কেড়ে নেয়া হলো কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ থেকে সম্প্রতি প্রত্যাহার হওয়া বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারে ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে (সিজ) নিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

সোমবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আপিল বিভাগ কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা সিজ করেছে। পরে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হবে।

এর আগে স্থগিতাদেশ থাকার পরও ধর্ষণ মামলার এক আসামিকে জামিন দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সকালে আপিল বিভাগের এক নম্বর আদালত কক্ষে হাজির হন কামরুন্নাহার। এ সময় আইনজীবী, সাংবাদিক এবং আদালত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কাউকে আদালত কক্ষে রাখা হয়নি।

বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিচারকক্ষে গিয়ে কামরুন্নাহারকে দেখা যায়নি। বেলা সোয়া ১১টার দিকে ভার্চুয়াল আদালতে যুক্ত হলে দেখা যায়, আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ২ নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলাটির শুনানি শুরু হয়েছে।

ধর্ষণের একটি মামলায় ২০১৯ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট থেকে জামিন পান বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সাবেক অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপক আসলাম সিকদার।

এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত একই বছরের ২৫ জুন জামিন স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।

আবেদনটি আপিল বিভাগে বিচারাধীন অবস্থায় গত বছরের ২ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ ওই আসামিকে জামিন দেন। সর্বোচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের পরও আসামিকে জামিন দেওয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে আনে রাষ্ট্রপক্ষ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১২ মার্চ আপিল বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিচারককে ব্যাখ্যা জানাতে আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আসলাম সিকদারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন।

গত ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আসলাম সিকদারের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করা হয়।

মামলায় গত বছরের ১৪ অক্টোবর রায় দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক। রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসলাম সিকদারকে খালাস দেওয়া হয়।

খালাসের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করেছে। হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন।

এছাড়া রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ১১ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক কামরুন্নাহার। রায়ে পাঁচ আসামির সবাইকে খালাস দেওয়া হয়।

ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশ যেন মামলা না নেয়, সে বিষয়ে আদালত পর্যবেক্ষণ দেন। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে কামরুন্নাহারকে বিচারিক কার্যক্রম থেকে সরিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। অবশ্য লিখিত রায়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণ মামলা না নেওয়া বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ নেই।

SHARE THIS ARTICLE