আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ কক্সবাজার ভ্রমণে আসা স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে এক পর্যটক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাতে দু’দফা ধর্ষণের শিকার হয় ওই গৃহবধূ। প্রথমবার পর্যটন গলফ মাঠের একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে আর দ্বিতীয় বার কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের হোটেলে।
এ ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুজনকে শনাক্ত করেছে র্যাব। গতকাল কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে
ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ জানান, বুধবার সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন তারা। উঠেন শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে। সেখান থেকে বিকালে যান সৈকতের লাবণী পয়েন্টে।
সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এর জেরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার ৮ মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজি অটোরিকশায় করে কয়েকজন যুবক তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আরেকটি অটোরিকশায় তাকে তুলে নেয় তিন যুবক। পর্যটন গলফ মাঠের একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে প্রথমবার ধর্ষণ করে তারা। এরপর তাকে নেয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। সেখানে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুম বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।
এ ঘটনার পর জিয়া গেস্ট ইনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে র্যাব। এতে দেখা যায়, তিন যুবক অটোরিকশায় এক নারীকে নিয়ে আসে। দুজন ওই নারীর সঙ্গে থাকে। আরেকজন হোটেলের রুম বুকিং দেয়। সে সময় রিসিপশনে হোটেলের ব্যবস্থাপক ছোটন ছিলেন। এরপর তিন যুবক ওই নারীকে নিয়ে উপরে চলে যায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে যুবকরা বেরিয়ে গেলেও ওই নারীকে নামতে দেখা যায়নি। র্যাব জানায়, এই ফুটেজ থেকে দুজনকে শনাক্তের পর ওই নারীকে তাদের ছবি দেখানো হয়। তিনি তাদের চিনতে পেরেছেন। ধর্ষণের ঘটনায় শনাক্ত দুই যুবক হলো- কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম ও আব্দুল জব্বার জয়া। আরেকজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। র্যাব জানিয়েছে, আশিক চার মাস আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। সে ছিনতাই, মাদকসহ একাধিক মামলার আসামি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা জানান, গত বছর আশিকের নেতৃত্বে কয়েকজন এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। এই মামলায় সে জেলে ছিল। ৪ মাস আগে জেল থেকে বের হওয়ার পর তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা যায়। আশিক এলাকায় মাদক ও যৌনকর্মী সরবরাহের কাজ করে। জয়া তার অন্যতম সহযোগী।
এদিকে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার বলেন, এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।