাল সন্ধ্যায় এ উপলক্ষে কাউন্সিল বিল্ডিং এর সম্মুখে এক ক্ষুদ্র আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কাউন্টী কাউন্সিলের মেয়র লেটি ম্যাকার্থি, কাউন্সিলর  কাজী মোশতাক আহমেদ, ডেনিস ও’ক্যালাহান ও মেরি ফেইন। বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সর্বজনাব ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার, নাহিদ সুলতানা, সাইয়েদা ইফফাত জাহান, শরিফা সুলতানা, ডাঃ দিমিত্রা খলিল, মামুন মীর, ডঃ নাসিম মাহমুদ, আরিফ ভুঁইয়া, মাহিদুল ইসলাম সবুজ, আব্দুর রহিম ভুঁইয়া প্রমুখ।

আলোচনায় কাউন্টী মেয়র লেটি ম্যাকার্থি কাজি আহমেদের প্রশংসা করে বলেন, ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন এবং আলোকসজ্জা আয়রাল্যান্ডে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য গৌরবের। আমরা এই দেশটিকে বহুদেশীয় মানুষের বাসস্থান হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করছি এবং আমরা সবাইকে নিয়ে একই সাথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশী। সকল বাংলাদেশীকে তিনি স্বাধীনতা দিবসের অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। কাউন্সিলর ডেনিস  ও’কালাহান বলেন, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকেই দেশটি সম্পর্কে অবগত আছেন। আজকে তিনি এই স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশীদের উদ্দীপনা দেখে আবেগাপ্লুত। মেরি ফেইন সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে, সকল বাংলাদেশীদের মূলধারার সাথে সম্পৃক্ত থাকার আহবান জানান।

 

কাউন্সিলর কাজি আহমেদ জানান, তিনি আজ নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবাণ মনে করছেন যে, আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে প্রথম একজন কাউন্সিলর হিসেবে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি জানান ইতিমধ্যে কাউন্সিলে বেশ কিছু পরিবর্তনের সূচনা করেছেন। তার উত্থাপিত একটি মাল্টি কালচারাল কমিউনিটি হল, একটি শহিদ মিনার সহ আরও কয়েকটি প্রস্তাব ইতিমধ্যে কাউন্সিলে গৃহীত হয়েছে। এখন এই সমস্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সময়ের ব্যাপার। তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে জানান যে, “আজ এই কাউন্টী কাউন্সিল বিল্ডিং এ স্বদেশের জাতীয় পতাকা এবং আলোকসজ্জার ব্যাবস্থা করতে পেরে আমি নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান মনে করছি। 

কমিউনিটির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সর্বজনাব শরিফা সুলতানা, আরিফ ভুইয়া, ডঃ নাসিম মাহমুদ, মামুন মীর এবং ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার। সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপট এবং বর্তমান অবস্থানে অর্থনৈতিক এবং স্বাস্থ্য ব্যাবস্থার অগ্রগতির কথা তুলে ধরলে মেয়র এবং স্থানীয় কাউন্সিলর বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসের কিছু যূগসুত্র তুলে ধরেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভাষা আন্দোলনের কথাও উঠে আসে, সেই সাথে আলোচিত হয় ৩০ লক্ষ শহিদের কথা।  অনুষ্ঠানের প্রান্তে উপস্থিত সকলকে সুস্বাদু কফি দিয়ে আপ্যায়ন করেন কাউন্সিলর কাজি মুশতাক আহমেদ। অনুষ্ঠানে নুসায়ের এবং নুরাজ এই দুজন শিশু উপস্থিত ছিলেন। মেয়র লেটি ম্যাকার্থি উভয় শিশুর সাথে বাক্য বিনময় করে আনন্দ প্রকাশ করেন।  

SHARE THIS ARTICLE