আইরিশ বাংলা পোস্ট ডেস্কঃ ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার (ঘণ্টায় ৩৭৩ মাইল) বেগে চলতে পারে এমন একটি বুলেট ট্রেন চীনের কিংডাওতে উদ্বোধন করা হয়েছে। এই ট্রেনের নাম ম্যাগলেভ ট্রেন দেয়া হয়েছে। চীনের সরকারি সংস্থা রেলওয়ে রোলিং স্টক কর্পোরেশন (RSCC) দ্বারা তৈরি এই ট্রেন বর্তমান বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন হিসাবে বিবেচিত।
"ম্যাগনেটিক লেভিটেশন" শব্দ দুটিকে সংক্ষিপ্ত করে এই ট্রেনের নাম "ম্যাগলেভ" রাখা হয়েছে। ট্রেনটি এক ধরনের বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় শক্তির বলে তার নিজস্ব ট্র্যাকের উপর এমনভাবে চলে যে তাকে ট্র্যাকের উপর "ভাসমান" বলে প্রতীয়মান হয়।
বিশ্বের দ্রুততম এই ট্রেনটি অত্যন্ত কম শব্দ দূষণ করে এবং বিশ্বের অন্যান্য দ্রুতগামী ট্রেনের চেয়ে অনেক কম রক্ষনাবেক্ষনের প্রয়োজন হয়। ২০১৯ সালে "ম্যাগলেভ" নামক এই ট্রেনের একটি প্রোটোটাইপ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছিলো। একই বছর চীন সরকার ঘোষণা দিয়েছিলো যে তারা অতিদ্রুত চীনের বড় বড় নগরের মধ্যে এই দ্রুতগামী ট্রেনের "২৪ ঘন্টা পরিবহণ সার্কল" তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
দ্রুতাগামী ট্রেন পরিচালনা চীন সরকারের একটি প্রধান অগ্রাধিকার। চীনের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল এই দেশটির প্রধান শহরগুলো অত্যন্ত কম সময়ে এবং কম ব্যয়ে ভ্রমণ করা যায় তার ব্যাবস্থা করা। বর্তমানে চীনের দ্রুতগতির ট্রেনের গড় বেগ হচ্ছে প্রতিঘন্টয়ায় ৩৫০ কিলোমিটার। নূতন ম্যাগলেভ ট্রেন পরিচালিত হলে এই গতি ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার পর্য্যন্ত পৌঁছে যাবে। বর্তমানে একটি প্লেন প্রতিঘন্টায় ৮০০-৯০০ কিলোমিটার বেগে উড়তে পারে। এই সপ্তাহে কিংডাওতে ম্যাগলেভ ট্রেনটি উদ্বোধন করার মাধ্যমে একটি ইতিহাস সৃষ্টি হলো।
বর্তমানে এই ট্রেন পরিচালনার জন্য চীনে শুধুমাত্র একটি ট্র্যাক নির্মিত হয়েছে যা সাংহাইয়ের পুডং বিমানবন্দরের সাথে শহরের লংইয়াং রোড স্টেশনটির সাথে সংযুক্ত করছে। মাত্র ৩০ কিলোমিটার (১৯ মাইল) দীর্ঘ এই পথ অতিক্রম করতে ম্যাগলভ ট্রেনের সময় লাগছে সাড়ে ৭ মিনিট, এই সময়ে ট্রেনটির গড় গতি হচ্ছে ৪৩০ কিলোমিটার। আশা করা যায় চীন দ্রুতি আরও ট্র্যাক নির্মান করে দ্রুতগামী বিশ্বে তাদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করবে।
সংবাদ সূত্রঃ সি এন এন, গ্লোবাল টাইমস, ডেকান হেরাল্ড