আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ চট্রগ্রামের বৃহত্তম মাছের আড়ত ‘ফিশারি ঘাটে’ এবার রূপালী ইলিশের ব্যাপক আমদানিতে জেলেদের মাঝে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ’ ও লইট্ট্যাসহ নানা জাতের মাছ।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা লাভলী ফারহানা জানান, দীর্ঘ ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার পর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা শুরু করেছে চট্টগ্রামের জেলেরা।এবার বিপুল পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেদের মুখে হাসি আর আনন্দ। চট্রগ্রামের বৃহত্তম মাছের আড়ত ‘ফিশারি ঘাটে’ এখন রূপালী ইলিশের ব্যাপক আমদানিতে সবাই খুব আনিন্দত।
কারণ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও দুই মাস সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকার কারণে কর্মহীন হয়ে অর্থ সঙ্কটে পড়া জেলেরা এখন স্বপ্ন দেখছে রূপালি ইলিশে তাদের অভাব ঘুচানোর। আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রামের ফিশারি ঘাটে প্রায় ৫৫টি ইলিশ ও লইট্ট্যা বোঝাই ট্রলার নোঙ্গর করে। এরপর থেকেই দুই মাসের নীরবতা ভেঙ্গে প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠে পাইকারি মাছের আড়ত ফিশারি ঘাট।
গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়। নিষেধাজ্ঞা শেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের প্রায় সাত শতাধিক জেলে ট্রলার নিয়ে সাগরে রওনা দেন রূপালী ইলিশসহ বিভিন্ন জাতের সামুদ্রিক মাছ ধরতে। এরমধ্যে কিছু ট্রলার শনিবার সকালে ফিশারি ঘাটে ফিরে এসেছে।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা আবার সাগরে মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এবার আমাদের অবরোধ ফলপ্রসূ হয়েছে। আগামীতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। ফিশারি ঘাটের জেলেরা জানান, ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজের প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে। সাথে প্রচুর পরিমাণ লইট্ট্যা মাছও ধরা পড়েছে জেলেদের জালে।
চট্টগ্রাম ফিশারি ঘাটের সোনালি যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আলী জানান, গভীর সমুদ্র থেকে ফেরত আসা ইলিশ বোঝাই ট্রলার নিয়ে এখন ব্যস্ত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে বড় মাছের আড়ত ফিশারিঘাট। নিরবতা কাটিয়ে সরব হয়ে উঠেছে ফিশারিঘাট ও কর্ণফুলি নদী তীরবর্তী জেলেপাড়া গুলো।
তিনি জানান, নগরীর ফিশারিঘাট, কাট্টলি এলাকার সমুদ্র তীর এবং আনন্দবাজার এলাকায় জেলেদের কাছ থেকে এক কেজি ওজনের প্রতি মণ ইলিশ কেনা হচ্ছে ২০ হাজার টাকা দামে। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ ইলিশ ১৮ হাজার, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ ১৪ হাজার টাকায় এবং এর চেয়ে ছোট ইলিশ প্রতি মণ ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কিন্তু এসব ইলিশ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। প্রতি কেজি ১১শ’ থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে এসব ইলিশ। আড়তে বড়, মাঝারি ও ছোট সাইজের লইট্ট্যা মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে। মাইট্টা মাছ কেজি প্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চইক্ক্যা মাছ কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয় ফিশারি ঘাটে।
জেলে মোবারক হোসেন জানান, মার্চ মাসের শেষের দিকে করোনা ভাইরাসের কারণে জেলেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে আবার মাছ ধরতে পেরে আমরা খুশি। প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সূত্র : বাসস