আইরিশ বাংলাপোষ্ট অনলাইন ডেস্কঃ বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া পুলিশের এক এএসপির সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেন কিশোরীর মা-বাবা। কিশোরী কিছুতেই এ অন্যায় মেনে নিতে পারছিল না। ফলে বাধ্য হয়ে সে বিয়ের ৬ দিনের মাথায় স্বামীকে তালাক দেয়। সম্প্রতি এ ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর আজিমপুর এলাকায়।
স্বামীকে তালাক দেয়ায় সাহসী এই কিশোরীকে তার বাবা বাড়িতে নিতে রাজি হননি। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তাকে পুলিশের সেফহোমে রাখা হয়েছে। তবে মেয়েটিকে হস্তান্তরের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন উইমেন সাপোর্ট সেন্টারের পুলিশ কর্মকর্তারা।
শুক্রবার উইমেন সাপোর্ট সেন্টারের সহকারী পুলিশ কমিশনার মিনা মাহমুদা বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমাদের এখানে আসার পর থেকে মেয়েটি ভালো আছে। এখনও তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সে যতদিন এখানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে, আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।
কিশোরীর বাবা বলেন, মেয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। শুক্রবার বন্ধের দিন থাকায় তাকে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। শনিবার সকালে গিয়ে মেয়েকে বাসায় নিয়ে আসবো। এটা আসলেই একটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। মেয়েকে ফেরত চাই। ওর যেটা ভালো মনে হয়, ও সেটাই করবে।
ওই কিশোরী জানায়, সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই তার বাবা তাকে কয়েকবার বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। প্রত্যেকবারই বিয়ের আয়োজন থেকে বিভিন্নভাবে নিজেকে মুক্ত রাখতে পেরেছে সে। সর্বশেষ এই বিয়েতেও যখন রাজি হচ্ছিল না, ঠিক তখন বাবা তার বয়স বাড়িয়ে এফিডেভিট করেন।এফিডেভিটে তার বয়স উল্লেখ করা হয় ১৯ বছর। অনেক প্রতিবাদ করেও বিয়ে ভাঙতে পারেনি সে।
কিশোরী জানায়, গত ১৫ জানুয়ারি ৩৭তম বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া পুলিশের এক এএসপির সঙ্গে তাকে জোর করে বিয়ে দেন মেয়েটির মা-বা। এক পর্যায়ে সে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলেও ততক্ষণে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার স্বামী জোর করে তাকে মার্কেটে নিয়ে যান। ফেরার পথে সহযোগিতা চাওয়া বন্ধু ও সাংবাদিকদের তার বাসার সামনে পেয়ে যায় মেয়েটি। একইসঙ্গে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) একজন প্রতিনিধি তাকে আইনি সহযোগিতা দিতে আসেন। বরসহ মেয়েটি যখন বাসার নিচে উপস্থিত ঠিক, তখনই বন্ধুদের দেখে সে আবারও নিজের বাল্যবিয়ের প্রতিবাদ করে।
পরে সহপাঠীদের সহযোগিতায় লালবাগ থানায় আশ্রয় নেয় মেয়েটি। সেখানে তার সম্মতিতে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এ সময় তার বাবা-মাকেও থানায় ডেকে আনে পুলিশ।