আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ পরিবারে স্বাচ্ছন্দ ফিরিয়ে আনতে ইউরোপের উদ্দ্যেশে রওনা দেন সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার কলেজছাত্র তানিল আহমদ (২২)। অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার পথে তুরস্কের বরফঢাকা অঞ্চলে ঠান্ডায় জমে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
তানিলের বাড়ি শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের ঠাকুরভোগ গ্রামে। তাঁর বাবা মৃত গিয়াস উদ্দিন, মা সেলিনা বেগম।
চার ভাইয়ের মধ্যে তানিল ছিলেন সবার বড়। স্থানীয় একটি কলেজে বিবিএ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। এলাকায় ভালো ফুটবলার হিসেবেও খ্যাতি ছিল তার। তবে আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় ইউরোপে গিয়ে দিনবদলের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।
ছেলের এমন মৃত্যুর কথা শুনে মা সেলিনা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তানিলের চাচা নূর মিয়া বলেন, তানিল গত নভেম্বর মাসে প্রথমে দুবাই যান। পরে সেখান থেকে যান তুরস্কে। তানিলের তুরস্ক হয়ে গ্রিস যাওয়ার ব্যাপারে দালাল হিসেবে কাজ করেন একই গ্রামের ইরান প্রবাসী শাহীন মিয়া। তাঁর প্ররোচনাতেই তানিল বাড়ি ছাড়েন।
সোমবার রাতে তুরস্কে থাকা একই উপজেলার টাইলা গ্রামের মাসুম আহমদ মুঠোফোনে তানিলের বাড়িতে জানান, কয়েকজন দালালের মাধ্যমে হেঁটে তুরস্ক থেকে গ্রিসে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছিলেন তানিল। তখন তীব্র ঠান্ডা ছিল। তুরস্ক সীমান্তের কাছাকাছি একটি পাহাড়ে গিয়ে তানিল ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে সেখানেই তিনি মারা যান। তিনি মুঠোফোনে মৃত তানিলের ছবিও পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে তানিলের চাচা নুর মিয়া বলেন, কীভাবে ভাতিজার লাশ দেশে আনবেন, তাঁরা বুঝতে পারছেন না। ওখানে থাকা এলাকার লোকজনের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করছেন। লাশ দেশে আনার মতো আর্থিক সংগতি তাঁদের নেই।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার মোদক বলেন, অবৈধভাবে দালালের প্ররোচনায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ যাতে বিদেশে না যান, সে জন্য পুলিশ নানাভাবে মানুষজনকে সচেতন করে আসছে। ওপেন হাউস ডে, উঠান বৈঠকে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। বৈধ ভিসা নিয়ে কেউ কেউ দুবাই যান। পরে সেখান থেকে দালালের খপ্পরে পড়ে অন্যত্র যেতে গিয়ে বিপদে পড়েন তাঁরা।
