আল কোরআন মানবজাতির প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ

আলেমা মুশফিকা আফরাঃ পৃথিবীতে আল্লাহ মানুষের প্রতি যত অনুগ্রহ করেছেন তার মধ্যে কোরআন অন্যতম প্রধান দান। কেননা কোরআনের মাধ্যমে মানুষ কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর পরিচয় লাভ করবে এবং সঠিক পথে চলতে পারবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘ইচ্ছা করলে আমি তোমাদের প্রতি যে ওহি (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি তা অবশ্যই প্রত্যাহার করে করতে পারতাম। তাহলে এ বিষয়ে তুমি আমার বিরুদ্ধে কোনো কর্মবিধায়ক পেতে না। এ প্রত্যাহার না করা আপনার পালনকর্তার বিরাট অনুগ্রহ, নিশ্চয়ই আপনার প্রতি তাঁর করুণা বিরাট।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৮৬-৮৭)

উল্লিখিত আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ কোরআনকে তার বিশেষ অনুগ্রহ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আল্লাহর অনুগ্রহ যে তিনি আমাদের ওপর রহমত বহাল রেখেছেন, তা প্রত্যাহার করেননি।

কোরআনের প্রতি অমনোযোগ কিয়ামতের নিদর্শন : আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, তোমরা প্রথমে তোমাদের দ্বিন থেকে যা হারাবে তা হলো আমানত এবং শেষে যা হারাবে তা হলো নামাজ। আর এই কোরআন যেন তোমাদের কাছ থেকে এইমাত্র উঠিয়ে নেওয়া হলো, কোনো একদিন সকাল হলে তোমরা দেখবে তোমাদের কাছে তাঁর কিছুই নেই। সহসাই এমন হবে যে মানুষ নামাজ পড়বে; কিন্তু তাদের ঈমান থাকবে না। অতঃপর এক ব্যক্তি বলল, এরূপ কিভাবে হবে হে আবু আবদুর রহমান! অথচ তা আমরা আমাদের অন্তরে প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছি এবং আমরা তা কাগজে লিখিত কপি আকারে সংরক্ষণ করেছি, আমরা তা আমাদের সন্তানদের শেখাব, আমাদের সন্তানরা তাদের সন্তানদের শেখাবে এভাবে কিয়ামত পর্যন্ত চলবে। তিনি বলেন, তা রাতে কার্যকর করা হবে। অতঃপর কাগজে লিখিত কপি এবং তোমাদের অন্তরে যা রয়েছে তা উঠিয়ে নেওয়া হবে। মানুষ সকালে পশুর মতো হয়ে উঠবে।  এরপর তিনি উল্লিখিত আয়াত তিলাওয়াত করেন। (মুসান্নেফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ৩৮৭৪০)

কিয়ামতের আগে কোরআন উঠিয়ে নেওয়া হবে : আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, শামের দিক থেকে লাল ঝোড়ো বাতাস মানুষের ওপর আঘাত আনবে। ফলে (কিয়ামতের আগে) মানুষের কাছে কোরআনুল কারিমের কোনো কপি থাকবে না বা কারো অন্তরেও কোরআনের একটি আয়াতও থাকবে না। অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করেন—‘আমি ইচ্ছা করলে আপনার কাছে ওহির মাধ্যমে যা প্রেরণ করেছি তা অবশ্যই প্রত্যাহার করতে পারতাম।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৯/৭৮)

প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর রহমত ছাড়া গোটা সৃষ্টির অস্তিত্ব টিকতে পারে না। প্রতিটি সৃষ্টিই টিকে থাকার জন্য কোনো না কোনোভাবে আল্লাহর রহমতের মুখাপেক্ষী। ইহজগতে মানুষ যেমন সব ক্ষেত্রে আল্লাহর দয়ার মুখাপেক্ষী, তেমনি পরজগতেও তারা আল্লাহর রহমত ছাড়া জান্নাতে যেতে পারবে না। সুতরাং তালাশ করা প্রয়োজন কিভাবে আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়।

SHARE THIS ARTICLE