আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বলে দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিনা রহমান। তিনি বলেন, আজকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তার যে রোগ, তা চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠাতে হবে। তা না হলে তার চিকিৎসা হবে না। আজকে তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
গতকাল সোমবার (১৩ জুন) বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনের এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে মহিলা দল। অনুষ্ঠান চলাকালে মহিলা দলের একজন নেত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মানববন্ধন শেষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ থেকে মহিলা দলের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে পুলিশ বাধায় তা বেশি দূর এগুতে পারেনি।
কেন আজকে খালেদা জিয়ার এই অবস্থা? এমন প্রশ্ন রেখে সেলিমা রহমান বলেন, কারণ বর্তমান অবৈধ সরকার, যারা দিনের ভোট রাতে করে, প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা জানেন, খালেদা জিয়া যদি সুস্থ অবস্থায় বাইরে আসে, তখন কোটি লোকের সমাবেশ তার পেছনে দৌড়াবে। তাই আজকে এই সরকার তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সন্দেহ করেছিলাম, যখন খালেদা জিয়া জেলে ছিলেন, তখন বলেছিলাম তাকে সরকার তিলে-তিলে মেরে ফেলবে। আজকে দেখতে পারছি, সেই কথার সত্যতা। তা না হলে একজন প্রধানমন্ত্রী কখন আরেকজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সমন্ধে বলতে পারেন না, তাকে পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দেবো। এটা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে। আমরা রাজনৈতিক শিষ্টাচার মানি বলে অনেক কথা বলি না।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে সারা দেশের অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেলিমা রহমান বলেন, কেন আজকে এতো ধুম-ধাম করা হচ্ছে। সীতাকুণ্ডে আগুনে যখন মানুষ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে মারা গেছেন। তাদের জন্য তো কোনো জবাবহিদিতা নেই। তাদের জন্য কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নিয়ে ধুম-ধাম করছেন। আর সাধারণ জনগণ প্রাণে মারা যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে দেশে দুই আইন চলছে। আওয়ামী লীগের নেতা হাজী সেলিম চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তিনি আইন মেনে গেছেন। আমি জানতে চাই, কোন আইনের কারণে খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে না পাঠানো হলে জনগণ মাঠে নামবেন। তখন আপনার পায়ের নিচের মাটি থাকবে না।
অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর উপলক্ষে ৬৪ জেলায় অনুষ্ঠান করছেন। কার টাকায় এই অনুষ্ঠান করছেন। আপনি উল্লাস করছেন, আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। তিনি চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না। তিনি পায়ে হেঁটে জেলে গেলেন, আর হুইল চেয়ারে করে ফিরলেন। আপনি খাবারের মধ্যে কি বিষ মিষিয়েছেন, এটাই মানুষের মুখে-মুখে প্রশ্ন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি কারও কাছে মাথা নত করেন না। আমি ছোট একটি কথা বলছি, সেটি হলো ভারতের একটি রাজনৈতিক দলের দুই জন নেতা আমাদের হযরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর তো কোনো দলের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ার দরকার ছিল না, ভারতের বিরুদ্ধেও না। আপনি শুধু ওই জন নেতা কটূক্তি করেছেন তার নিন্দা করতেন, বিজেপি যে ওই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন ধন্যবাদও জানাতে পারতেন। কিন্তু ওইটুকু সাহসও আপনার নেই। আপনার মাথা ১৭০ ডিগ্রি নতজানু।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।