
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গত ২১শে মে ২০২২ শনিবার ডাবলিনের তালা অঞ্চলের ট্রি পার্ক রোডের “কিলমানামা ফ্যামিলি রিক্রিয়েশন কমিউনিটি সেন্টারে” অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ঈদ পুনর্মিলনি ও মিলনমেলা। আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন কাউন্টী থেকে পাঁচশত জনের বেশী প্রবাসী বাংলাদেশীরা এই অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। শিশু, কিশোর, তরুণ, তরুণীদের অংশগ্রহণে এই মিলনমেলা প্রাণবন্ত এবং আনন্দোচ্ছল ছিল।
অনুষ্ঠানটির উদ্যোক্তা ছিলেন বাংলাদেশি মিলনমেলা নামে ফেইসবুক গ্রুপের সদস্যবৃন্দ। এই গ্রুপে যারা আছেন তারা হচ্ছেন ডাবলিন থেকে শারমিন আহমেদ পন্নি, ইয়াসিন মামুন এবং টিপু পপি, কর্ক থেকে ডাঃ মুশাব্বির হোসেন এবং রুকসানা হক, লিমেরিক থেকে মাহিম মান্নান (লিলি), লুনা কামাল এবং বিয়ানা খান, ডানডাক থেকে জেবুন্নিসা, গলওয়ে থেকে সুজালা আহমেদ এবং লুতফুন্নাহার এবং কিলকেনি থেকে লিপা চৌধুরী। এই গ্রুপের আয়োজকদের যাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ছিলেন তাদের মধ্যে সময় টিভির সুপরিচিত প্রতিবেদক সাইয়েদ জুয়েল।
অনুষ্ঠানটি মূলত দুটি পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্বে ছিল দুপুরের খাবার এবং দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তরুণ তরুণীদের আনন্দ পর্ব এবং শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন, হস্তশিল্প এবং রচনা প্রতিযোগিতা। অনুষ্ঠানে তাসনুভা শামিম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাক্স উপহার প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও সকল অতিথিদের জন্য র্যাফল ড্র অনুষ্ঠিত হয় শেষাংশে। র্যাফলে প্রথম পুরষ্কার ছিল একটি ৩২ ইঞ্চি টেলিভিশন, ২য় এবং ৩য় পুরষ্কারগুলিও আকর্শনীয় ছিল।
বুফে খাবারের মেনুতে ছিল চাইনিজ সবজি, চিকেন তান্দুরি, খাসির মাংসের রেজালা, গরুর মাংসের ভুনা এবং সালাদ। খাবারের পর ডেজার্ট মেনুতে ছিল সিঙ্গাড়া, সমসা, পোড়া চমচম, সাদা চমচম এবং পায়েস।
বাংলা পাঠশালার পক্ষ থেকে লুতফুন্নেসার উদ্যোগে শিশু, কিশোরদের অংশগ্রহণে বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় গল্প রচনা এবং জেবুন্নেসার উদ্যোগে চিত্রাঙ্কন এবং হস্তশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। শিশু কিশোররা উৎসাহ নিয়ে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী প্রতিটি শিশু কিশোরকে সার্টিফিকেট এবং মেডাল দেবার ব্যাবস্থা করা হয়। জানা গেছে সংগঠকরা মেডাল অনুষ্ঠানের সময় উপহার দিতে পারেন নি বিধায় যত দ্রুত সম্ভবতঃ তাদের হাতে এই মেডাল পৌঁছে দেবার ব্যাবস্থা করা হবে। নিম্নে শিশু কিশোরদের অংকনের দৃশ্য এবং আঁকা কয়েকটি ছবি সংযুক্ত করা হলো;
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন রুকসানা হক এবং ডঃ নাসিম মাহমুদ। অনুষ্ঠানের সূচনায় কোরান পাঠ করেন কিশোর হাফিজে কোর’আন রুহান মুস্তাকিম রহমান। শিশু কিশোরদের মধ্যে সংগীত পরিবেশন করেন কার্লো থেকে আসা আবিয়ান আহমেদ, কর্ক থেকে আসা ওয়াদিয়া উজমা, কার্লো থেকে আসা আবিয়ান আহমেদ, গলওয়ে থেকে আসা সাইয়েদা আরওয়া আহমেদ এবং ইফরা চৌধুরী, ডাবলিন থেকে নুসায়ের মাহমুদ একটি গজল এবং একটি রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন এবং কবিতা আবৃত্তি করেন গলওয়ে থেকে আগত রিদান মজুমদার।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বড়দের পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন বিল্লাল হোসেন শ্যামল, মর্তুজা মুন্না, জেবুন্নাহার, আব্দুল খালেক, মামুন মাহমুদ খান এবং নিলয়। ব্যান্ড সংগীত পরিবেশন করেন এনিস থেকে আসা ব্যান্ড গ্রুপ, এই গ্রুপে ভোকালিস্ট শাহানাজ শিল্পী, মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেনটে ছিলেন ফরিদ আহমেদ এবং তার দল।
কবি সুলতানা পারভিনের, “ঘাসফুল” এবং আরণ্যক বসুর “মনে থাকবে” এই দুটি কবিতা আবৃত্তি করেন সুপরিচিত আবৃত্তিকার আব্দুল মান্নান মান এবং স্বরচিত ঈদের কবিতা আবৃত্তি করেন ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গিরদার।
অনুষ্ঠানের হলরুম বেশ বড়সড় হলেও অতিথির ভিড় দর্শনীয় ছিল। দর্শক শ্রোতারা সুস্বাদু খাবার এবং মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রশংসা করেন। খাবার পরিবশনে আরও শৃঙ্খলা এবং বিশেষ করে মিষ্টান্ন বিতরণে ভবিষ্যতে আরও যত্নশীল হওয়ার কথাও কয়েকজন অতিথিদের মন্তব্যে শোনা যায়।