আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে কার্যক্রম পরিচালন করা দুই সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে অর্থ পাঠানোর অনুমোদন পেয়েছে রেনাটা লিমিটেড। এর মধ্যে আয়ারল্যান্ডে কার্যক্রম পরিচালনা করা রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যালসের জন্য ২০ লাখ ডলার ও যুক্তরাজ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করা রেনাটা লিমিটেডের জন্য ৫০ লাখ ডলার পাঠাবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের কোম্পানিটি। রফতানি প্রত্যাবাসন কোটার (ইআরকিউ) আওতায় এসব অর্থ পাঠাতে কোম্পানিটিকে অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।
এর আগে গত রোববার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সাবসিডিয়ারি দুই কোম্পানি একীভূতকরণের সিদ্ধান্তের কথা জানায় রেনাটা লিমিটেড। কোম্পানি দুটি হলো রেনাটা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও পুর্নভা লিমিটেড। হাইকোর্ট ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে কোম্পানি দুটির সব সম্পদ ও দায় গ্রহণের মাধ্যমে এ একীভূতকরণে সম্পন্ন করা হবে। ইতোমধ্যে খসড়া একীভূতকরণ স্কিমে অনুমোদন দিয়েছে রেনাটার পরিচালনা পর্ষদ।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) রেনাটার সমন্বিত আয় হয়েছে ১ হাজার ৫৪২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে সমন্বিত আয় ছিল ১ হাজার ৪৫৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এ হিসাবে প্রথমার্ধে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৬ শতাংশ। এ সময়ে কর-পরবর্তী সমন্বিত নিট মুনাফা হয়েছে ২৭৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে সমন্বিত নিট মুনাফা ছিল ২৪০ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৫ টাকা ৬২ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২২ টাকা ৩৯ পয়সা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৫২ টাকা ৩৬ পয়সায়।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) রেনাটার সমন্বিত আয় হয়েছে ৭৬৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত আয় ছিল ৭১৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ১১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটি সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১২ টাকা ৭২ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১০ টাকা ৮৪ পয়সা।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে রেনাটা। এর মধ্যে ১৪৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৫১ টাকা ৯৪ পয়সা। যেখানে এর আগের হিসাব বছরে সমন্বিত ইপিএস ছিল ৪১ টাকা ১৭ পয়সা। এর আগের ২০১৯-২০ হিসাব বছরের কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৩০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।
১৯৭৯ সালে পুঁজিবাজারে আসা রেনাটা লিমিটেড ১৯৭২ সালে মার্কিন ওষুধ জায়ান্ট ফাইজারের একটি কোম্পানি হিসেবে বাংলাদেশে যাত্রা করে। ১৯৯৩ সালে ফাইজার স্থানীয় শেয়ারহোল্ডারদের কাছে তাদের মালিকানা বিক্রি করে চলে যায় এবং কোম্পানির নাম ফাইজার (বাংলাদেশ) লিমিটেডের বদলে হয় রেনাটা লিমিটেড। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোম্পানিটির ওষুধ রফতানি হচ্ছে। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ১০৭ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ২ হাজার ৪৫৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১০ কোটি ৭১ লাখ ৯২ হাজার ৯৮৩টি। এর মধ্যে ৫১ দশমিক ২৭ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ২২ দশমিক ৮৮ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
ডিএসইতে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ১ হাজার ৩৬০ টাকা ৪০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৮৫ টাকা থেকে সর্বনিম্ন ১ হাজার ১৪৮ টাকায় লেনদেন হয়েছে।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীর ভিত্তিতে কোম্পানিটির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ২৬ দশমিক ১৯, অনিরীক্ষিত প্রান্তিক আর্থিক বিবরণীর ভিত্তিতে যা ২৬ দশমিক ৫৫।