গৃহকর্মী হোক পরিবারের সহকর্মী

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে গৃহকর্মী নিয়োগের সব নিয়ম। গৃহকর্মীর বেতন থেকে শুরু করে থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা, বিনোদন সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হয়েছে। 

নগরে কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ফলে গৃহকর্মীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু এ গৃহকর্মী নিয়ে আমাদের সমাজে নানা ধরনের ঘটনা ঘটছে। গৃহকর্তার অমানবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনেক গৃহকর্মী, এমন খবর প্রায় দেখা যায়। আবার যে এখনো শিশু, তাকে দিয়েও অনেক গৃহকর্তী তার ঘরের ভারী ভারী কাজ করিয়ে নেন, এমন খবরও দেখতে পাই আমরা।

গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি কি ফাইলেই থাকবে? | প্রথম আলো

কিন্তু গৃহকর্মী বলেই কী তাকে দিয়ে সব কাজ করাতে হবে? নাকি গৃহকর্মী বলে তার কাজের কোনো নিয়মনীতি থাকবে না? ব্যাপারটি মোটেই এমন নয়। তথাপি প্রায় এমন খবর আমাদের ভাবায়-কাঁদায়। আসলে গৃহকর্মীকে কেবল কাজের লোক না ভেবে নিজের বা নিজেদের কিংবা পরিবারের সহকর্মী বা সহযোগী ভাবলেই এর সমাধান হতে পারে। আর এমনটা ভাবলে ‘গৃহকর্ত্রী কর্তৃক গৃহকর্মী’ নির্যাতিত এমন খবর আমাদের আর পড়তে হবে না।

গৃহকর্মী হোক পরিবারের সহকর্মী

গৃহকর্মী নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’ প্রণয়ন করেছে। এতে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী (আইএলও) গৃহকর্মী মূলত ‘শোভন’ কাজ করবে। অর্থাৎ হালকা ধরনের কাজ করবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ভাষ্য অনুযায়ী শ্রমিকের কাজের সময় ৮ ঘণ্টা হবে। অবশ্য শিশু-কিশোরদের হালকা কাজের নিয়ম থাকলেও অনেক গৃহকর্তা বা কর্ত্রী ভারী ভারী কাজও করিয়ে নেন। সাধারণত দুই ধরনের গৃহকর্মী বাসাবাড়িতে কাজ করেন। একদল আছেন যাদের আমরা ‘ছুটা বুয়া বলে’ ডাকি। তারা মূলত খণ্ডকালীন কাজ করেন। তারা অল্প সময়ের জন্য আসেন ও কাজ শেষে আবার চলে যান। আর একদল আছেন সার্বক্ষণিক কাজ করেন। তারা সব সময়ই বাসায় থাকেন ও প্রয়োজনীয় কাজ করেন।

গৃহকর্মী মানে কিন্তু দাস নয় | The Daily Star Bangla

কিন্তু এ কাজের ক্ষেত্রে অনেক গৃহকর্তা বা কর্ত্রী শ্রম আইনের নিয়ম মানেন না বলে দেখা যায়। যেখানে একজন শ্রমিকের সারা দিনে মূল কাজের সময় আট ঘণ্টা। সেখানে যাদের আমরা ‘ছুটা বুয়া’ বলে ডাকি, তারাও অনেক সময় এর চেয়ে বেশি কাজ করেন। আর যারা সার্বক্ষণিক কাজ করেন তাদের কথা তো বলারই অপেক্ষা রাখে না। সে জন্যই নীতিমালায় বলা হয়েছে, যারা সার্বক্ষণিক কাজ করবেন তাদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম, বিনোদনের সুযোগ, ন্যায্য পারিশ্রমিক ও সে সঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার এবং নিরাপদ থাকার জায়গা দিতে হবে। অন্যদিকে যারা খণ্ডকালীন কাজ করবেন তাদের বেলাও পূর্ণ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।

গৃহকর্মী নীতিমালা হয়েছে আইন হওয়া জরুরি

আরেকটা কথা, সার্বক্ষণিক আছেন বলেই গৃহকর্মীকে দিয়ে ২৪ ঘণ্টাই কাজ করাতে হবে এমনটা ভাবারও অবকাশ নেই। আসলে যে মানুষটি টাকার জন্য বা সমাজিক মর্যাদা নিয়ে বাঁচার জন্য আপনার বাসায় কাজ করছেন, তাকে যদি আপনি আপনার কাছের মানুষ, পরিবারের মানুষ বা স্বজন মনে করেন, তাহলেই দেখা যাবে গৃহকর্মীরা ভালো আছেন।

SHARE THIS ARTICLE