খারাপ উদ্দেশ্য থাকলে পুলিশে যোগ দেবেন না : ড. বেনজীর আহমেদ

আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, যারা পুলিশে এসে দুর্নীতি করতে চান তারা চাকরি ছেড়ে দেন। এর চেয়ে স্পষ্ট উচ্চারণ আর কী হতে পারে। অন্য কে, কোথায়, কী করল বাংলাদেশের মানুষ সেগুলো করে না। কিন্তু পুলিশ বাহিনীর কেউ দুর্নীতি করবে এটা বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করে না। দুর্নীতির জন্য পুলিশ বাহিনী না। যারা ভবিষ্যতে পুলিশে আসবেন বলে ভাবছেন, তাদের বলব, আপনার মনে যদি কোনো খারাপ উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে আমাদের এখানে আসবেন না, অন্য জায়গায় যান।

গতকাল মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ পুলিশে সর্বাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার ‘টেকটিক্যাল বেল্ট’ সংযোজনের উদ্বোধন করেন আইজিপি।

পুলিশের সর্বোচ্চ এই কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহার নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। পুলিশে দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা জয়ী হব। থানায় বসে হত্যাকা-ের পরিকল্পনা হয় এমন শিরোনামে বেশ কিছু সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, তাহলে কি থানা নিরাপদ নয়? সাংবাদিকদের করা এমন এক প্রশ্নের জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, থানা কোনো হত্যাকা-ের পরিকল্পনা কেন্দ্র হতে পারে না। হবে না। এটাই আমরা বলতে পারি। থানা হচ্ছে মানুষের শান্তি ও জীবন রক্ষা করার জায়গা, এর জন্য কাজ করবে থানা। যদিও থানা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তবে আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি।

অন্য আরেকটি প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, সমপ্রতি ভাস্কর্য ইস্যুতে কোনো মহল যদি জল ঘোলা করার চেষ্টা করে, আমরা সেটা করতে দেব না। আমরা জল পরিষ্কার করে দেব। এর আগে সর্বাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার ‘টেকটিক্যাল বেল্ট’ উদ্বোধন করেন আইজিপি। টেকটিক্যাল বেল্টের মূল সস্নোগান হলো ‘হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং’ মানে হাত খালি রাখা। এতে পুলিশের কাজে গতি আসবে, মনোবলও বাড়বে। একই সঙ্গে পুলিশকে দেখতেও আরো আধুনিক ও যুগোপযোগী লাগবে। ছয় চেম্বারের আধুনিক এই ট্যাকটিক্যাল বেল্টেই থাকবে পিস্তল, হ্যান্ডকাফ, অতিরিক্ত ম্যাগাজিন, এক্সপেন্ডেবেল ব্যাটন, পানির পট, টর্চ লাইট ও ওয়?্যারলেস। এতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের হাত থাকবে সম্পূর্ণ খালি।

এ বিষয়ে আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, উন্নত বিশ্বে রুটিন ডিউটিতে পুলিশ ভারি অস্ত্র ব্যবহার করে না। এখন থেকে আমরাও সেই বিষয়টি প্রচলন করতে চাই। প্রথমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এটি ব্যবহার করব। এরপর ধাপে ধাপে সবক্ষেত্রে এটির প্রচলন করা হবে। আশা করছি আগামী এক মাসের মধ্যে ডিএমপি ও সিএমপি তাদের সদস্যদের নতুন ধারার সঙ্গে যুক্ত করতে পারবে। এর ফলে পুলিশ সদস্যরা কোনো ধরনের অস্বস্তি ছাড়াই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমরা চাই না ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ এক হাতে ওয়্যারলেস ধরে থাকুক, এক হাত অকুপাইড হয়ে থাকুক। নতুন গিয়ার সংযোজনের ফলে ওয়্যারলেস চলে যাবে বেল্টে। কাঁধে সংযোজিত মাইক্রোফোনের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যরা ওয়্যারলেস ব্যবহার করতে পারবেন।

এক পুলিশ সদস্যের দায়িত্ব পালনকালে যেসব সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়, তার সবই এই অপারেশন গিয়ারের সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে। টেকটিক্যাল বেল্টের সঙ্গে থাই হোলস্টার যুক্ত করে সেখানে স্মল আর্মস রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বেল্টের সঙ্গে এক্সপ্যান্ডেবল ব্যাটন, টর্চলাইট, হ্যান্ডকাফ ও পানির বোতল রাখার সুযোগ রয়েছে। জরুরি মুহূর্তে দ্রুত মেসেজ আদানপ্রদান নিশ্চিত করতে ওয়?্যারলেস সেটের সঙ্গে একটি মাইক্রোফোন জুড়ে দেয়া হয়েছে। এতে করে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যরা সেট মুখের কাছে না এনেই মেসেজ আদান-প্রদান করতে পারবেন।

নতুন এই অপারেশন গিয়ার চালু করায় পুলিশ সদস্যদের আগের মতো কাঁধে বা হাতে করে অস্ত্র বহন করতে হবে না। হাত ফাঁকা থাকায় জনগণের যেকোনো প্রয়োজনে দুই হাত ব্যবহার করেই সহযোগিতার জন্য এগিয়ে যেতে পারবেন পুলিশ সদস্যরা।

SHARE THIS ARTICLE