আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ নামাজ ইসলামি শরিয়তে প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পন্ন নারী পুরুষ নির্বিশেষে, প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ।
নামাজ (ফারসি: نماز) বা সালাত (আরবি: صلاة) ইসলাম ধর্মের ৫টি রোকনের মধ্যে দ্বিতীয় রোকন। ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ না পড়া কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ। কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেয়া হবে। আর তাই ইসলামি শরিয়তের এই গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান নামাজ আদায়ের সময় এদিক-ওদিক তাকানো নিষিদ্ধ। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসূলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামাজে এদিক ওদিক তাকানো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, এটা এক ধরণের ছিনতাই। এভাবে শয়তান বান্দার নামাজের অংশবিশেষ কেড়ে নেয়। (সহিহ বোখারি) অর্থাৎ নামাজের কিছু অংশের সওয়াব থেকে সে বঞ্চিত হয়ে যায়।
আবার নামাজে চোখ বন্ধ রাখাও সুন্নতের খেলাফ। বড় কোনো অসুবিধা বা প্রতিবন্ধকতা না থাকলে চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়া মাকরূহ।
বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন নামাজে দাঁড়ায়, সে যেন তার ২ চোখ বন্ধ করে না রাখে’। (মু’জামে তাবরানি)
তাই নামাজে চোখ খোলা রাখতে হবে, একইসঙ্গে এদিক-ওদিক তাকানো থেকেও বিরত থাকতে হবে। নামাজে দৃষ্টি কখন কোথায় রাখতে হবে এ ব্যাপারে ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেন, নামাজে দাঁড়ানো অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার জায়গায় রাখতে হবে, রুকু অবস্থায় রাখতে হবে ২ পায়ের মাঝখানে, বসা অবস্থায় রাখতে হবে কোলের দিকে, সিজদা অবস্থায় রাখতে হবে নাকের দিকে। (কিতাবুল মাবসুত)
এটিই হলো যথাযথ ও সুন্নত পদ্ধতি। এভাবে দৃষ্টি নত রেখে নামাজ আদায় করলেই নামাজে মনোযোগ ধরে রাখা যায়। চোখ বন্ধ রাখার প্রয়োজন পড়ে না।
তবে যদি কেউ এমন জায়গায় এমন পরিস্থিতিতে নামাজ পড়তে বাধ্য হয়, যেখানে চারপাশে বা সামনে এমন কিছু আছে বা ঘটছে যে চোখ খোলা রাখলে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন, তাহলে চোখ বন্ধ রাখার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু নিয়মিত চোখ বন্ধ রেখে নামাজ পড়া এবং এটাকে অভ্যাসে পরিণত করা যাবে না।
নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করা। তিনি যেভাবে নামাজ পড়েছেন, বা যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে নামাজ পড়া। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা নামাজ আদায় করো যেভাবে আমাকে নামাজ আদায় করতে দেখছো। (সহিহ বুখারি)