করোনাভাইরাসের চেয়ে ভয়ংকর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা ‘অ্যাকশন প্ল্যান’

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের চেয়ে ভয়ংকর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) মোকাবিলায় পাঁচ দফা ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, এ বিপত্তি মোকাবিলায় ব্যর্থতা ভবিষ্যতে আরো মারাত্মক মহামারির সৃষ্টি করতে পারে। বিশ্ব এখন ভয়াবহ কোভিড-১৯ মহামারির মোকাবিলা করছে এবং এএমআর ভবিষ্যতে আরো মারাত্মক মহামারি হয়ে দেখা দিতে পারে।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এএমআর বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের ইন্টারেক্টিভ সংলাপে দেয়ার আগে ধারণ করা বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের ফলোআপ হিসেবে ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ সম্পর্কিত উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের রাজনৈতিক ঘোষণা’ শিরোনামে সংলাপটির আহ্বান করেন প্রেসিডেন্ট ভোলকান বোজকির।

সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া কর্ম প্রস্তাবনা হলো- স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বিশেষ মনোযোগসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উভয় স্তরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত কর্ম পরিকল্পনাসহ এএমআরে সংহত বহু-বিভাগীয় কর্ম পরিকল্পনা; ভালো উৎপাদন, পরীক্ষাগার অনুশীলন এবং নজরদারি কাঠামো; প্রযুক্তি হস্তান্তর ও মালিকানা ভাগ করে নেয়ার মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যের এবং কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিকগুলোর যথাযথ অ্যাক্সেস; এএমআর নিয়ন্ত্রণের ক্রিয়াকলাপের জন্য টেকসই অর্থায়ন; সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এএমআর মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুমান অনুযায়ী এএমআর থেকে ২০৫০ সাল নাগাদ প্রতি বছর এক কোটি মানুষ মারা যাবেন।

ডব্লিউএইচও’র পূর্বাভাসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, এএমআরের আর্থিক ক্ষতি কোটি কোটি ডলারের হবে যা খাদ্য সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ অর্জনের অগ্রগতিকে ব্যাহত করবে।

এএমআর-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি আরো জানান, তার সরকার অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স কনটেনমেন্ট-এআরসি সম্পর্কিত ছয় বছরের (২০১৭ থেকে ২০২২) জাতীয় কৌশলগত পরিকল্পনা এবং জাতীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে।

ডব্লিউএইচও’র শ্রেণিবিন্যাস নিশ্চিত করতে মানব ও প্রাণী উভয়েরই স্বাস্থ্যের জন্য পরীক্ষাগারভিত্তিক এএমআর নজরদারি নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একইভাবে ২০১৯ সাল থেকে আমরা ডব্লিউএইচও গ্লাস প্ল্যাটফর্মকে এএমআর নজরদারি ডেটা সরবরাহ করে আসছি।

এএমআরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ভবিষ্যতের মহামারি প্রতিরোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে ইঙ্গিত করেন প্রধানমন্ত্রী। এ লক্ষ্যে এএমআর বিষয়ক ২০১৫ গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান, এএমআর বিষয়ক জাতিসংঘ রাজনৈতিক ঘোষণা ২০১৬ এবং এএমআর জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে বলেও জানান তিনি।

এএমআর বিষয়ক গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপের সহ-সভাপতি শেখ হাসিনা আরো বলেন, বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী এবং আমি এএমআর’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবদান রাখতে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছি।

SHARE THIS ARTICLE