আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের (কপ২৬) আয়োজক শহর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে ‘সাহসী বৈশ্বিক পদক্ষেপের’ দাবি জানিয়ে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী মিছিল করেছে।
শনিবার স্যাঁতসেঁতে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় বৃষ্টির মধ্যে শহরটির কেলভিনগ্রোভ পার্ক থেকে শুরু হওয়া এ মিছিলে শিক্ষার্থী, আন্দোলনকারী ও জলবায়ু নিয়ে উদ্বিগ্ন নাগরিকরা যোগ দেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তারা হাতে হাত রেখে পার্কটি থেকে শহরের কেন্দ্রস্থল জর্জ স্কয়ারের দিকে এগিয়ে যান। তাদের হাতে হাতে লাল পতাকা ও ব্যানারগুলোতে লেখা ছিল ‘পুঁজিবাদ গ্রহটিকে হত্যা করছে’। তারুণ্যদীপ্ত এ মিছিলের বেশ কয়েকজনের হাতে হ্যান্ড মাইক ছিল, তারা জলবায়ু সংকটের জন্য কোম্পানিগুলোকে দায়ী করে এবং শূন্যে মুষ্টি ছুড়ে সমাজতন্ত্রের পক্ষে শ্লোগান দেয়।
এই মিছিলেরই আরেক অংশে স্কটল্যান্ডের জাতীয় পতাকা বাতাসে দোলাচ্ছিল কয়েক ডজন লোক। অন্যরা জলবায়ু ন্যায়বিচার ও অরক্ষিত কৃষকদের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শ্লোগান দিচ্ছিল।
এর কয়েক ব্লক দূরে কপ২৬ এর সম্মেলনে বক্তরা বৈশ্বিক উষ্ণতা কীভাবে কৃষিজমি ধ্বংস করে খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে তা জানিয়ে সতর্ক করছিলেন।
এক সপ্তাহ ধরে সরকার প্রধানদের বক্তব্যে ধাপে ধাপে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করা, শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস মিথেনের নিঃসরণ কমানো এবং বন বিনাশ হ্রাস করার প্রতিশ্রুতি এসেছে। কিন্তু জলবায়ু আন্দোলনকারীরা বলছেন, এ পর্যন্ত এই সম্মেলনে অগ্রগতি খুব কমই দেখা গেছে।
সম্মেলনের মঞ্চে অভিনেতা ইদ্রিস এলবা স্বীকার করেন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তার কথা বলার যোগ্যতা সামান্যই, কিন্তু কপ২৬ এ তিনি এসেছেন জলবায়ু বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তার প্রতি যে হুমকি তৈরি করছে তা নিয়ে সরব হতে।
একই প্যানেলে জলবায়ু ন্যায়বিচার নিয়ে প্রচারণাকারী উগান্ডার ভানেসা নাকাতে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো বন্ধ করার জন্য বিশ্বের প্রতি অনুনয় জানান, মূলত এটিই (জীবাশ্ম জ্বালানি) বিশ্বের তাপামাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
তিনি বলেন, “আমরা দেখছি বন্যা, খরা ও পঙ্গপালের কারণে খামারগুলো ভেঙে পড়ছে আর মানুষজন জীবিক হারাচ্ছে।”
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এসব দুর্যোগ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
“জলবায়ু সংকট মানে আমার দেশ ও আফ্রিকাজুড়ে অনাহার ও বহু মানুষের মৃত্যু,” বলেন নাকাতে।
জলবায়ু আলোচনায় তার প্রভাব সম্পর্কে জানাতে চাইলে নাকাতে বাইরে প্রতিবাদের উল্লেখ করে বলেন, “বাইরে যা হচ্ছে তাই পরিবর্তন, তরুণরা যা করছে, জলবায়ু ধর্মঘট সংঘটিত করছে। পরিবর্তন এখানেই ঘটছে।”