আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ একজন স্ত্রী যেমন স্বামী ছাড়া পরিপূর্ণ নন তেমনি একজন স্বামীও স্ত্রী ছাড়া পরিপূর্ণ নন। সৃষ্টিগতভাবেই আল্লাহ মহান এদের একজনকে অপরজনের সহায়ক এবং মুখাপেক্ষী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। একজন আদম দ্বারা কখনোই পরিপূর্ণতা লাভ করত না এই ধরাধাম। একজন হাওয়ার আগমন ঘটিয়েছিলেন তাই আল্লাহ মহান। একজন স্ত্রীর দায়িত্বে স্বামীর যেমন কিছু হক বা অধিকার রয়েছে, একজন স্বামীর দায়িত্বেও তেমনি স্ত্রীর কিছু হক বা অধিকার রয়েছে।
স্ত্রী স্বামীরই অংশ: সূরা নিসার যে আয়াতটি বিবাহের খোতবায় তেলাওয়াত করা হয়, সে আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, দেখ! তুমি ও তোমার স্ত্রীর মাঝে জন্মগতভাবে কোনো পার্থক্য নেই। আল্লাহ্পাক হাওয়া আলাইহাস সালামকে আদম আলাইহিস সালাম থেকে সৃষ্টি করেছেন। তাই মহিলা পুরুষের অংশ। তোমার শরীরের যে কোনো স্থানে আঘাত লাগলে তুমি কষ্ট পাও। আঘাত যেন না লাগে, সে ব্যবস্থা কর। সে কারণে তোমার স্ত্রীর প্রতিও লক্ষ রাখবে, সে-ও তোমার শরীরের একটি অংশ। ইজাব কবুলের মাধ্যমে সে তোমার কাছে এসেছে, তুমি তোমার শরীরের সঙ্গে যেমন ব্যবহার কর, স্ত্রীর সঙ্গেও সেরূপ ব্যবহার কর। তুমি স্ত্রীর কাছ থেকে যেমন মহব্বতপূর্ণ মুলায়েম ও ভক্তিপূর্ণ কথা আশা কর, স্ত্রীর সঙ্গে তুমিও এমন কথা বল যেন তোমার কথা থেকে মহব্বত ও ভালোবাসা টপকে পড়ে। অন্য এক আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, ইসলামের প্রতিটি হুকুম স্বামী-স্ত্রী উভয়ই মেনে চলবে।
মহব্বত ও ভালোবাসার কারণে সীমা লক্সঘন করতে পারবে না এবং ঘৃণার কারণেও সীমা লক্সঘন করতে পারবে না। মোটকথা স্বামী-স্ত্রী একে অপরের অঙ্গস্বরূপ। সুতরাং একে অপরের হকের প্রতি লক্ষ রাখবে, তাতেই দাম্পত্যজীবন সুখের হবে। পুরুষদেরকে মহিলাদের হক আদায় করতে হবে। মহিলা বলতে শুধু স্ত্রী নয়। স্ত্রীর হক তো আছেই, স্ত্রীর ওপর স্বামীর যেসব হক রয়েছে, তারচেয়ে বেশি হক রয়েছে স্বামীর ওপর স্ত্রীর। স্বামী আগে স্ত্রীর হক আদায় করবে, তারপর স্ত্রী স্বামীর হক আদায় করবে। অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, স্বামী স্ত্রীর হক আদায় করলেই স্ত্রী স্বামীর হক আদায় করে। এমনিভাবে পিতা-মাতার ওপরও মেয়েদের হক রয়েছে।
কিন্তু পিতা-মাতা তা যথাযথভাবে আদায় করে না। বিশেষ করে মীরাসের ব্যাপারে একেবারেই সীমা লক্সঘন করে থাকে। মৃত্যুর সময় সব অর্থ-সম্পদ ঘরবাড়ি সবই ছেলেদেরকে লিখে দেয়; মেয়েদের কিছুই দেয় না। এটি জঘন্যতম অপরাধ। আল্লাহপাক এটি ক্ষমা করবেন না। জনৈক সাহাবি একদিন তার এক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে বললেন, হুজুর! আমি দু’টি বিবাহ করেছি, এ হলো আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। আমি এখন বৃদ্ধ হয়ে গেছি, কোন সময় আল্লাহর ডাক এসে যায় জানা নেই। কাজেই এ ছেলেকে আমি কিছু অতিরিক্ত সম্পদ দিতে চাই।