আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন- اللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ
অর্থ: ‘আল্লাহ ফেরেশতা ও মানুষের মধ্য থেকে রাসূল মনোনীত করেন। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা’! (সূরা: হজ, আয়াত: ৭৫)
মানবজাতির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষই নবী ও রাসূল হয়ে থাকেন। নবি-রাসূলগণ আল্লাহ তাআলার কর্তৃক মনোনীত এবং তিনি তাদের সব ধরনের চারিত্রিক ও মানবিক দোষত্রুটি থেকে রক্ষা করেন।
রাব্বুল আলামিন কোরআনের অন্য আরেক জায়গায় বলেন, وَإِنَّهُمْ عِندَنَا لَمِنَ الْمُصْطَفَيْنَ الْأَخْيَارِ
অর্থ: ‘আর তারা আমার কাছে মনোনীত ও সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত’। (সূরা: সোয়াদ, আয়াত: ৪৭)
আল্লাহ প্রতিটি জাতির জন্য স্বজাতি থেকে নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا ۚ وَإِن مِّنْ أُمَّةٍ إِلَّا خَلَا فِيهَا نَذِيرٌ
অর্থ ‘আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছি সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোনো সম্প্রদায় নেই যেখানে সতর্ককারী আসেনি’। (সূরা: ফাতির, আয়াত: ২৪)
নবী-রাসূলগণের কাজ: কোরআনের বর্ণনায়
পবিত্র কোরআনে নবী-রাসূলগণের মৌলিক ৪টি কাজের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
অর্থ: ‘তিনিই নীরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতোপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত’। (সূরা: জুমুআ, আয়াত: ২)
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, رُّسُلًا مُّبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ لِئَلَّا يَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَى اللَّهِ حُجَّةٌ بَعْدَ الرُّسُلِ ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا
অর্থ: ‘সুসংবাদদাতা ও ভীতি-প্রদর্শনকারী রাসূলগণকে প্রেরণ করেছি, যাতে রাসূলগণের পরে আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করার মতো কোনো অবকাশ মানুষের জন্য না থাকে। আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশীল, প্রাজ্ঞ’। (সূরা: নিসা, আয়াত: ১৬৫)
নবী-রাসূলগণের কর্মপদ্ধতি ছিল উচ্চতর প্রজ্ঞা ও কল্যাণকামিতায় ভরপুর। আল্লাহ তাআলা বলেন, ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ ۖ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ ۖ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
অর্থ: ‘আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহ্বান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সঙ্গে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভালো জানেন তাদেরকে, যারা সঠিক পথে আছে’। (সূরা: নাহল, আয়াত: ১২৫)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের অন্তরে উম্মতের জন্য বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য অপরিসীম ভালোবাসা দান করেছিলেন। ফলে তারা দ্বিনের দাওয়াত শুধু দায়িত্ব হিসেবে দিতেন না; বরং তাদের সত্তাগত তাড়নাও কাজ করত। আল্লাহ মহানবী (সা.)-কে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, طه
مَا أَنزَلْنَا عَلَيْكَ الْقُرْآنَ لِتَشْقَىٰ
إِلَّا تَذْكِرَةً لِّمَن يَخْشَىٰ
অর্থ: `তোয়া-হা। আপনাকে ক্লেশ দেওয়ার জন্য আমি আপনার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ করিনি। কিন্তু তাদেরই উপদেশের জন্য যারা ভয় করে। (সূরা: ত্বহা, আয়াত: ১-৩)