পিস মিশন অব আয়ারল্যান্ডের উদ্যোগে ভার্চুয়াল লিভিং সার্টিফিকেট এওয়ার্ড সিরিমনি অনুষ্ঠিত

আইরিশ বাংলাপোস্ট ডেস্কঃ গতকাল ২২শে আগস্ট ২০২১, রোববার বিকাল ৬ ঘটিকায় পিস মিশন অব আয়ারল্যান্ডের উদ্যোগে ভার্চুয়াল লিভিং সার্টিফিকেট এওয়ার্ড সিরিমনি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাইফুল ইসলাম সুমন। অনুষ্ঠানের শুরুতে অর্থসহ কোরান থেকে পাঠ করেন শুয়াইব হুসাইন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিস মিশন আয়ারল্যান্ডের সেক্রেটারি জেনারেল জনাব শামসুল হক। স্বাগত ভাষণে জনাব শামসুল হক সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন এবং অনুষ্ঠানে সংযুক্ত সকল অতিথি এবং ছাত্র ছাত্রীদের স্বাগত জানান। 

এরপর অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথি ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদারকে বক্তব্য দেবার জন্য আহবান জানানো হয়। ডাঃ জিন্নুরাইন জায়গীরদার উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানিয়ে লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় সফল সকল ছাত্র ছাত্রীদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, লিভিং সার্টিকেট পরীক্ষায় উত্তীর্নের মাধ্যমে জীবনের একটি নূতন অধ্যায় শুরু হয়। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি সুনাগরিকের দায়িত্ব এই সময়ে নিজেদের জীবনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্ধারন করে সেই লক্ষ্য অর্জনে অগ্রগামী হওয়া। তিনি বলেন, “আমাদের সকলের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ ভালো মানুষ হয়ে, সমাজে ইতিবাচক অবদান রাখা, পাশাপাশি পার্থিব এবং পরবর্তী জীবনে সফলতা অর্জন করা।”

ইয়থ সার্কেলের নেতা হিসেবে অনুষ্ঠানে ইয়থ সার্কেলের কার্য্যক্রম সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন রাকিবুল হাসান। তিনি জানান ইয়থ সার্কল মূলত তরুণদের মধ্যে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর কাজ করে থাকে। একই সাথে সাংগঠনিক কর্মকান্ড, শিক্ষা এবং পরিশুদ্ধতার উপর জোর প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত ডঃ মির্জা গালিব মূল বক্তব্য প্রদান করেন। ডঃ গালিবের বক্তব্যের শিরোনাম ছিল, “মুসলিম তরুণদের অগ্রাধিকার (PRIORITIES FOR MUSLIM YOUTH)”। ইংরেজিতে প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি দুটো বিষয়কে প্রাধান্য দেবার কথা বলেন, একটি হচ্ছে “ধর্ম সংরক্ষণ এবং অনুশীলন (Preservation and practice religion)” আর অপরটি হচ্ছে “নেতৃত্ব এবং অবদান রাখার জন্য নৈতিক এবং একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন (Moral and academic excellence to lead and contribute)”। ডঃ গালিব পবিত্র কোরানের সুরা ইউসুফের কয়েকটি আয়াতের সূত্র ধরে বলেন যে, কোরানে উল্লিখিত হজরত ইউসুফ (আঃ সাঃ) এর গল্প আমাদের সকলের শিক্ষার জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। তিনি বলেন, হজরত্ব ইউসুফ (আঃ সাঃ) সেই সময়ে দেশে দুর্ভক্ষের পূর্বাভাস দিয়ে সেই দুর্ভিক্ষ থেকে জাতিকে সুরক্ষায় নেতৃত্ব দিয়ে সফলতা অর্জন করেছিলেন। তিনি বলেন, আজ বিশ্বে অতিমারী চলছে, টিকা আবিষ্কার মানুষের একটি বিরাট  সাফল্য। এই সফলতার নেতৃত্বে মুসলিমদের মেধা এবং দক্ষতাকে কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মের এই ধরনের নেতৃত্ব দেবার মত মেধা এবং দক্ষতা অর্জন করা কর্তব্য।

প্রশ্নোত্তর পর্বে তরুণদের জন্য কি ধরনের পেশা বেছে নেওয়া উচিৎ। এই প্রশ্নের উত্তরে ডঃ গালিব যে কোন ইতিবাচক মহান পেশার প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব নিয়ে মতামত প্রদান করেন। তিনি বলেন, শুধুমাত্র চিকিৎসক কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়াটা সকলের জন্য প্রায়োগিক নাও হতে পারে বরং আরও অন্যান্য পেশায় সফলতা মানব জাতিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হতে পারে।

তাঁর বক্তব্যের পর আইরিশ মুসলিম কালচারাল সেন্টারের (আই এম সি সি) ইমাম ও খতিব জনাব আব্দুল মান্নান লিভিং সার্টিফিকেট পরীক্ষায় সফল ৪১ জন ছাত্র ছাত্রীর নাম ঘোষণা করেন এবং তাদের সম্মাননা তাদের হাতে পৌঁছে দেবার ঘোষণা জানান।

পরিশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি জনাব শামসুল হক উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানান এবং সকল ছাত্র ছাত্রীদের সফল জীবন কামনা করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।  

SHARE THIS ARTICLE