ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে বাংলাদেশের উপকূলের এলাকা লণ্ডভণ্ড মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

,

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে বাংলাদেশের উপকূলের বেশ কিছু এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়েছে। জলোচ্ছ্বাস ও বাধ ভেঙে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কেন্দ্র সাতক্ষীরার খুব কাছ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অতিক্রম করছে। সাতক্ষীরা শহরে রাত বাড়ার সাথে সাথে ঝড়ের গতিবেগও কমতে থাকে। যদিও বিকেল থেকেই আম্ফানের ঝড়ো বাতাস সাতক্ষীরা-সুন্দরবন এলাকায় প্রবেশ করে।

এদিকে সাগরের নিকটবর্তী এলাকাগুলোতে এরইমধ্যে ৫ থেকে ৭ ফুট জোয়ার হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর আশঙ্কা করেছে, রাতে উপকূলীয় জেলাগুলোতে নিম্নাঞ্চলগুলোতে জোয়ারের সময় পানি ১৫ ফুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত মোট ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ মধ্যে যশোরের চৌগাছায় গাছ চাপা পড়ে মা ও মেয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সাতক্ষীরায় আম গাছের ডাল ভেঙে কহিনুর বেগম (৪০) নামে একজন মারা গেছেন। তার বাড়ি সদর উপজেলার কামার নগর গ্রামে বাড়ি । এছাড়াও পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ সময় অনেক মাছের ঘের ভেঙে বিপুল পরিমাণ মাছ চলে যায়।
গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি এলাকায় ঝড়ে গাছের ডাল ভেঙে এর নিচে চাপা পড়ে রাসেদ নামে ৬ বছরের একটি শিশু। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। সাগর উত্তাল থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগরের নীলডুমুর খেয়াঘাটের ঘরবাড়ি। ছবি: তমজিদ মল্লিক

তাতে আরও বলা হয়েছে, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বরমহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় এবং দ্বিতীয় পক্ষের চাঁদের সময়ের শেষ দিনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

SHARE THIS ARTICLE