ডিপ্রেশন থেকে সহজে মুক্তির উপায়

আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ ডিপ্রেশন এক ধরনের মানসিক রোগ বা মনের রোগ যার সৃষ্টি অনেক মাধ্যমেই হতে পারে। হতে পারে মন খারাপের জন্য, হতে পারে অবসাদের জন্য (চিকিৎসা শাস্ত্রে ফ্যাটিগ নামে পরিচিত), হতে পারে দুশ্চিন্তার জন্য। নানা কারণেই হতে পারে। তবে মূলত অবসাদের তীব্র মাত্রাকেই আমরা ডিপ্রেশন বুঝি।

ডিপ্রেশন কি

যে যেভাবেই বলি না কেনো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কিন্তু এই রোগটিকে অন্যভাবে চিহ্নিত করেছে। (WHO)-র দেওয়া নিয়মাবলী (গাইডলাইন) এর অনুযায়ী,

অবসন্ন মন (‘লো মুড’), শক্তিহীনতা (‘লো এনার্জী’) এবং উৎসাহহীনতা (‘লো ইন্টারেস্ট’)-কে ডিপ্রেশনের আওতায় ফেলা হয়েছে।

তবে সবচেয়ে ভালো সংজ্ঞা দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানী অ্যারন বেক। তার ভাষ্যমতে, ” নিজের, পরিবেশের এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার সম্মিলিত প্রকাশই হল ডিপ্রেশন”।

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায় জানার আগে আমাদের ডিপ্রেশনের পিছনের কারণ খুঁজে বের করা জরুরী, তাই চলুন কারণগুলো বিশ্লেষন করে দেখি

ডিপ্রেশনের লক্ষণ গুলো কী কী?

  • কোনকিছুতে মনোনিবেশ করতে না পারা, প্রায়ই কোন বিষয়ে ভুলে যাওয়া (ডিমেনসিয়া রোগ) এবং সিদ্ধান্ত নিতে না পারার মতো সমস্যা।
  • বেপরোয়া আচরণ,  জিনিসপত্র ভাঙ্গা, বেপরোয়া গাড়ি চালানো বা বিপজ্জনক খেলাধুলায় হঠাৎ আগ্রহী হওয়া।
  • প্রতিদিনের কাজকর্মের প্রতি আগ্রহ হারানো।
  • আগের শখ, বিনোদন, সামাজিক ক্রিয়াকলাপ নিয়ে হঠাৎই আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।
  • ক্লান্তি, অসহায়ত্ব ও হতাশার সৃষ্টি হওয়া। আমার কিছুই কখনও উন্নত হবে না এবং আমার পরিস্থিতি উন্নত করতে আমি কিছুই করতে পারবোনা – এমন নির্মম দৃষ্টিভঙ্গি।
  • হঠাৎই উত্তেজিত, অস্থির বা হিংস্রতা বোধ করা।
  • ধৈর্য্য-সহনশীলতার মাত্রা কমে যাওয়া, বিনা কারণে মেজাজ হারানোর মতো সমস্যা দেখা দেয়।
  • অপরাধবোধ, অযোগ্যতা এবং অসহায়ত্বের অনুভূতির সৃষ্টি হওয়া।
  • অনিয়মিত ঘুম, অনিদ্রা, খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা বা খুব বেশি ঘুমানো।
  • যৌনতাসহ আনন্দদায়ক জিনিসগুলির প্রতি অনাগ্রহের সৃষ্টি।
  • অত্যাধিক ক্ষুধা হ্রাস।
  • জ্বালা ও অস্থিরতা, প্রায়শই শরীর এবং মাথাব্যথায় আক্রান্ত হওয়া।
  • এমন হজম সমস্যা যা চিকিৎসা করেও ঠিক হচ্ছে না।
  • ক্রমাগত বিষন্ন, উদ্বিগ্ন বা “শূন্য” অনুভূতির সৃষ্টি।
  • আত্মঘাতী চিন্তা এবং প্রচেষ্টা।

কীভাবে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?

১. ব্যায়াম করুন :
ডিপ্রেশন হওয়ার পর চিকিৎসকরা ব্যায়াম করতে বলেন যাতে শরীরে হরমোন  এর নিঃসরণের মাত্রা ঠিক থাকে,  আমরা যদি নিয়মিত খেলাধুলা এবং শরীর চর্চা করি তাহলে আমাদের শরীরে হরমোনের মাত্রা টি সবসময় নিয়ন্ত্রণে থাকে ফলে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এতে এন্ডোর্ফিনের মতো রাসায়নিক যৌগ নিঃসৃত হয় যা মনকে প্রফুল্ল করে । ইমিউন সিস্টেম এর ক্রিয়াকলাপের ফলে নির্গত ক্যামিক্যাল কমায় যা ডিপ্রেশন কমাতে কাজে আসে। সব ধরণের ব্যায়ামই ডিপ্রেশন কমায় কিন্তু এর তিনটি কার্যকর নীতি হল , লিফট এর বদলে সিড়ি ব্যবহার কয়রা, ব্যায়ামের ক্লাসে ভর্তি হওয়া বা কোন গ্রুপের সাথে যুক্ত হওয়া, নিয়মিত এই কাজগুলি চালিয়ে যাওয়া ।

২.  সোশ্যাল মিডিয়ার  সময়  কমিয়ে  আনুন :
বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া ডিপ্রেশনের প্রধান কারন গুলোর মধ্যে একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে,  প্রচুর সময় নষ্ট এবং বিভিন্ন রকমের বাকবিতণ্ডায় জড়িত হয়ে অপ্রয়োজনে আমরা বিভিন্ন মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে থাকি।  আমাদের মধ্যে প্রতিশোধ প্রবণতা,  অহেতুক দুঃখবোধ তৈরি হয় এমন সব মানুষের কারণে আমরা   যাদের সাথে খুব বেশি ঘনিষ্ট নেই এবং তাদের আচরণে বাস্তবে আমাদের ব্যক্তি জীবনে খুব বেশি কিছু আসে যায় না কিন্তু তথাপি আমরা একমাত্র নিজেদের অহম চর্চা করা এবং অহংকার হওয়ার দ্বারা এই সমস্ত ডিপ্রেশন ডেকে আনি।  এছাড়াও দীর্ঘক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়া থাকার কারণে শরীরে ডোপামিন এর মাত্রা বেড়ে যায় যা আমাদেরকে আরো বেশী সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকতে বাধ্য করে।  এটি একটি লোকের মত হয়ে যায় এবং উত্তর প্রতিউত্তর এর মাধ্যমে আমরা দিনের পর দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকে অহেতুক কাজে যা আমাদের কোন কানা সুখ কিন্তু ডিপ্রেশন অ্যাংজাইটি ইত্যাদি বহু রকমের মানসিক সমস্যার  কারণ হয়ে দাঁড়ায়।  ফলে শুধু চিকিৎসকরা নন বরং সব রকমের সচেতন মানুষই আমাদেরকে অত্যধিক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে নির্দেশ দেন এবং বুদ্ধিমান মানুষ অবশ্যই বাহুল্য সময় নষ্ট করা থেকে বিরত থাকবেন।

৩. দৃঢ় সম্পর্ক তৈরী করুন :
বন্ধুবৎসল মানুষ এবং সামাজিক মানুষ ডিপ্রেশনে খুবই কমই আক্রান্ত হন,  তারা আক্রান্ত হলেও খুব দ্রুতই থেকে বের হয়ে আসতে পারেন কেননা প্রথমত তারা নিঃসঙ্গ বোধ করেন না এবং দ্বিতীয়তো যদি কোন বিপর্যয়ের মধ্যে তারা পড়েন তাহলে দ্রুতই মানুষের সহায়তায় তার থেকে বের হয়ে আসতে পারেন।  তাই সুবন্ধু এবং সৎ বন্ধু আমাদের সকলের প্রয়োজন,  কিন্তু মনে রাখতে হবে আমরা যদি ভালো মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই তাহলে আমাদের কেউ একজন সহায়তাকারী এবং ভালো মানুষ হয়ে উঠতে হবে এবং কেবল এভাবেই আমরা আমাদেরই মতো সহায়ক এবং পাশে দাঁড়ানো মানুষ খুঁজে পেতে পারি।  নিঃসঙ্গতা ডিপ্রেশনের একটি প্রধান কারণ বর্তমান পৃথিবীতে বিশেষ করে তালাকপ্রাপ্ত এবং বৃদ্ধা ইউরোপের অধিকাংশ দেশেই ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হচ্ছেন মারাত্মক রকমের এমনকি এ সমস্যাটি বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে দেখা যাচ্ছে যেখানে ইউরোপের চেয়ে অনেক বেশি সামাজিক দৃঢ় বন্ধন থাকে মানুষের মধ্যে।  বর্তমানে কর্পোরেট সংস্কৃতি এই দৃঢ় বন্ধন গুলিকে নষ্ট করে দিচ্ছে ফলে মানুষ হয়ে পড়ছেন নিঃসঙ্গ এবং আত্মকেন্দ্রিক।  আত্মকেন্দ্রিকতা আমাদের কি কিছুই দেয় না এবং সমাজকেও একটি কলুষিত সমাজে পরিণত করে।  তাই নিজে বেঁচে থাকতে এবং অপরকে ভালোভাবে বাঁচতে দিতে একজন ভালো বন্ধু হয়ে উঠুন সাথে সাথে একজন ভালো বন্ধুর সন্ধান করুন এই অভ্যাসটি আমাদের নিজেদের কে বাঁচাবে এবং সমাজকে অনেক মানসিক বৈকল্য থেকে রক্ষা করবে।

৪. পছন্দ সীমিত করুন :
আমরা একসাথে অনেকগুলো কাজ হাতে নিয়ে  অনেকে অভ্যস্ত,  কেউ একসাথে একাধিক কাজ করতে শুরু করে দেন,  যারা পাঠক তারা একাধিক বই পড়তে শুরু করেন ফলে আমাদের জরুরী কাজ গুলি অনেক সময় গৌণ হয়ে অন্য কাজগুলো মুখ্য হয়ে পড়ে।  খুব বেশি রকমে সচেতন না হলে একসাথে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাজ চালু করে সেটা শেষ করা আমাদের অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না এমনকি যারা সচেতন তাদের পক্ষেও এটি একটি  দুরহ কাজ।  এতে একসাথে অনেকগুলো কাজ সমাপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং কোন কাজ সমাপ্ত না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।  তাছাড়া এর ফলে শারীরিক চাপের চেয়ে মানসিক চাপ বেশী জড়ো হয়ে পড়ে কারণ আমরা কাজ করি বা না করি সেই কাজগুলো আমরা শুরু করেছি তার একটি মানসিক তালিকা আমাদের কাছে অবশ্যই থাকে যা ক্রমাগতই আমাদেরকে মানসিকভাবে চাপ দিতে থাকে।  ডিপ্রেশনের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

৫. স্ট্রেস মুক্ত থাকুন :
ক্রনিক স্ট্রেস ডিপ্রেশন তৈরি করার একটি অন্যতম কারণ।  এর থেকে দূরে থাকতে বিশ্রাম নিন,  অযথা পরিশ্রম করবেন না, মেডিটেশনের অভ্যাস করুন এবং হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন,  পড়াশোনার অভ্যাস একটি চমৎকার অভ্যাস আমাদেরকে স্ট্রেস মুক্ত থাকতে সাহায্য করে ফলে আমরা সহজে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হই না।

৬. চিকিৎসা পরিকল্পনা করুন :
শারীরিক এবং মানসিক উভয়ের ক্ষেত্রেই রুটিন চেকআপ একটি জরুরি বিষয় বিশেষ করে আপনি যদি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন এবং কাজগুলি অত্যন্ত দায়িত্বের হয় যাতে শারীরিক ও মানসিক উভয় রকমের শ্রম জড়িত থাকে তাহলে রুটিন চেকআপ করার অভ্যাস তৈরি করুন এবং চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী যাই হোক না কেন সেটি আপনার পরিকল্পনার মধ্যে রেখে দিন।

৭.  ঘুম:
শুধুমাত্র ঘুমের অনিয়ম ই আমাদেরকে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত করতে পারে এটি প্রথমে শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করে হর্মনে ইম্বালান্স তৈরি করে এবং খুব দ্রুতই আমরা ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হই। ফলে  ফলে নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুম সব রকমের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি।

৮. বিষাক্ত মানুষ জন থেকে দূরে থাকুন :
হতাশাবাদী অভদ্র আত্মম্ভরী এবং এমন সব লোক যাদের সঙ্গ থেকে আমরা ভালো কিছু পেতে পারি না সে সমস্ত মানুষ থেকে দূরে থাকুন,  যে কোনো রকমের সামাজিক অপরাধীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা থেকে বিরত থাকুন।  এ সমস্ত মানুষ আপনার ব্যক্তিগত জীবনে প্রবেশ করে এবং মানসিকভাবে আপনাকে বিপর্যস্ত করে  তোলে।

৯. ভাল খাবার খান :
খাবারে ব্যাপারে সচেতনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার,  একটি প্রচলিত প্রবাদ আছে যে খাবারই ওষুধ।  যদি আমরা ঠিকমতো খাবার গ্রহণ করি তাহলে এটি বিভিন্ন ওষুধ খাওয়া থেকে আমাদেরকে বাঁচাতে পারে।  জীবনাচরণ খাদ্যাভ্যাস মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর একটি বড় প্রভাবক তাই মানসিক এবং শারীরিক উভয় স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ভালো খাবারের অভ্যাস করুন এবং শুধুমাত্র তাই নয় সময়মতো এবং পরিমাণমতো খাবারের দিকে নজর রাখুন।

১০. ওজনের ব্যাপারে সচেতন হোন :
খুব বেশি মুটিয়ে যাওয়া বা খুব শুকিয়ে যাওয়া দুইটাই আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।  এগুলি আপনার কর্মদক্ষতা কমিয়ে দেয় এবং স্বাভাবিক নড়াচড়ায় সমস্যা হয়,  বিশেষ করে স্থূলতা ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ এর মত অনেক ধরনের সমস্যার তৈরি করে যা ঘুরেফিরে শেষ পর্যন্ত আপনাকে বিপর্যস্ত করে দেয় মানসিক ভাবেও।  নিয়মিত ওজন এবং ওজন ও উচ্চতার সাথে সামঞ্জস্য আছে কিনা তা উচ্চতা এবং ওজনের চার্ট থেকে পরীক্ষা করে নিন খুব বেশি ওজন বাড়ায় এবং নিয়ন্ত্রণ করুন।

১১. ক্রনিক ডিজিজ হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা করান :
যে কোন প্রকারের ক্রনিক ডিজিজ এ কারণে আমরা খুব দ্রুতই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে বিশেষ করে যারা মানসিকভাবে একটু দুর্বল প্রকৃতির মানুষ তারা দীর্ঘমেয়াদি বা অত্যধিক পীড়াদায়ক রোগে আক্রান্ত হলে সহজেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন এবং ডিপ্রেশনের শিকার হয়ে যান।  শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য নয় মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য শরীর ঠিক রাখা আমাদের খুবই প্রয়োজন তাই কোনো রকমের ক্রনিক ডিজিজ দেখা মাত্রই তা চিকিৎসা করুন দীর্ঘদিন এ ধরনের রোগ ফেলে রাখবেন না।

১২. ঔষধ খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হোন :
বিভিন্ন প্রকার অ্যান্টিবায়োটিক এবং অন্যান্য ঔষধ অনেক সময় ডিপ্রেশনের কারণ হয় ফলে যখনই কোনো একটি রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে আপনি মানসিকভাবে এর প্রভাব লক্ষ্য করে থাকেন তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন এবং তাকে সমস্ত কিছু খুলে বলুন,  এই সমস্যাটি এমন একটি সাধারণ সমস্যা অনেক রোগীরা তাদের ডাক্তারকে বলেন না ফলে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে তাদের শরীরের হরমোন ইমব্যালেন্স তৈরি হয় এবং তারা পরবর্তীতে একটি রোগ থেকে ভালো হয়ে আরেকটি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন  এমন উদাহরন বহু আছে।

১৩. নেশাদ্রব্য এবং ওষুধের ব্যবহার অন্তত সহনীয় মাত্রায় কমিয়ে নিন :
সামান্য অসুখ হলে ঔষধ খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন এবং বিশেষ করে কোন ধরনের অ্যালকোহল খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা পরিত্যাগ করার চেষ্টা করুন অন্তত সহনীয় মাত্রা কমিয়ে নিয়ে আসুন আপনার আচরণগত ছুটির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।  যখনই অ্যালকোহল আপনাকে অন্তত করে তুলে তখনই তা ডিপ্রেশন এর কারণ হতে পারে কেননা আমরা তখনই অ্যালকোহল এর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় যখন তা আমাদের মস্তিষ্কের  স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে ।

১৪. নিকোটিন থেকে দূরে থাকুন :
নিকোটিন আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে এবং এগুলি রিসেপ্টর সেল তৈরি করে ফলে আমাদের শরীরে নিকোটিনের চাহিদা তৈরি হতে থাকে আমরা এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ি।  নিকোটিন ছাড়াও আরো অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ থাকে যা থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত সৃষ্টি হয় অধিকন্তু এগুলি ডিপ্রেশনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।  যদি আপনি মাত্যক রকমের ধূমপায়ী হয়ে থাকেন তাহলে অবিলম্বে সেটা কমিয়ে আনুন এবং যত দ্রুত সম্ভব ধূমপান ছেড়ে দেয়া উচিত যদি আপনি না হয়ে থাকেন তাহলে সেটা চমৎকার ব্যাপার কখনোই ধূমপান গ্রহণ করার কথা চিন্তা করবেন না।

১৫. অবশ্যম্ভাবী কে মেনে নিন :
এটি একটি মানসিক ব্যায়াম।  জীবনে আমরা কিছু পরিস্থিতির সম্মুখীন হই যা ব্যাপারে আমাদের কিছুই করার থাকেনা,  যেমন আমরা কোনো দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আমাদের একটি হাত হারিয়ে ফেলতে পারি হয়তো আমরা এর আগে একজন ভাল কর্মী ছিলাম এবং এখন বেকারত্বের শিকার হচ্ছি বা উপার্জন করছি।  এই সমস্ত পরিস্থিতি আমরা বদলে ফেলতে পারিনা দ্রুত এবং কিছু কিছু পরিস্থিতির ব্যাপারে আমাদের আসলে কিছুই করার থাকেনা।  যদি এসব ব্যাপার নিয়ে আমরা দুর্ভাবনা করি তাহলে তার থেকে বের হওয়ার আর কোন পথে থাকে না বরং এই সমস্যায় পতিত হয় আমাদের ভাগ্য হয়ে দাঁড়ায়,  তাই এ সব ব্যাপারে সতর্ক হোন  যেন তা ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে না দেয়।  বরং যদি আমরা সেসব শান্তভাবে মেনে নিতে পারি তাহলে খুব দ্রুতই তার থেকে বের হয়ে আসতে পারি এবং এমনও হয় যে আমরা একটি সমস্যাকে একটি সুবিধা ও পরিণত করে ফেলতে পারি যদি তা না হয় তবে নিদেনপক্ষে আমাদের অন্তত এর কারণে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়া থেকে বেঁচে থাকা উচিত।

উৎস :
লেখক : জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট  হেলথ লাইনে  প্রকাশিত 15 Ways to Avoid Depression শিরোণামে

SHARE THIS ARTICLE