আইরিশ বাংলাপোষ্ট ডেস্কঃ উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে। গত কয়েক বছরের মধ্যে দু’দেশের সীমান্তে সবথেকে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আর সেই ঘটনায় অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। একটি সীমান্ত ক্রসিং এলাকায় এই সংঘর্ষের জন্য দুই পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করেছে। ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে লোকজন সীমান্ত পারাপারের জন্য ক্রসিংয়ে ভিড় করেছিল।
অভিযোগ, তাঁদের উপর পাকবাহিনী একের পর এক রকেট ছোঁড়ে। পাকিস্তান বাহিনীর ছোঁড়া রকেটে ১৫ জন আফগানিস্তানের মানুষ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করে আফগানিস্তান। ওদিকে, পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের অভিযোগ, আফগানিস্তানই ভিড় করা জনতার ওপর গুলি ছুড়েছে।
পাকিস্তানি সেনারা কেবল স্থানীয় লোকজনের সুরক্ষায় এবং আত্মরক্ষার্থে পালটা গুলি চালিয়েছে। আর দুপক্ষের পালটা বক্তব্যে দুদেশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি যা তাতে রীতিমত যুদ্ধের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানি অংশের হাসপাতালের আধিকারিকরা সংঘর্ষে ৭ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ঘটনায় আরও ৩১ জন আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা। আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের গভর্নর হায়াতুল্লাহ হায়াত বলেছেন, সংঘর্ষের সময় সীমান্ত শহর স্পিন বোলডাক এলাকায় মানুষের বাড়িঘরের ওপর রকেট এসে পড়ে। আর তাতে মহিলা ও শিশুসহ ১৫ জন নিহত হয়।
এছাড়াও কমপক্ষে ৮০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি গর্ভনরের। পাকিস্তানের সীমান্ত শহর চমন এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সীমান্ত পেরিয়ে আফগানিস্তানে ঢোকার অপেক্ষায় থাকা লোকজন অধৈর্য্য হয়ে পাকিস্তানের ঘাঁটি গুলির হামলে পড়ে। আর তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।
করোনাভাইরাস রুখতে শহরের সীমান্ত ক্রসিংটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বুধবার সেটি কিছু সময়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার আবারও ক্রসিং খোলার কথা থাকলেও সেটি না খোলায় লোকজন বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষুব্ধ লোকজন সেখানকার একটি কোয়ারেন্টিন সেন্টার এবং সরকারি কেন্দ্রগুলিতে অবাধে ভাঙচুর শুরু করে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একাধিক সরকারি ঘাঁটিতে।
পরিস্থিতি সেখানে অগ্নিগর্ভ এবং রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল বলে জানান চমন শহরের এক আধিকারিক। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, উত্তেজনা পরিস্থিতি দীর্ঘক্ষণ ধরে চলতে থাকে। হঠাত করেই পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীই জনতার ওপর প্রথম গুলি ছোঁড়ে বলে অভিযোগ তাঁদের।
প্রসঙ্গত, সীমান্ত ক্রসিং পেরিয়ে আফগানিস্তান-পাকিস্তান দু’পক্ষের লোকজনই এপার-ওপার যাতায়াত করে আসছে বহু দশক ধরে। তবে করোনার কারণে তা আপাতত বন্ধ ছিল।